শ্রেণী কক্ষের সংকটে শহীদ মিনারে পাঠদান
স্টাফ রিপোর্টার॥ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বাড়ছে শিক্ষার হার সেই সুবাদে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে এক সময়ের পিছিয়ে পড়া হাওর পাড়ের জনপদ। হাওর ও পাহাড় অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার হাওর কাউয়াদিঘীর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পাঁচগাও উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে শ্রেণীকক্ষের সংকটে পাঠদান চলছে বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারে। যার ফলে কিছুটা না হলেও ব্যহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পাঠদান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হাওর পাড়ের অবহেলিত মানুষকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে বর্তমান বাংলাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. খলিকুজ্জামান ১৯৮৫ ইংরেজীতে তার নিজ এলাকায় মাত্র ১৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন পাঁচগাও উচ্চ বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টিতে উওর উওর বাড়তে থাকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
তাদের পাঠদানের জন্য রয়েছে মাত্র ৮ টি শ্রেণীকক্ষ যা প্রয়োজনের তুলনায় অপত্যুল। যার ফলে দেখা দিয়েছে শ্রেণীকক্ষের সংকট বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হচ্ছে বিদ্যালয়ের মাঠের শহীদ মিনার ও গাছ তলায়। এই সমস্যা বিদ্যালয়টিতে লেগে আছে দীর্ঘ দিন থেকে। এদিকে বিশেষ করে শ্রেণী কক্ষ সংকটের প্রভাব পড়ছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপর।
সরজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারে বিজ্ঞান বিভাগের রসায়ন বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক। শহীদ মিনারে কেন ক্লাস নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক বলেন আমাদের বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের অভাবে প্রতিনিয়ত রসায়ন, পদার্থ, জীববিজ্ঞান, ভূগল, ইতিহাসসহ বিভিন্ন ক্লাস শহীদ মিনারে নিতে হয়। বৃষ্টির সময় সম্ভব হলে বারান্দাতে ক্লাস নেওয়া হয় অন্যথায় বন্ধ থাকে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান বাহিরে ক্লাস নেওয়াতে আমরা হাতে কলমে পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। শ্রেণীকক্ষে হাতে কলমে যে শিক্ষা নিতে পারি বাহিরে ক্লাস নেওয়ার ফলে এগুলো সম্ভব হয় না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: ছাদেকুল আমিন ভূইয়া বলেন ৮ টি শ্রেণী কক্ষ দিয়ে ১৫০০ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে আমরা হিমশীম খাচ্ছি। প্রতি ঘন্টায় দুই একটি ক্লাস মাঠে শহীদ মিনার ও গাছতলায় নিতে হচ্ছে, যার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে এবং শিক্ষার কাংঙ্কিত লক্ষে পৌছা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমাদের বিদ্যালয়টি প্রয়াত সমাজ কল্যান মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী পরিদর্শন করেন এবং নতুন ভবন নিমার্ণের জন্য সার্ভে করে নিয়ে যান কিন্তু উনার মৃত্যুর পর আজও আমরা ভবনটি পাইনি। আমাদের বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এমপি ভুক্ত। তবে ২০০০ সাল থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে সরকারি কোন বরার্দ্দ আসেনি। কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের জোড় দাবি বিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো চিহৃত করে দ্রুত সমাধান।
স্কুল কমিটির সভাপতি আবুল কামাল আজাদ বলেন আমাদের বিদ্যালয়ের অন্যতম সমস্যা হচ্ছে শ্রেণীকক্ষ সংকট। সরকারি ভাবে ভবনের আশ্বাস পেলেও কাজের কাজ কিছুই হয় নাই। তাই আমাদের বিদ্যালয় তহবিল থেকে একটি ভবন নিমার্ণ করছি।
মন্তব্য করুন