ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস, স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি কথা

December 13, 2021,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবস। এবার বিজয় দিবসে জাতি যথাযোগ্য মর্য্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী উৎসব উদ্যাপন করবেন। স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর বৎসরেই এবার স্বাধীনতার মহান স্থপতি বাঙ্গাঁলি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জনক বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী-মুজিববর্ষ পালিত হচ্ছে। ফলতঃ এবার ষোলই ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ভিন্ন মাত্রা যোগ হয়েছে।
বাংলা ও বাঙ্গাঁলির হাজার বছরের ইতিহাসে একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি গৌরবময় অধ্যায়, গৌরবোজ্জল ইতিহাস। আমাদের প্রজন্মের চরম সৌভাগ্য ও পরম পাওয়া প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহনের সুযোগ লাভ।
একাত্তোরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে মাষ্টার্স ফাইন্যাল এর ছাত্র ছিলাম। তৎপূর্ব কালে ছাত্র রাজনীতি ঐতিহ্যবাহী সংঘটন ছাত্রলীগ এর নেতৃত্বে-দায়িত্বে ছিলাম। বাষট্টি সালে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষে, রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তক-ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল আলম খাঁন “নিউ ক্লিয়াস” গঠন করলে মফস্বল পর্য্যায়ে ও নিউক্লিয়াস” এর সমর্থক ও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমি স্কুল জীবন থেকেই সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক কার্য্যক্রমে জড়িত ছিলাম। ষাটের দশকে মৌলভীবাজার কলেজ শাখা অতঃপর মহকুমা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। বঙ্গঁবন্ধুর ছয় দফা এবং ছাত্র সমাজের এগারো দফা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলাম।
সাত চল্লিশের ভারত বিভক্তি এবং পাকিস্তানী স্বাধীনতায় বাংলা ও বাঙ্গাঁলির কোন ভাগ্য উন্নয়ন হয়নি, বরং ঝুলুম নির্যাতন হয়েছে। পাকিস্তানী প্রতিক্রিয়াশীল প্রাষাদ-ষড়যন্ত্রী ক্ষমতা লিপ্সু ও গণবিরোধী শাসক চক্রের জেল, ঝুলুম, নির্য্যাতন উপক্ষো করে বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গাঁলি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনকে বেগবান করতঃ সমগ্র দেশ ও জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সত্তোরের সাধারন নির্বাচনকে ছয় দফার রেফারেন্ডাম হিসাবে ঘোষনা দিয়ে নিরংকুশ সংখ্যা গরিষ্টতা অর্জন করেন। পাক ফৌজি প্রেসিডেন্ট লেঃ জেঃ আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খাঁন ক্ষমতা হস্থান্তরের প্রক্রিয়া পদ্ধতি নিয়ে নাটের গুরু জুলফিকার আলী ভুট্টো সহ বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গেঁ আলোচনার নামে কালক্ষেপন করে একাত্তোরের পঁচিশে মার্চের কাল রাত্রিতে “অপারেশন সার্চ লাইট” নামে বাঙ্গাঁলিদের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষনা করেন। শুরু হয় স্বাধীনতা সংগ্রাম।
একাত্তোরের মার্চ মাসই ছিল সংগ্রাম মুখর। সত্তোর সালের সাধারন নির্ব্বাচনের পর পাকিস্তানী শাসন ক্ষমতা প্রাপ্তির পূর্বেই বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিব রাজনীতি ও ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হন। মূলতঃ তাঁর অঙ্গুলি হেলন ও দিক নির্দেশনায়ই তখন দেশ চলছিল। সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষনের প্রতিবাদে বঙ্গঁবন্ধুর আহ্বানে দেশব্যাপী অহিংস ও অসহযোগ আন্দোলন চলছিল। অগ্নি ঝরা ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর কলা ভবন প্রাঙ্গঁনে ডাকসুর ভিপি ছাত্রলীগ নেতা- সেকাল থেকে একালের অনলবর্ষী বক্তা আশম রব লক্ষ জনতার জয় বাংলা শ্লোগানের মধ্যে লাল সবুজের স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। পরদিন ৩রা মার্চ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ছাত্র নেতা শাহ জাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। আমার সৌভাগ্য পতাকা উত্তোলন ও ইশতেহার পাঠের সভায় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মি হিসাবে উপস্থিত ছিলাম। অগ্নি ঝরা মার্চ এর প্রথম সপ্তাহে সন্ধ্যায় সান্ধ আইন-কার্ফূ জারী হলে আমরা সিরাজুল আলম খাঁন দাদার নির্দেশ মত, সব কথার শেষ কথা বাংলার স্বাধীনতা শ্লোগান দিতাম মিছিল করতাম। অগ্নি ঝরা মার্চের সাত তারিখ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর জীবনের শ্রেষ্টতম ভাষন দেন-ঘোষনা করেন এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম- এ বারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। রাজধানী ঢাকা রাজনৈতিক ভাবে ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আমি পোষ্টার, লিফলেট এবং দাদার কতেক নির্দেশনা সহ এলাকায় চলে আসি। আমি তখন মহকুমা ছাত্রলীগের সদ্য প্রাক্তন সভাপতি। আমাদের সময় প্রত্যেক বৎসর ছাত্রলীগ এর সম্মেলন-কাউন্সিল অধিবেশন হত। আমার পরে মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন জনপ্রিয় ছাত্র নেতা-সুদর্শন ও সুবক্তা দেওয়ান আব্দুল ওয়াহাব চৌধুরী এবং সেক্রেটারি নির্বাচিত হয়েছিলেন বিশিষ্ট সংঘটক-ছাত্র নেতা নূরুল ইসলাম মুকিত। (মুক্তিযুদ্ধের সংঘটক অকাল প্রয়াত।)
তেইশে মার্চ একাত্তোর, পাকিস্তানের প্রজাতন্ত্র দিবস-রিপাবলিক ডেতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন “স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ-প্রটেষ্ট ডে” প্রতিরোধ দিবস হিসাবে ঘোষনা করতঃ বিভিন্ন কর্ম্মসূচী ঘোষনা করেন। ঐ দিন চৌমুহনা চত্বরে পূর্ব ঘোষনা মতে এক বিশাল ছাত্র-গনজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। মহকুমা ছাত্রলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি দেওয়ান আব্দুল ওয়াহাব চৌধুরীর (বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা উত্তরকালে জাসদের প্রতিষ্ঠা কালীন নেতা) সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক নূরুল ইসলাম মুকিত এর পরিচালনায় ঐ সভায় আমি মূহুমূহু জয় বাংলা শ্লোগানের মাধ্যমে পাকিস্তানী পতাকা এবং জিন্নাহ সাহেব এর ছবি পুড়িয়ে লাল সবুজের স্বাধীন বাংলার জাতীয় পতাকা এবং বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ছবি উত্তোলন করি। চৌমুহনাস্থ মুক্তা ফটো ষ্টুডিও এই পুড়ানো ও উড়ানোর ছবি উঠিয়ে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার পাক বাহিনী “গুন্ডা মুজিব কাঁহা হ্যায়, উস্কা পাতা বাতাও” বলে অনেক নাগরিককে ঝুলুম নির্য্যাতন করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক ঐ দিন কেন্টনমেন্ট সমূহ ছাড়া সমগ্র পূর্ব বাংলা ব্যাপী স্বাধীন বাংলার লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমার প্রাদেশিক পরিষদ (এম.পি.এ) এর চারটি আসন এবং জাতীয় পরিষদের (এম.এন.