শ্রীমঙ্গলে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের উদ্যোগে ‘আমরা পারবো নারী ও কিশোরী জোটের ত্রৈমাসিক সভা
এহসান বিন মুজাহির॥ শ্রীমঙ্গলে ‘আমরা পারবো নারী ও কিশোরী জোটের ত্রৈমাসিক সভা বুধবার ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসুরস্থ ব্র্যাক লার্নিং সেন্টার (বিএলসি) এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
অক্সফ্যাম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহায়তায় এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের উদ্যোগে সিলেট বিভাগের ২৫টি চা বাগানে বাস্তবায়িত লিডারশীপ এমবডি এসোসিয়েশন ডিমানডিং টু এনশিওর রাইটস (লিডার) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ‘আমরা পারবো নারী ও কিশোরী জোেেটর ত্রৈমাসিক সভাটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী পারভেজ কৈরী।
আমরা পারবো নারী ও কিশোরী জোটের সভাপতি বৈশাখী রাউতিয়া’র সভাপতিত্বে সম্মেলনের শুরুতেই স্বাগত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানুলাল রা। বিশেষ অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার কর, বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ,
সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী।
উল্লেখ্য যে, অক্সফ্যাম ও ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স এর উদ্যোগে ফেব্রুয়ারি ২০২২ শ্রীমঙ্গলে ‘আমরা পারব’ জোট এর আত্নপ্রকাশ ঘটে।
সভায় বক্তারা বলেন, চা বাগানের নারী ও কিশোরীদের সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রশ্নাতীত। দেশের নাগরিক ও শ্রমিক হিসেবে ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি বিশেষ করে চা বাগানের জনগোষ্ঠীর জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। একই সাথে শিক্ষা ও সচেতনার অভাবে চা বাগানের জনগোষ্ঠীর অধিকার সচেতনতার জায়গাটিও বেশ নাজুক এবং সামাজিক নানা কুসংস্কার ও প্রথা বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের বিকাশ, মতপ্রকাশ ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রতিবন্ধক। যদিও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন চা বাগানের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে তারপরও চা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ও বৈচিত্রময় প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় তা অপ্রতুল। চা বাগানে সরকার ও চা বাগান মালিকপক্ষসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠন কাজ করলেও নারীদের জন্য স্বতন্ত্র একটি জোট তৈরি করা একটি সময়ের দাবি।
সভায় বক্তারা উক্ত জোটের কার্যপরিধি আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ুক এবং এর সাথে জড়িত সকল সমমনা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করেন। একই সাথে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন এর হাতকে শক্তিশালী করতে একটি সহযোগি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের সহযোগিতা অব্যহত রাখার অনুরোধ করেন। প্রকল্পের সিলেট বিভাগের দায়িত্বে থাকা প্রকল্প সমন্বয়কারী পারভেজ কৈরী বলেন, প্রকল্পটির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে কয়েকটি কাজ হলো সক্ষমতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা, আমরা পারবো-নারী ও কিশোরী সংঘ গঠন, কমিউনটির চা বাগানের নারী শ্রমিক এবং কিশোরী দলে নিয়মিত মাসিক সভা আয়োজন, চাবাগানের নারী ও কিশোরী মেয়েদের জন্য জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন, জেন্ডার টক বা নারী পুরুষের বৈষম্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান।
সমঝোতা, যোগাযোগ এবং নেতৃত্ব উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, জেন্ডার বিষয়ে সচেতনতাবৃদ্ধির জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, সরকারি কর্তৃপক্ষ, চা বাগান মালিক ও বাচাশ্রইর মধ্যে ডায়ালগ সেশন আয়োজন করা, স্টেকহোল্ডারদের সাথে লার্নিং শেয়ারিং মিটিং আয়োজন করা ইত্যাদি। প্রকল্পটি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ২৫ টি চাবাগান নিয়ে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন অক্সফ্যাম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহায়তায় এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের উদ্যোগে গঠিত এই জোটটি ইতোমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন