শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্যা কবলিত, নদীতে দ্রুতগতিতে বাড়ছে পানি
![](https://i0.wp.com/www.patakuri.com/wp-content/uploads/2024/07/news_image_69e65dca4a3d09a42111ec75c1055ff51719990467.jpg?fit=800%2C445&ssl=1)
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীতে দ্বিতীয় দফায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১৭ সে:মি: বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর সেতু পয়েন্টে পানির বিপদসীমার ১৭ সে:মি: বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ভারতের ঢল ও লাগাতার বৃষ্টিতে পানি আরেক ধাপ বেড়েছে। এছাড়াও জেলার মনু নদীর পানি ২৬ সে:মি: বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদী ১ সে: মি: ও জুড়ী নদীর পানি ১৮৪ সে:মি: বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । জেলা জুড়ে বন্যাক্রান্ত হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ।
কুশিয়ারা নদী পাড়ে গেলে দেখা যায়, নদী পাড়ের মানুষের প্রায় সবার উঠানে হাঁটুসম পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
বসতির মায়ায় এসব মধ্যবৃত্ত পানি বন্দি মানুষ ঘরের খাটের উপর বসে সময় পার করছেন। আর খেটে খাওয়া ও নিন্মবৃত্ত মানুষের ঘরের খড়কোটোর বেড়া পানির সাথে মিশে একাকার হয়ে গেছে। যাদের পাঁকা স্থাপনা রয়েছে, তাদের ছাঁদে কিংবা বারন্দায় পাশের বাড়ির কেউ কেউ ধান-চাল ও হাস-মুরগি রেখেছেন। কেউ কেউ এ সহযোগীতা না পেয়ে পাশের ওয়াপধা সড়কে ভ্রাম্যমান বসতি বানিয়ে গবাদি-পশু ও পরিবার নিয়ে থেকেছেন।
নদী পাড়ের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ও উত্তরভাগ ইউনিয়নে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৫শ নারী-পুরুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারি তরফ থেকে দুই বার ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও তা অপ্রতুল বলে দাবী করছেন আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ এসব ত্রাণ সহায়তায় তাদের চলে না। তারা পরিবার নিয়ে বেশিরভাগ সময় না খেয়ে রয়েছেন। বানভাসীর দাবী সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠন যদি তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতেন তাহলে হয়তো তাদের বিশিরভাগ সময় উপোষ থাকতে হতো না।
এদিকে, নদী পাড়ের উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের শামীম আহমদ বলেন, দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় গরীব-দুস্থদের কাঁচা ঘর-বাড়ি জলের গতি ও ঢেউয়ের বেগে ধসে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমান ত্রাণ সহায়তা আসছে না। তিনি বলেন, সদরসহ দুই উপজেলার প্রায় ১ লাখ পানি বন্দি মানুষকে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা থেকে বাঁচাতে হলে নদী খনন করা এখন সময়ের দাবী।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শুপ্রভাত চাকমা বলেন, বন্যা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটা কমে আসছে। আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যাও কমেছে। তিনি বলেন, সরকারের তরফ থেকে দুই দফা ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আজো জলমগ্ন এলাকায় গিয়েছেন। মানুষের তুলনায় ত্রাণ অপ্রতুলের বিষয়টি জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, এরকম অভিযোগ আসেনি। অনেকে ত্রাণ পেলেও বলবে পাইনি।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.খোরশেদ আলম বলেন, জেলা জুড়ে ৯৪টি স্কুল জলমগ্ন রয়েছে, আর আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে চালু রয়েছে ৬৪টি স্কুল। তিনি বলেন, ৩ জুলাই স্কুল খুলবে। ওই সময়ে যদি বন্যার উন্নতি না হয়, তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেয়া হতে পারে।এদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, জেলা জুড়ে ৩৯টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান বন্যা কবলিত রয়েছে।
মন্তব্য করুন