শীতে কাঁপছে মৌলভীবাজার, ঘন কোয়াশার চাদরে ঢেকে রয়েছে আকাশ
স্টাফ রিপোর্টার॥ মাঘের শুরুতেই শীতে কাঁপছে মৌলভীবাজার। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিন রাত সমান তালে বইচে কনকনে হিমেল হাওয়ার সাথে শীত। ঘর থেকে যারা বের হচ্ছেন তারা গরম কাপড় পরিধান করে বের হচ্ছেন। তাপমাত্রার পরিমাপ সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ কাছাকাছি থাকায় মানুষের মধ্যে শীত অনুভুত বেশী হচ্ছে। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে রয়েছে পূরো মৌলভীবাজারের আকাশ। টানা কয়েকদিনের শীতের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতে সবচেয়ে বেশী হাওর পাড়ের মানুষ, চা বাগানের শ্রমিক, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই খড়খুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্ত আনিছুর রহমান জানান সোমবার ১৫ জানুয়ারি সকাল ৯টায় ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টায় ও ৯টায় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে আজ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি থেকে ১৬ ডিগ্রির ভেতরে ওঠানামা করছে। আজ সোমবার তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি হলেও কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে শীতের অনুভূতি বেশি। এবারের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গত ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় বলে তিনি জানান। ঘন কুয়াশা কেটে গেলে তাপমাত্রা আরও নামতে পারে।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক বিনেন্দ্র ভৌমিক জানান, গত সপ্তাহে শীতজনিত রোগে হাসপাতালে শিশু ভর্তি ৭০-৭৫ জন ছিল। বর্তমানে কমে আসছে শিশু ভর্তি।
গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভীর প্রতিদিন ভাড়ছে।
তীব্র শীতে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। সড়কে মানুষের চলাচল কমে যাওয়ায় ভ্যান ও রিকশা চালকদের আয় কমে গেছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের টিকরিয়া গ্রামে কৃষক শাহিদ আলী বলেন, আবাদকৃত জমিতে সেচ দিতে গিয়েছিলাম। এতো কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাস যে, কাজ করাই কঠিন হয়ে গেছে।
উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটুলা এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রচন্ড কুয়াশা ও খুব ঠান্ডা পড়ছে। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাপত্র ও বিছানা পর্যন্ত যেনো সব বরফ হয়ে গেছে। সকালে ঘরে কাজ করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। ভাড়াউড়া চা বাগানের চা শ্রমিকরা বলেন, কুয়াশা ও কনকনে শীতের মধ্যেও ভোরে আমরা চা বাগানে কাজ করতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। কিন্তু কী করব, জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।
সিন্দুরখান রোড ও মৌলভীবাজার রোডের ভ্যানচালকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, শীত উপেক্ষা করে জীবিকার তাগিদে ভ্যান নিয়ে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু মানুষ বাড়ি থেকে তেমন বের হচ্ছে না। তাই যাত্রী না পেয়ে ইনকাম কমে গেছে।
মন্তব্য করুন