শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত কোয়ার্টার ভবনে মাদকসেবীদের আখড়া

July 31, 2024,

এহসান বিন মুজাহির\ শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জামে মসজিদের পরিত্যক্ত কোয়ার্টার ভবনের একটি কক্ষ এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সেবনকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকার পরিত্যক্ত ভবন এবং মসজিদ কোয়ার্টারের আশপাশে আরামদায়ক পরিবেশে মাদক সেবন করছেন।

সন্ধ্যা নামলেই বেড়ে যায় তাদের আনাগোনা। বিশেষ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মসজিদ কোয়ার্টারের একজন স্টাফ (গাড়ি চালক) এর কক্ষে সন্ধা-গভীর রাতেও মাদকসেবিদের জম্পেশ আসর জমে। দীর্ঘদিন ধরে এসব কার্যক্রম অনেকের চোখে পড়লেও মাদকসেবীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননা।

জানা যায়, এরফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা, কর্মচারী-স্টাফ, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং রোগীর স্বজনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। একই সাথে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালের আবাসিক এলাকার ভেতরে ছোট-খাটো অনেক চুরি সংঘটিত হচ্ছে।

এবিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. রুবেল মিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয় বলেন।

এদিকে জানা যায় এহেন পরিস্থিতি উপজেলা প্রশাসন এবং শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে লিখিত এবং মৌখিকভাবে অবহিত করেছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন যে, অনেকদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকার ভেতরের পরিত্যক্ত ভবন এবং হাসপাতালের মসজিদ কোয়ার্টারে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক রুবেল মিয়াসহ আশপাশের বহিরাগত লোকজন ঢুকে মাদক সেবন করছেন। কিন্তু আমি সরাসরি দেখিনি। এরপরও লোকমুখে শুনার প্রেক্ষিতে হাসপাতালে মাদকসেবীদের আনাগোনা বন্ধ

এবং চুরি রোধ করতে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে একাধিকবার এবিষয়টি উপস্থাপন করেছি। অবশেষে চলতি বছরের গত ২২ জুলাই শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষন রায়কে চিঠির মাাধ্যমে এসব বিষয় অবগত করেছি এবং হাসপাতালে বিশেষ পুলিশ টহল প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলে। এছাড়া আমি মৌলভীবাজার সিভিল সার্জনকেও অবগত করেছি।

ডা. সাজ্জাদ হোসেন আরও জানান,  অ্যাম্বুলেন্স চালক রুবেলের বিষয়ে এমনও অভিযোগ পেয়েছি যে, সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে মাদক কার্যক্রম চালিয়েছে। করোনাকালে অ্যাম্বুলেন্স চালককে মাদকের অপরাধে শ্রীমঙ্গল থাানা পুলিশ আটকও করে। এঘটনায় তাকে শোকজ করা হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দোষী প্রমাণিত হয়। এসময় মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করেন।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিনয় ভূষন রায় বলেন, এবিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডা. সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পেয়েছি। এরপর থেকে মাদকসেবীদের গ্রেফতার এবং চুরি রোধে থানার পক্ষ থেকে বিশেষ পুলিশ টহল জোরদার করেছি।

জানতে চাইলে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, এসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী আমাকে অবগত করেছেন। মাদক সেবনকারীদের আনাগোনা বন্ধ করতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক এলাকার পরিত্যক্ত ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্য ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীকে বলেছি। এর আগে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বিভাগীয় মামলা ছিল, তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। রুবেলকে পানিশমেন্ট দেওয়া হয়েছিল। বেতন স্কেল যা ছিল তা থাকবে, তার চাকরিজীবনে আর বেতন বৃৃদ্ধি হবে না বলেও সিভিল সার্জন জানান।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com