শিক্ষার নামে ব্যবসা নবীগঞ্জে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে কিন্ডারগার্টেন স্কুল
শাহ সুলতান আহমেদ নবীগঞ্জ থেকে॥ হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কিছু দিন যাবৎ দেখা যাচ্ছে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে কিন্ডর গার্টেন স্কুল । এক দিকে যেমন সরকারী আইনকানুন ও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসার উদ্দেশ্যে একশ্রেণীর অর্থলোভী ব্যক্তিরা বিভিন্ন নামে প্রতিষ্টা করছেন কিন্ডার গার্টেন (কেজি) স্কুল । অন্যদিকে প্রতারিত হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার লোকজন । তারা ছেলে মেয়েদের উচ্চ হারে টাকা ব্যয় করে শিক্ষা দিতে হচ্ছে । বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে গিয়ে ও বিভিন্ন লোকের সাথে আলাপ কালে জানা গেছে- কেজি স্কুল প্রতিষ্টা করে মালিকরা লেখা পড়ার অজুহাতে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তির নামে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব স্কুলের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ভাবে কোন নজরদারি না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা টাকা জোগার করতে মানষিক চাপে থাকেন । নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে প্রায় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে । আরো জানা গেছে বছর শেষ হবার আগেই একটি সংঘবদ্ধ দল মিলে তারা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের কৌশলে ফলোভনে ফেলে বিভিন্ন শ্রেনীর ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহ করেন । শিক্ষার্থীদের ভর্তির এডমিশন নেয়ার পর অভিভাবকদের কাছ থেকে ভর্তি ফি, বিভিন্ন ধরনের খাতা, শিক্ষা উপকরণ ক্রয়,ও ডায়েরি , ও মাসিক বেতন, বই- খাতা ও বিভিন্ন অজুহাত তোলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতে দেখা যাচ্ছে । অনেক সময় অভিভাবকগণ তাদের ছেলে- মেয়েদের স্কুলের বেতন ভাতা সংগ্রহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এসব কেজি স্কুলে নেই কোন নিজস্ব ভবন । বিভিন্ন লোকের পরিত্যক্ত ঘর আবার অধিকাংশ বাজারে বিভিন্ন বাসা বাড়ির মালিকদের নিকট থেকে ঘর চুক্তি ভিত্তিক নিয়ে এতে কেজি স্কুল প্রতিষ্টা করা হচ্ছে । দেখা যায় যে কক্ষে লোকজনদের ধারণক্ষমতা বিশ জন হবে এ স্থানে পরিচালকগণ গাদাগাদি করে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের বসাচ্ছেন পঞ্চাশ থেকে ষাট জন । প্লে-গ্রুপ থেকে শুরু করে অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া করানো হয় এসব কিন্ডারগার্টেন। স্কুলে নেই কোনো স্কুল কমিটি বা পর্ষদ । এভাবেই চলছে দিনের পর দিন মনগড়া নিজস্ব গতিতে শিক্ষা প্রতিষ্টান । এসব স্কুলে অষ্টম শ্রেনী পাস আবার এসএসসি পাস তরুন -তরুনীদের কেজি স্কুলের শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন । এব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নবীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি শামীম আহমেদ চৌধুরী জানান- এসব কেজি স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠ্য পুস্তকে সামঞ্জস্য নেই এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত সিলেবাসের ফলে তারা দক্ষ হবার চেয়ে অদক্ষ হচ্ছে। এবং মানবিক বিকাশ থেকে তারা সরে দাড়াচ্ছে। এবং শিক্ষক/শিক্ষিকা পাঠদানে অদক্ষ। নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জামশেদুর রহমান বলেন-কেজি স্কুলের কারিকুলাম বহির্ভুত অন্তর্ভুক্ত করায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠদানের আনন্দ থেকে বঞ্চিত রয়েছে ।
মন্তব্য করুন