শুধু সেতু মেরামত করতে গিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক ভেঙ্গে ক্ষতবিক্ষত : সাড়ে ৪ শত কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা

June 18, 2016,

স্টাফ রিপোর্টার॥ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত শেরপুর সেতু মেরামতের জন্য ১৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষনা করার পর ১০ জুন শুক্রবার থেকে সকল যানবাহন ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল-হয়ে যাতায়াত করছে। হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরী আঞ্চলিক মহা সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় স্থানে স্থানে রাস্তা ভেঙ্গে গর্ত হচ্ছে। অনেক স্থানে এ সব গর্তে পাথর বোঝাই ট্রাক আটকা পরে দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে।

IMG_5833

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল-হয়ে মিরপুর পর্যন্ত আঞ্চলিক মহা সড়কের  দৈর্ঘ ১০৫ কিলোমিটার। পাথর বোঝাই ভারী ট্রাক ১০৫ কিলোমিটার এন ২০৮ এবং এন-২-২০৮ সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করায় রাস্তার অনেক স্থানে উচু-নিচু ঢেউয়ের মতো হয়ে গেছে এবং ভেঙ্গে বিশাল বিশাল গর্ত হচ্ছে। প্রতি দিন পাথর বোঝাই ট্রাক রাস্তার এক পাশে দেবে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে রাস্তার। এতে করে প্রতিদিন যেমন ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে, তেমনি সাধারণ মানুষের ভুগান্তিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাস্তার ভেঙ্গে যে ক্ষতি হচ্ছে মেরামতে প্রায় সাড়ে ৪ শত কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

13442221_10209938846254089_4682062243177777626_n

অপর দিকে ঢাকা-সিলেট মহা-সড়ক বন্ধ হওয়ায় ভারী যানবাহন আঞ্চলিক মহা সড়কের দিয়ে যাতায়াতের ফলে মৌলভীবাজার জেলা শহরে মাত্রাতিরিক্ত যানজট বেড়েছে। যন্ত্রনাদায়ক হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন। হরণের শব্দে রাস্তার আশপাশের বাসা-বাড়ি, দোকান-পাঠ, স্কুল-কলেজ অফিসগুলোতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পথচারিরা খুব আতংক নিয়ে রাস্তায় চলাচল করছেন। এছাড়া প্রতিনিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা।

মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী উৎপল সামন্ত জানান, ৩০-৪০ টন ওজনের পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য এ রাস্তা তৈরী হয়নি। এ সব ভারী যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিই ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জেলা প্রশাসক বরাবরে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের বিষয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। কি পরিমান ক্ষতি হতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, এ ধরনের রাস্তা প্রতি কিলো মিটার নতুন ভাবে নির্মান করতে গেলে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া পুরো রাস্থা মেরামত করলে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

13450704_1213879452018249_4712340207473218993_n

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বললেন, এতো ভাল রাস্তা নষ্ঠ হচ্ছে দেখে আমারও কষ্ট হচ্ছে, রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি লিখেছি।

সামাজিক সংগঠন আলোক ধারার যু¤œ সম্পাদক হাসানাত কামাল জানান, ছিমছাম, পরিচ্ছন্ন, পিচঢালা শহরের চেহারাটা হটাৎ করেই পাল্টাতে শুরু করেছে। এমন সাজানো, গোছানো, শান্ত শহর এদেশে কমই আছে। সেই শহরের বুকের উপর দিয়ে যাচ্ছে বিশাল পাথর বোঝাই ট্রাক। সহ্য করতে না পেরে ক্ষতবিক্ষত মসৃণ পথটি পরিণত হয়েছে বিশাল বিশাল গর্তে। স্থানে স্থানে খানাখন্দ। এক সময় তাও গর্তে পরিণত হবে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠবে সড়কটি।

IMG_5793

বলা হচ্ছে এটা সাময়িক। শেরপুর সেতুর মেরামত কাজ শেষ হলেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চালু হবে।  কিন্তু যে ক্ষত তৈরী করে দিয়েছে তা কি সারাবে। অনেকের মতো আমিও সন্দিহান। কবে স্বাভাবিক হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে শহরের সড়কগুলো। আর একবার ক্ষত হলে তা বারবার আক্রান্ত হবেই। অতি দ্রুত রাস্তার পূর্ণাঙ্গ মেরামতের দাবী করেন। যাত্রীবাহি বাস চলুক আমাদের আপত্তি নাই। শেরপুর সেতু চালুর আগ পর্যন্ত পাথরবাহি ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবী জানান।

 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com