শ্রীমঙ্গলে মনোরম দৃশ্য ‘স্বর্ণালী চরা’র সন্ধান
তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু॥ চায়ের রাজধানী বলে খ্যাত মৌলভীবাজারের সুনাম ধন্য পর্যটন এলাকা চায়ের শহর শ্রীমঙ্গল। যতোদূর চোখ যায় মসৃণ সবুজে ছাওয়া উচুঁ-নিচু টিলা , উপরে বিস্তৃত নীলাভ আকাশ । এদিক ওদিক তাকালেই চোখে পড়ে সবুজ বনাণী আর বর্ণিল সব পাখি । চা বাগান , লেক, হাওর, উঁচু নিচু পাহার, ঘন জঙ্গল, খনিজ গ্যাসকূপ আর আনারস, লেবু, পান, আগর ও রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর এই স্থানটির নাম শ্রীমঙ্গল। শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্যের কথা বলে শেষ করা যাবে না। চতুর্দিকে রয়েছে দর্শনীয় স্থান। যেখানে প্রতিদিন দর্শনার্থীদের মিলনমেলা দেখা যায়। যত বেশী বেড়ানো যায় ততই নতুন কোন জায়গার সন্ধান পাওয়া যায়। বর্তমান যোগ তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে চলছে। বিভিন্ন মনোরম সৌন্দর্যের স্থান সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাধানগর এলাকায় এক মনোরম দৃশ্যের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। রাধানগর থেকে প্রায় আধা কি: মি: সামনে গেলেই ছোট্র একটি ব্রিজ এর নিচে এমন এক মনোরম সৌন্দর্য রয়েছে যা যে কাউকেই মুগ্ধ করে দিতে পারে। ব্রিজের নিচে চড়া রয়েছে। চরায় পাথরের উপড়ে সোনালি আইশ পড়ে উজ্জ্বল হয়ে মনোরম দৃশ্যে পরিণত হয়েছে। ব্রিজের নিচে চরায় ছোট নালা রয়েছে একটু উচু থেকে নিচে ধবধবে সাদা স্বচ্ছ পানির পড়ার শব্দ সত্যি অভাবনীয় সৌন্দর্য। প্রতিদিনই স্থানীয় লোকজন এই চড়ায় এসে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এর সৌন্দর্য ছড়িয়ে দিচ্ছে। চড়া দিয়ে হেটে একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেলে দেখা যাবে বাশেঁর ঝার। তার পাশে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছপালা। অত্যন্ত স্বচ্ছ সাদা পানির নিচে দেখা যাবে সোনালি সৌন্দর্য। ব্রিজের নিচে দাড়িয়ে স্বচ্চ পানির স্বা স্বা শব্দ মনে হবে কোন এক বিশাল আকৃতির ঝর্ণার পাশে দাড়িয়ে রয়েছেন।
ব্রিজের নিচে চড়ায় যেসব উচু নিচু স্থান রয়েছে তাতে দেখা যায় গর্তে উপড় থেকে পানি পড়ছে। মনে হবে যেন একটি সোনালী বর্ণের প্রাকৃতিক ঝর্ণা। মাধবকুন্ড, হাম হাম বিশাল বড় ধরনের ঝর্ণা দেখেছেন। এখানে এসে আপনি দেখবেন আরো সৌন্দর্যের লীলা। খন্ড খন্ড গর্তে উপড় থেকে নিচে পানি পড়ছে যা দেখে মুগ্ধ হবে যেকেউ। চড়া দিয়ে হাটতে হাটতে সামনের দিকে এগুতে থাকলে দেখা যাবে সোনালী আইশযুক্ত পাথর। উচু নিচু খন্ড রয়েছে। উচু থেকে নিচুতে প্রবেশ করলে যে সৌন্দর্য উপলব্ধি করা যায় তা সত্যি ভয়ঙ্কর রুপ। চড়ার দু পাশে বাঝের ঝোপ রয়েছে। ঝিঝি পোকার আওয়াজ শুনে মনোরম সৌন্দর্য অবশ্যই রাঙ্গিয়ে তুলবে। চড়া দিয়ে সামনের দিকে প্রায় আধা কি:মি: সামনে গেলে দেখা যাবে বাশের তৈরী একটি সাকু। শ্রীমঙ্গলের রাধানগরে এখন দর্শনার্থীদের আগমন শুরু করেছে। এর সৌন্দর্য ভোগ করতে বর্তমানে স্থানীয় লোকজন সহ শ্রীমঙ্গল শহরের লোকজনও এই মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাচ্ছেন। আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এর সৌন্দর্যের কথা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। জানা যায় এই মনোরম সৌন্দর্যের কথা ২০১৬ সালের ২৯ জানুয়ারি তে তোফায়েল আহমেদ পাপ্পু ও মহসিন হোসেন মিল্লাত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে “স্বর্ণালী চরা” নামে ছড়িয়ে দিলে কিছুটা লোকজনের কাছে পৌছায়। পরে ধীরে ধীরে এর সৌন্দর্য ছড়াতে থাকে।
শ্রীমঙ্গলের দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই। চতুর্দিকে এর সৌন্দর্য রয়েছে। কানাডিয়ান ফ্রিল্যান্স লেখক এন্টনি আর ডেল্টন শ্রীমঙ্গলে সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে একে এক খন্ড স্বর্গ বলে (স্বর্গের কাছাকাছি ) আখ্যায়িত করেছেন । পর্যটনে শ্রীমঙ্গল সারা দেশে এগিয়ে রয়েছে। শুধু দেশ নয় বিদেশেও এই চা শহরের সুনাম সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দেশী বিদেশী পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসেন। শ্রীমঙ্গলের যেদিকে চোখ যাবে সেদিকে মনে হবে সৌন্দর্যের সমারোহ। প্রতিটি স্থানে রয়েছে মনোরম দৃশ্য।
মন্তব্য করুন