‘শ্রীমঙ্গলে কথিত সাতপীরের মাজারে যেতে ভক্তদের বাঁধা’
সাইফুল ইসলাম॥ শ্রীমঙ্গলে কথিত সাতপীরের মাজারে যেতে ভক্তদের বাধাঁ প্রদানের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার একটি পক্ষের মোবাইল ফোনে ও প্রকাশ্যে ভক্তদের হুমকি দেয়ার ঘটনায় সাতপীরের মাজারের প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক ভক্তবৃন্দের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে এর সুবিচার চেয়ে আবেদন করেছেন।
আর ওই আবেদনের অনুলিপি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্রীমঙ্গল থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে প্রেরণ করেছেন।
প্রেরিত অভিযোগে বলা হয়েছে,‘আবেদনের স্বাক্ষরকারীগণ নূরে দরবারিয়া সাতপীরের মাজার শরীফের ভক্তবৃন্দ। নানা সমস্যায় সম্মুখীন হয়ে স্বপ্নেপ্রাপ্ত মাজারে এসে মানত করে দুই রাকাত নফল নামায ও তসবীহ পাঠে দোয়া করি। এতে আমাদের অনেক সমস্যার সমাধান পেয়েছি’।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়‘এই মাজারে প্রতিদিন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ভক্তবৃন্দরা এসে থাকেন।
সম্প্রতি এলাকার লেংটাপীরের মাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি স্বার্থান্বেষীমহল এই সাতপীরের মাজারকে ঘিরে নানাবিধ ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার করছে।
একসপ্তাহ ধরে পূর্ব শ্রীমঙ্গল গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে ইয়াছিন ও লিটন,মস্তুরী মিয়ার ছেলে মিজান মিয়া,বাদশা মিয়ার মেয়ে জেসমিন,মন্নান মিয়ার মেয়ে ইয়ারুন,লিম্বর মিয়ার ছেলে আবুল হোসেন ও আশিদ্রোণ নোয়া বাড়ীর মোস্তফা মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম ভক্তবৃন্দদের মাজারে আসতে বাঁধা প্রদান করে অশালীন গালাগাল ও পায়ের গুছি কাটার হুমকি প্রদান করেন।
এছাড়া তাদের ইন্ধনে মাজারে আসা ভক্তদের দুষ্কৃতিকারীরা প্রায়ই হুমকি দিয়ে আসছেন’।
ইছবপুর গ্রামের দুরুদ মিয়ার স্ত্রী রুবি বেগম(৪৫) বলেন, ‘আমরা বেমার লইয়া মাজারও আই’। ফল পাই দেইখ্যা যাই।
৫ মার্চ সকাল সাড়ে ১১টায় মনাই উল্লাহ স্কুলের পাশে পায়ে হেঁটে মাজারে যাওয়ার পথে পূর্ব শ্রীমঙ্গল গ্রামের ইমারুন ও জেসমিন বেগম যেতে নিষেধ করে। তাদের নিষেধ না মানায় টানাহেঁচড়া করে পায়ের রগ কাটার হুমকি প্রদান করে’।
একইভাবে ইমারুন আর জেসমিন মিলে ৬ মার্চ দুপুর দেড়টারদিকে আশিদ্রোণ ইউনিয়নের খাসগাঁও গ্রামের আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাজমা ও আব্দুল মতিনের স্ত্রী সালেহা বেগমকে রাস্তায় পেয়ে আটকিয়ে হুমকি ধামকি দেয়।
ইমারুনের ছেলে ৭ মার্চ বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে তিতপুর গ্রামের ইছহাক মিয়ার ছেলে আলতাফুর রহমান সিএনজিযোগে মাজারে যাওয়ার পথে ইয়াছিন মিয়া তাঁর বাড়ীর পাশে তার হাতে থাকা রড দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্ঠা করে। একই দিনে রাত পৌণে নয়টার দিকে মাজারের ভক্ত আলতাফ বাড়ি যাওয়ার পথে ইয়াছিন ও তার লোকজন আবারো শহরের নূর ফুডসের সামনে আটকিয়ে মারধরের চেষ্ঠা করে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তিনি বেঁচে যান। ৯ মার্চ দিনে ৩টা ৯মিনিটে ইমারুন বেগম(০১৭৬৪-২৮৪৫৬৭) নাম্বার থেকে ফোনে আলতাফুর রহমানকে নানান হুমকি দেয়। যার অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ইমারুন বেগম বলেন,‘আমি কোন মহিলাকে রাস্তায় আটকাই নাই। আমার ছেলে ইয়াছিনও এসবে জড়িত না। আমি একজন প্রতিনিধি মহিলা মেম্বারনি দাঁড়াইছিলাম। আমার সম্পর্কে এলাকায় খবর নিয়ে জানেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন,মাজারের খাদেম আমার মামতো ভাই সে খারাপ লোক। সে তার বাপের নাম। আল্লার নাম। হাদিস বেইচ্চা খায়। খাদেমের বিরুদ্ধে আমরা কি করছি না করছি নেটে আছে,মোবাইলে আছে। এলাকার মানুষজন জায়গায় জায়গায় এমনকি মন্ত্রনালয়ে পর্যন্ত মাজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুল বলেন,‘এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্ব্বক ব্যবস্থা নেব। মাজারের বিরোধ নিয়ে তিনি বলেন,‘এএসপি স্যার আছেন ট্রেনিংয়ে। তিনি আসলে দু’পক্ষকে নিয়ে বসব’।
মন্তব্য করুন