শ্রীমঙ্গলে লাশবাহী গাড়ি আটকিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ : প্রতিবাদে তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ
স্টাফ রিপোর্টার॥ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে লাশবাহী গাড়ি আটকিয়ে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজির অভিযোগে তিন ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিক ও এলাকাবাসী। পরে প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয় তারা। শনিবার ১৫ জুন সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের বিলাসের পাড় এলাকায় অবরোধের ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার মতিগঞ্জ এলাকার রুবেল নামে এক চালক রাতে সিলেটের ওসমানী নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাশটি একটি পিকআপ ভ্যানে (ঢাকা মেট্রো ন ১৫৭৩৮১) করে শ্রীমঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো।
পথিমধ্যে মতিগঞ্জের বটেরতল এলাকায় পৌঁছালে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার অপরাধে সাতগাঁও হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই নান্নু মন্ডল যানটি আটক করেন। পরে চালক ও লাশের স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারধর করে ৫ হাজার টাকা দাবি করে।
পরিবহন শ্রমিকরা জানায়, সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলগামী একটি লাশবাহী পিকআপ ভ্যানকে কাগজপত্র চেকিং এর নামে হাইওয়ে পুলিশ বেশ কিছুক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখে।
এ সময় ড্রাইভারের কাছে চাঁদা দাবি করে এবং লাশবাহী গাড়িটিকে আটকে রাখে ও চালককে মারধর করা হয়। প্রতিবাদে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। অবরোধের কারনে আঞ্চলিক মহাসড়কে দুই পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গাড়ীর দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
পরে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা ঘটনাস্থলে পৌছে শ্রমিকদের আশ্বস্থ করলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
সাতগাঁও হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এস আই নান্নু মন্ডল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ এতো অমানুষ নয়। লাশের গাড়ি আটকিয়ে টাকা চাইবে। লাশের গাড়ির সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি। তিনি বলেন, শনিবার সকাল ১১ টার দিকে উত্তরসুর বিসিক শিল্পনগরীর সামনে একটি পিকআপ ভ্যান নং ৪৮৬৭ মাত্রাতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে পিকআপের ওপরে তিনজন যাত্রী বসিয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে ভুনবীর বাজারে যাওয়ার পথে আটকাই। পরে পিকআপের ওপরে বোঝাই তিন যাত্রীকে নামিয়ে সতর্ক করে ছেড়ে দেই। কাগজ না থাকলে পিকআপ আটকালেন না কেন এ প্রশ্নের উত্তরে নান্নু মন্ডল বলেন, লোকাল গাড়ি দেখে ছেড়ে দেয়াটাই বড় ভূল হয়েছে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার কাজ করতে গিয়ে আমরা নানান ধরনের যানবাহন আটক করি এবং এসব কারনেই তারা আমার উপর এরকম ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছে।
শ্রীমঙ্গল ট্র্রাক, ট্যাঙ্কলরি কাভার্ড ভ্যান ও পিকআপ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, ফাঁড়ি ইনচার্জ নান্নু মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কে যানবাহন আটকিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিল। এতে করে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। আজ লাশবাহী যান আটকিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবি করে না পেয়ে চালককে মারধর করেন। আমরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছি। দাবি পূরণ ও সুবিচারের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিয়েছি।
মন্তব্য করুন