শ্রীমঙ্গলে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ৪৮ শিক্ষক
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪৮জন শিক্ষক সহ ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সারা দেশের ২৫৯৫জন প্রাথমিক শিক্ষক। সবাই চাকুরী করে ঈদের বেতন বোনাস পায় কিন্তু তাদের সরকারী চাকুরী হয়েও বিগত ৩ বছর যাবত বিনা বেতনেই চাকুরী করে যাচ্ছেন। ফলে এবারের ঈদ আনন্দ তাঁদের ফিকে হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষনা দিয়েছিলেন ২০১৩ সালের জানুয়ারী মাসে। কিন্তু দীর্ঘ এই চার বছরেও প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। তিন ধাপে এ জাতীয়করণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিলো । এর মধ্যে পার হয়েছে ১ম ও ২য় ধাপ। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় ৩য় ধাপের কাজ আটকে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা শুনে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড স্কয়ার থেকে আনন্দিত হয়ে প্রাথমিক শিক্ষকরা বাড়ি ফিরলেও সে আনন্দ এখন হতাশায় রুপ নিয়েছে। ৩য় ধাপের সারা দেশের ৫১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কবে পাবেন তাদের সেই কাঙ্খিত বেতন সে নিশ্চয়তা এখনো তারা পাচ্ছেন না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ৩য় ধাপের ৫১৯টি বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে চার জন করে মোট ২৫৯৫জন শিক্ষকদের সরকারী বিদ্যালয়ে থেকেও বেসরকারী বিদ্যালয়ের ন্যায় চাকরী করতে হচ্ছে। ২০১৪ সালের প্রথম দিকে তাদের বেতন হওয়ার কথা থাকলেও এখনো এক টাকাও বেতন পাননি ভূক্তভোগী এইসব শিক্ষকরা। অভাব অনটনে জর্জরিত এখন সেসব শিক্ষকদের জীবন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় সূত্র মতে, তৃতীয় ধাপের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোকে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয়করণ করা হবে বলে ঠিক করা হয়। কিন্তু প্রায় পৌনে তিন বছর অতিবাহিত হবার পরও হচ্ছে না এসব বিদ্যালয়ের চুরান্ত জাতীয়করণ বা শিক্ষকদের বেতন ভাতা। ৩য় ধাপের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী ৯৬০টি বিদ্যালয় জাতীযকরণ হওয়ার কথা থাকলে পরবর্তীতে ৪টি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ৮৮০টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। সর্বশেষ ২০১৭সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ হিরুজ্জামান স্বাক্ষরিক একটি গেজেটে ৩য় ধাপের জাতীয়করণকৃত ৫১৯টি বিদ্যালয়ের ২৫৯৫জন শিক্ষকদের রাজস্বখাতে পদ সৃজন সংক্রান্ত একটি খসড়া গেজেট প্রকাশিত হয়। কিন্তু অদ্যবধি সেই চুরান্ত গেজেট প্রকাশ কোন আলোর মুখ দেখেনি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় সূত্রে আরও জানায়, অল্প সময়ের মধ্যেই চুরান্ত গেজেট প্রকাশ হবে। আশা করছি এই মাস বা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে চুরান্ত গেজেট প্রকাশ করা হবে।
ভাড়াউড়া চাবাগান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জাহেদা শরমিন জানান, খুবই কষ্টে আছি। জাতীয়করণের পর প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে বেতন-ভাতা পাই না। পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েছি। নানা জায়গায় খোঁজ নিই। সবাই বলে এইতো হবে। কিন্তু হচ্ছে না। আর পারছি না। আর কতদিন এভাবে দিনাতিপাত করবো। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। আগামী কোরবানীর ঈদের আগে আমাদের বেতন ভাতা চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি ভুক্তভোগী শিক্ষকরা আগামী ঈদের পূর্বে শিক্ষকদের বর্তমান চরম অসহায় অবস্থা বিবেচনা করে বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে দিতে আকুল আবেদন যানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন