শ্রীমঙ্গলে আন্ত:নগর কালনী-উপবন ট্রেনের ডাকতি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিন ডাকাত গ্রেফতার: ‘লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার,আদালতে স্বীকারোক্তি’
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ ঢাকা-সিলেট রেলপথে আন্ত:নগর ট্রেন কালনী ও উপবন ট্রেনের ডাকতি.ছিনতাইয়ের ঘটনায় আন্ত:জেলার ডাকাত দলের তিন সদস্যকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে শ্রীমঙ্গলের রেলওয়ে থানা পুলিশ।
২৪ অক্টোবর সোমবার রাত ১০টা ২০ মিনিটে ঢাকা হতে সিলেটগামী আন্ত:নগর কালনী ট্রেনে ডাকাতির ঘটনায় আন্ত:জেলার ডাকাতদলের সদস্য প্রদীপ দাশ নামের এক ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। একই সঙ্গে ওই ডাকাতের কাছ থেকে পুলিশ দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত একটি ছোড়া ও লুণ্ঠিত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
ডাকাত প্রদীপ ৩০ অক্টোবর রোববার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব দেব এর আদালতে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার ঘটনা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। সে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মশাখালি গ্রামের কালি দাশের ছেলে। শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ডাকাত প্রদীপ দাশ আন্ত:জেলা ডাকাত দলের একজন সক্রিয় সদস্য। সে লাকসাম রেলওয়ে থানায় রজু হওয়া এক সেনা সদস্য হত্যা মামলারও আসামি। ওই হত্যা মামলায় সিরাজুল ইসলাম বাবুল নামে অপর এক ডাকাত লাকসাম রেলওয়ে থানা গ্রেফতার করে। সে পরবর্তীতে কুমিল্লার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি প্রদান করে। ওই মালায় সে প্রদীদ দাশ জড়িত বলে স্বীকার করে নেয়। কালনী ট্রেনে দস্যুতা ও ডাকাতির ঘটনায় প্রদীপ দাশ মৌলভীবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকার করে বলে, ডাকাত প্রদীপ দাশ সে পূর্বে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশনে চা ও পপ কর্ণ বিক্রি করতো। ঘটনার দিন সে তাঁর অপর দুই সহযোগী সহ আযমপুর রেলস্টেশন হতে কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদে উঠে। পরবর্তীতে শমসেরনগর রেলস্টেশন হতে ওই ট্রেনের “ঝ” বগি (কাটা বগি)তে ঢুকে। ট্রেনটি যখন টিলাগাঁও ও লংলা রেলওয়েস্টেশনের মধ্যবর্তী এলাকা অতিক্রম করে তখন সে ও তার সহযোগী আরো দুইজন ডাকাত ছোরার ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের নিকট হতে মানিব্যাগ,স্বর্ণালংকার ও বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট লুটে নেয়। পরে কুলাউড়া ষ্টেশনের আউটার সিগন্যালে ডাকাতরা চেইন পুলিং করে ট্রেনের হাওয়া ছেড়ে দেয়। তখন ট্রেনের গতি কমে গেলে ডাকাতরা নেমে পালিয়ে যায়।
ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, অন্যদিকে ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় সিলেট হতে ঢাকা গামী আন্তঃনগর উপবন ট্রেনে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানাধীন ভাড়াউড়া চা বাগান এলাকায় ১৫৭ নং রেলওয়ে ব্রীজ (ক্ষতিগ্রস্থ সেতু) অতিক্রম কালে “ক” বগির যাত্রীর মোবাইল ফোন,নগদটাকাসহ ভ্যানেটি ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই যাত্রী বড়লেখা উপজেলার বড়খোলা গ্রামের সেলিম আহমেদের স্ত্রী শাহানারা ইসলাম মিথুন(৩৮)। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জের সদর থানার যশোদল গ্রামের ধীরেন্দ্র বর্মণের ছেলে রতন বর্মণ(২৯)ও চাঁদপুরের শাহারাস্তি থানার উনকিলা গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুর রহিম(৩০) কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক লুন্ঠিত মালামালসহ নগদ ২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার মামলা নং ০২ তারিখ -২৮/০৯/২০১৬খ্রিঃ ধারা ৩৯৪/৪১১ দঃবিঃ রুজু হয়। তিনি বলেন গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারী আন্ত:জেলা ডাকাত ও ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য।
২৯ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্র এর আদালতে তাদের হাজির করা হলে তারা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
মন্তব্য করুন