শ্রীমঙ্গলে জনবসতি থেকে ময়লার ভাগাড় আরেক জনবসতিতে ॥ ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী
বিকুল চক্রবর্তী॥ শ্রীমঙ্গলে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় শ্রীমঙ্গল কলেজ রোড থেকে সরিয়ে জেটি রোড এলাকায় স্থানান্তর করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে এ এলাকার মানুষকে দূর্গন্ধ থেকে মুক্ত করতে আরেক এলাকার মানুষকে অনুরুপ শিকার করা হবে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে উত্তর ভাড়া উড়া এলাকার মানুষ। তারা জানান, নতুন জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে তার চেয়ে আরো ৫শত গজ পেছনে সরে গেলে তাদের কোন সমস্যা হবে না। কারণ ঐ জায়গায় কোন বাড়ি ঘর নেই।
এ ছাগাও তারা শ্রীমঙ্গলে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় উপজেলার সদর ইউনিয়নে জেটি রোডে নির্মাণ করা হলে এলাকার জলাশয়, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিপর্যয় ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।
২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই আশঙ্কার কথা জানান।
এলাকাবাসীর পক্ষে মো. ফয়েজ উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের জেটি রোডস্থ ভাড়াউড়া মৌজায় অধিগ্রহনকৃত ভূমিতে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় নির্মাণ না করার জন্য দক্ষিন ভাড়াউড়া, উত্তর ভাড়াউড়া ও পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের অধিবাসীরা ২০১৩ সালে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন। এবং এর অনুলিপি বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে দেয়া হয়েছে। সর্বপরি প্রতিকার না পেয়ে মহামান্য হাইকোর্টের স্বরনাপন্ন হয়ে রিট মামলা দায়ের করেন মো. ফয়েজ উদ্দিন। সেখানেও ভ’মি অধিগ্রহন মামলা নং পরিবর্তন করে নতুন নাম্বার এর মাধ্যমে ভ’মি অধিগ্রহন মামলা পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও ভ’মির দখল নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নেওয়া হয়েছে বলে যে স্বাক্ষর প্রদান করা হয়েছে সেক্ষেত্রেও একি কর্মকর্তা দুইজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রদান করে দখল হস্তান্তরের কাজ সম্পাদন করেন। অথচ প্রকৃত ভ’মির মালিকরাই জমির দখলে আছেন এবং উক্ত জমিতে ধান ফসল উৎপাদন করছে।
তিনি বলেন, শহরকে দূষণমুক্ত করতে যেয়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকার বর্জ্য ফেলার ভাগাড় নির্মানের স্থান নির্ধারণ করায় ওই স্থান দিয়ে প্রবাহিত জৈনকাছড়ার জলও দুষিত হবে। ছড়ার দুই পাশের লোকজন এ ছড়ার জল ব্যবহার করেন এবং ছড়ার পানি হাইল হাওড়ে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এতে ফসলি জমিরও ক্ষতি হবে। তাই ভাগাড়টি অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়ার দাবি জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, জায়গাটির সন্নিকটে ১টি মসজিদ, ৫০ ফুটের ভিতরে কারিতাস এর আঞ্চলিক অফিস, পুর্বদিকে বাড়ি, সমাধিস্থল, কবর স্থান, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও শ্মশানঘাট এবং উক্ত জায়গার পূর্ব-পশ্চিমও দক্ষিণে প্রায় শতাধিক বাড়িঘর বিদ্যমান। এমতাবস্থায় সরকারের জলাশয় রক্ষার শ্লোগান নদ নদী খাল বিষে দূষণ যদি, জনগণের দুঃখ বাড়াবে নিরবধি এই বিষয়টি হুমকির মধ্যে পড়বে। এ বিষয়ে সরকারি পর্যায়ে কোন প্রকার তদন্ত না করে অত্যন্ত খামখেয়ালি ভাবে জনবসতি পূর্ণ এলাকায় ভাগাড় নির্মাণের উদ্যোগের ফলে চর্তুদিকের প্রায় ২০ হাজার লোকের জীবনমান ক্ষতির মুখে পতিত হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় বলেন, বর্তমানে পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ের কারণে কলেজ রোডের বাসিন্দারা সমস্যাগ্রস্থ তারা ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং নতুন যেখানে অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেখানের বাসিন্দারাও ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের। উভয় জনগণই আমার। কেউ ময়লার ভাগাড় দেখে বাসাবাড়ি তৈরি করেছেন আর কেউ এখানে কোনো ময়লার ভাগাড়ই ছিল না এর আগেই বাসাবাড়ি তৈরি করেছেন। আমি চাই আমার দুই দিকের জনগণের সমস্যার সমাধান হোক। তিনি বলেন, পৌরসভার ময়লার ভাগাড় করতে অধিগ্রহণের জমির পাশে প্রচুর জায়গা আছে। ওই জেটি রোডেই আছে। সেখানে নিয়ে গেলে আমাদের আপত্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ইউপি সদস্য আনার উদ্দিন, মোঃ শাহজাহান, লিমন মিয়া, স্থানীয় মুরব্বি আবদুল লতিফ, ছালেক মিয়া, আছাদ মিয়া, নূর মিয়া প্রমুখ।
মন্তব্য করুন