এ) দুটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীগণ বিপুল ভোটে জয় লাভ করেছিলেন। মহকুমা ব্যাপী প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচী পালিত হলেও আমাদের কাছে কমলগঞ্জ থেকে খবর এল সেখানে মুসলিম লীগ পন্থীগণ স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে দেয়নি। আমরা পরদিন পঁচিশে মার্চই তারিখ দিলাম-আনুষ্ঠানিক সভার মাধ্যমে আমরা মহকুমার পক্ষ থেকে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করব সেই মর্মে ঘোষনা দিয়ে যেন প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। সমশেরনগর এর আব্দুল গফুর ভাই আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা ছিলেন, বর্তমানে পরলোকে। পঁচিশে মার্চ একাত্তোর কমলগঞ্জ সাব-রেজিষ্টার অফিস মাঠে বিশাল ছাত্র-গনজমায়েত এর মাধ্যমে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়। তখন এখনকার মত এত যানবাহন ছিল না, তবুও আমরা বিপুল সংখ্যক আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ চল চল কমলগঞ্জ চল-আওয়াজ তুলে কমলগঞ্জ গিয়েছিলাম। কমলগঞ্জ বিজয় করে সদল বলে ঐ দিন রাত্রেই আমরা মৌলভীবাজার ফিরে আসি। এখানে এসেও “স্বাধীন কর স্বাধীন কর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর” তোমার আমার ঠিকানা-পদ্মা, মেঘনা, যমুনা- শ্লোগান দিয়ে ম্যানেজার স্টলের রশভর্তি রশগোল্লা, চা-পান শেষে সাধনা ঔষধালয় এর বারান্দায় আরেক দফাশলা পরামর্শে মশগুল হই। বেশ রাত হয়ে গেেেল বাকি আলোচনার জন্য আমার সহপাঠি ও বিশিষ্ট বন্ধু ছাত্রলীগ নেতা দেওয়ান গোলাম ছরোওয়ার-হাদি গাজি (স্বাধীনতার সংঘটক। স্বাধীনতা উত্তর কালে জাসদের প্রতিষ্ঠা কালীন নেতা। নবীগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান। ঘাতক ব্যাধি ক্যেন্সারাক্রান্ত হয়ে অকাল প্রয়াত।) সহ আমাদের সহপাঠি ও বিশিষ্ট বন্ধু আজিজুল হক ইকবাল এর পৈত্রিক বাসগৃহ গীর্জাপাড়াস্থ হক ভিলায় চলে যাই। রাখে আল্লাহ মারে কে? ঐ রাতে আমি আমার পৈত্রিক বাসগৃহ মুসলিম কোয়াটারস্থ রসূলপুর হাউসে যাই নি। হক ভিলার বাহিরের চৌ-চালাটিনের ঘরে বিশাল পালংক ছিল আমাদের বারোয়ারি বিছানা। আজিজুল হক ইকবাল মহকুমা ছাত্র লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক ছিল। গ্রেজুয়েশন শেষে পিতার পেশা শিক্ষকতায় যোগ দিয়ে কে.এ.হাই স্কুলের (বর্ত্তমানে কলেজ) প্রধান শিক্ষক হয়েছিল। সেও ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ইন্তিকাল করে। আল্লাহ আমার এই দুইবন্ধুকে বেহেশত বাসি করুন।
ছাব্বিশে মার্চ একাত্তোর। শহর ব্যাপী মাইক যোগে কার্ফূ ঘোষনা করা হচ্ছে। শাঁ-শাঁ- দ্রুত গতিতে শহর ব্যাপী মিলিটারি গাড়ি যান বাহন চলছে। ছাব্বিশে মার্চের প্রত্যেশেই খাঁন সেনারা মহকুমা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি, সদরের নবনির্বাচিত এম,পি,এ, জননেতা এম.আজিজুর রহমানকে তাঁর গ্রামের বাড়ি গোজারাই থেকে গ্রেপ্তার করে তাদের ক্যেম্প পি.টি.আই-এ-নিয়ে বন্দী করে রাখে, আওয়ামী লীগ নেতা এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রদ্যন্ন কুমার রায়কে তাঁদের পঁশ্চিমবাজারস্থ বাসগৃহে তাঁকে না পেয়ে পাক সেনারা তার বৃদ্ধ পিতা বাবু প্রসন্ন কুমার রায়কে গ্রেপ্তার করে নিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। ঐ দিন ভোরে পাক সেনারা আমার মুসলিম কোয়ার্টারস্থ বাস গৃহে আমাকে গ্রেপ্তার করতে আসে, বাসায় অবস্থানরত আমার ফুফুত ভ্রাতা আজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। আমার বাসায় অবস্থানরত অধ্যাপক ফয়জুর রহমান কৌশলে বাসার পিছন দিকে পালিয়ে যান। এই এলাকা থেকে খান সেনারা ছাত্রলীগ নেতা মতিউর রহমান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে। তিনি কিছু কর্মিসহ রাস্তায় ব্যেরিকেইড সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন। মতিউর রহমান চৌধুরী এবং আজিবুর রহমান খান সেনাদের টর্চার সেল পিটিআই থেকে একজন বাঙ্গাঁলি সৈনিকের সহায়তায় মুক্তি পান। মতিউর বর্ত্তমানে মানব জমিনের প্রতিষ্টাতা-প্রধান সম্পাদক এবং দেশের শীর্ষ স্থানীয় সাংবাদিক। আজিবুর প্রবাসে।
তখন এখনকার মত মোবাইল কিংবা এত টেলিফোন ও ছিল না, আমাদের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামস্থ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে একটি ঘোষনা শুনা গেল-আমি মেজর জিয়া বলছি। পাকিস্তান সেনা বাহিনীর এক দেশ প্রেমিক মেজর কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়, স্বদেশ প্রেম ও স্বাদেশিকতায় উদ্ভোদ্ধ হয়ে-স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। মুক্তিুযুদ্ধের প্রামান্য গ্রহ্ণ এম.আর. আখতার মুকলের আমি বিজয় দেখেছি গ্রহ্ণে তা উল্লেখ আছে।
বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবকে তার বত্রিশ নম্বরের বাড়ি থেকে হানাদার পাক সেনারা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। কিন্তু বিপ্লবি বাংলার চীর বিদ্রোহী বাঙ্গাঁলি বীরের জাতি। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর মোকাবিলা করার জন্য দশই এপ্রিল সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং তাজ উদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার গঠিত হল। সিলেটের সু-সন্তান কর্নেল এম.এজি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি এবং সিলেট হবিগঞ্জের আরেক কৃতি সন্তান কর্নেল এম.এ.রক-কে উপ প্রধান এবং সমগ্র বাংলাদেশকে এগারোটি সেক্টারে বিভক্ত করে এগারো জন সেক্টার কমান্ডার নিযুক্ত করে তাদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিচালনা করার দায়িত্বভার অর্পন করা হয়।
সমগ্র বৃহত্তর সিলেট চার ও পাঁচ নম্বর সেক্টারাধীন ছিল। হবিগঞ্জ-মৌলভীবাজার অঞ্চল চার নম্বর সেক্টারাধীন ছিল। বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে একটি স্মরনীয় নাম হবিগঞ্জের কৃতি সন্তান একে লতিফুর রহমান চৌধুরী ্ওরফে মানিক চৌধুরী এম,এন,এ। ছুটিতে নিজ বাসা বাড়ি হবিগঞ্জে অবস্থানরত পাকা সেনাবাহিনীর চৌকস অফিসার মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্তকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সংঘটকের ভূমিকা বীরত্বের সাথে পালন করেন। তাঁর পৈত্রিক ও পোষাকি নাম এর পরিবর্তে তিনি কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী হবিগঞ্জের অস্ত্রাগার থেকে বন্দুক-গোলা বারুদ সংগ্রহ করে সেনা জনতার সমন্বয়ে মুক্তি বাহিনী গঠন করতঃ হবিগঞ্জ মুক্ত করতঃ পার্শ্ববর্ত্তী মহকুমা মৌলভবিাজার অভিমুখে রওয়ানা হন। পাকবাহিনীকে মৌলভীবাজার থেকে তাড়িয়ে পর্য্যটন রেষ্ট হাউস-পি.টি.আই-এ-ক্যেম্প স্থাপন করেন। দত্ত-চৌধুরীর সম্মিলিত বাহিনী সেরপুর সেক্টারে পাক বাহিনীর সঙ্গেঁ তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্য্যায়ে সেরপুর সেক্টার মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। আকাশ বানী, বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা প্রচার মাধ্যম সমূহ সেরপুর সেক্টার এর যুদ্ধের খবর প্রচার করে। বিদেশী সাংবাদিকদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের মিত্র সাংবাদিক মার্ক টালির ভূমিকা ছিল ইতিবাচক ও সমুজ্জল। সিলেট সদর ও সুনামগঞ্জ অঞ্চল নিয়ে গঠিত পাঁচ নম্বর সেক্টার এর সেক্টার কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী (পরে লেঃ জেনারেল। পরলোকে) এক পর্য্যায়ে পাক বাহিনী সিলেট সদর ও সালুটিকর বিমান বন্দরের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। স্থল পথে হেরে-হটে গিয়ে পাক বাহিনী আকাশ পথে বিমান হামলা জোরদার করে। শব্দের চাইতে দ্রুতগতি সম্পন্ন পাক বিমান বাহিনীর স্যাবজেট বিমান গুলি বেপরোওয়া বোমা বর্ষন করে গনহত্যা ও জনপদ ধ্বংস করে। মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্য্যায়ে আমাদের বিমান বাহিনী না থাকায় আমাদেরকে পিছু হটতে হয়, এক পর্য্যায়ে পাক বাহিনী মৌলভীবাজার-সিলেট অঞ্চল দখল করে নিলে আমরা মুক্তাঞ্চল-ভারতে আশ্রয় নেই। আমাদের এলাকার সীমান্তবর্ত্তী এলাকাও শহর, উত্তর ত্রিপুরাস্থ কৈলাশহর ও ধর্ম নগরে আশ্রয় নেই।
আমরা প্রবেশ করি কৈলাশহরে। দেশত্যাগী শরনার্থী হিসাবে ভারতের কোন শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ কিংবা বাসা বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিরাপদ জীবন কাটানো আমাদের ইচ্ছা ছিল না, আমাদের পরিকল্পনা ছিল আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করব, দেশ মাতৃকার মুক্তি সংগ্রামে শরিক হব। “আমরা” বলতে ইটা অঞ্চলের ছাত্র লীগ নেতৃবৃন্দ গিয়াস উদ্দিন মনির (অবসর প্রাপ্ত রাষ্টদূত। বীর মুক্তিযোদ্ধা) মোঃ ফয়জুর রহমান (মুক্তিযোদ্ধা। অবসর প্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ। অকাল প্রয়াত) মুজিবুর রহমান মুজিব (এই লেখক), ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল অদুদ (জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। অকাল প্রয়াত), সজ্জাদুর রহমান (প্রবাসী। চেয়ারম্যান। প্রয়াত), ছাত্রলীগ সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম মুকিত, (মুক্তিযুদ্ধের সংঘটক। অকাল প্রয়াত)।
ছাত্রলীগ কর্মি নূরুল ইসলাম তরফদার লুতু (পরলোকে) প্রমুখ ইটা অঞ্চলের বাসিন্দা। এক দলীয় এবং একে অন্যের সাথে কম বেশি আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ। এক সন্ধ্যায় একাটুনা বাজারে আমাদের মধ্যে একটি ঘরোয়া বৈঠক করে দ্রুতগতিতে আমরা রাতের আঁধারে পদ ব্রজেই দেশ ত্যাগ করি। উত্তর ত্রিপুরার কৈলাশহর একটি ছোট মহকুমা শহর। কোন আবাসিক হোটেল নেই মুসলিম হোটেলত নয়-ই-যদিও এই অঞ্চলে মুসলিম জনগুষ্টিও আছেন। প্রথম রাত্রে আমরা চাতলাপুর বর্ডারস্থ ই. পি. আর, (পরে বি. ডি. আর.বর্ত্তমানে বি, জি, বি) ক্যেম্পে কাটিয়ে দেই। পরদিন সকালে কৈলা শহর খেলার মাঠ পেরিয়ে আমরা ভারতের মাটিতে পা-রাখলাম-এক কাপড়ে-প্রায় খালি পকেটে।
সকলে এক সঙ্গেঁ এক জায়গায় থাকা যাবে না বিবেচনায় আমরা আলোচনা ক্রমে স্বতন্ত্র চিন্তা ও সিদ্ধান্ত নিলাম। খবর পেলাম মাঠের পাশেই আমার গ্রামের আদি বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবী ইঞ্জিনিয়ার দক্ষিনা রঞ্জন ঘোষ এর বাসা। আমরা একে অন্যকে চিনি না। তবে রসুলপুর মহাজন বাড়িটি খুবই সম্ভান্ত ও শিক্ষিত। আমাদের মিয়ার বাড়ি ও মহাজন বাড়ি পাশাপাশি এবং খুবই সু-সম্পর্ক যুক্ত। আমার পিতার নাম পরিচয় দিতেই মধ্য বয়সী দীর্ঘদেহী দক্ষিনা ঘোষ আমাকে সাদরে গ্রহন করলেন, থাকার জায়গা দিলেন, মমতা, আন্তরিকতা প্রদর্শন করলেন। বল্লেন চৌমুহনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবু হরে কৃষ্ণ দাশ এই শহরেই আছেন। প্রথম দিকে আমরা এ ভাবে একেক জন একে জায়গায় আশ্রয় নিলাম। পরদিনই, আমাদের পরিবারের সঙ্গেঁ পারিবারিক ভাবে সু-সম্পর্ক যুক্ত ভ্রাতৃ প্রতিম হরে কৃষ্ণ দাশ এর সঙ্গেঁ সাক্ষাত করলাম। তাঁর মামা বিশাল রাম কৃষ্ণ ক্লথ ষ্টোরের মালিক। ইতিমধ্যে আমার লন্ডন প্রবাসী পিতা সংবাদ পেয়েছেন আমি বেঁচে আছি এবং কৈলাশহরেই আছি। আমার পিতা হরে কৃষ্ণ দাদাকে আমার প্রয়োজনীয় টাকা, দাদার মামাকে আমার প্রয়োজনীয় কাপড় চোপড় প্রদানের অনুরোধ জানান, ফলতঃ আমার থাকা খাওয়া ও কাপড় এর ব্যস্থা হয়ে গেল। বাবা-মাও বেঁচে নেই, আল্লাহ তাদের বেহেশত নসিব করুন। এর মধ্যে এই ছোট, শহরের সাংবাদিক শিক্ষাবিদ-রাজনীতিবিদদের সঙ্গেঁ আমার সম্পর্ক ও সখ্যতা গড়ে উঠে। সাংবাদিক এবং ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় এর ছাত্র হিসাবে আমার সকল মহলের সঙ্গেঁ কাজ করতে সুবিধা হয় এবং আমি এখনও একাত্তোরের কৈলাশহরি বন্ধু শিক্ষাবিদ রবীন্দ্র কুমার ভট্টাচার্য্য-রবিদা, সাংবাদিক মোহিত পাল শিল্পী সুভাষ চক্রবর্ত্তী, ছাত্র নেতা কুতুব আলীর কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরন করি। আমাদেরকে এক সঙ্গেঁ থাকার জন্য রবি দা-রা কলেজ রোডে তাদের ক্লাব গৃহ-নব কুমার ক্লাব আমাদেরকে বিনা ভাড়ায় বরাদ্দ দেন। নয় ছয় সাইজের ছন বাসের একটি গৃহ। এক কোনে বিদ্যা দেবী শ্বরস্বতির একটি প্রমান সাইজের মূর্তি। এখানে আমি, আব্দুল অদুদ, নূরুল ইসলাম মুকিত, নূরুল ইসলাম তরফদার লুতু ক্যেম্প এর মত এখানে অবস্থান নিলাম। নবকুমার ক্লাব হয়ে গেল আমাদের যোগাযোগ কেন্দ্র। ইতিপূর্বে ভারতীয় জেনারেল সুরজিত সিং উভানের তত্ত্বাবধানে গঠিত হয়েছে মুজিব বাহিনী। সমগ্র বাংলাদেশকে চার ভাগে বিভক্ত করে মুজিব বাহিনীর চার আঞ্চলিক অধিনায়ক ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খাঁন, আব্দুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমদ। আমাদের আঞ্চলিক অধিনায়ক ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি। উচ্চ শিক্ষিত ও অত্যধনিক প্রশিক্ষন প্রাপ্ত মুজিব বাহিনীর বীর যোদ্ধাগণ গেরিলা পদ্ধতিতে হিট এন্ড রান অভিযান করে শত্রুকে বিপর্য্যস্থ এবং শত্রুর অর্থনীতিকে বিধ্বস্থ করে দেন। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে মুজিব বাহিনীর সংঘটক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতার আহমদ।
ইতিমধ্যে আমি ইয়ূথ ক্যেম্প-এ-পলিটিক্যাল মবিলাইজার-এর-কাজ পেলাম। সংগৃহিত মুক্তিযোদ্ধা গণকে ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানোর পূর্বে এখানে পি.টি.সহ প্রাথমিক প্রশিক্ষন এবং রাজনৈতিক মটিভেশন হত। সেক্টার কমান্ডার মেজর সি.আর.দত্ত ক্যেম্প পরিদর্শন করে সন্তুস প্রকাশ করতেন। ভারতীয় সেনা বাহিনীর ক্যেপ্টেন হামিদ ক্যেম্প এর দেখভাল করতেন, প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতেন। কৈলাশহরে অবস্থানরত কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরী অমাাকে ভ্রাতৃবৎস্নেহ করতেন। শক্তিমান সংঘটক অনশবর্ষী বক্তা মানিক চৌধুরী কমলপুর, আঠারোমুরা, ছাত্রিশমুরা শরনর্তি শিবির পরিদর্শন ও মুক্তি বাহিনী রিক্রুটমেন্টে যেতে আমাকে নিয়ে যেতেন, ভাষন দিতেন, আমিও তাঁর সঙ্গে বক্তৃতা দিতাম। অনেকে অবশ্য খুছা দিতেন-লম্বা ভাষণ দিয়ে দেশান্তরি করেছেন, এবার আছেন লম্বা ভাষন দিয়ে জীবন নিয়ে খেলা করতে। মানিক ভাই ব্রর্জ্য কন্ঠে বলতেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সময়ের ব্যাপার। সীমান্ত এলাকায় মুক্তি বাহিনীর রেজিমেন্টাল ওয়ার এবং দেশাভ্যন্তরে মুজিব বাহিনীর গেরিলা অভিযানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি চূড়ান্ত রূপ নিতে থাকে। এমতাবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের সংঘটক এবং প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, বঙ্গঁবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর দেওয়ান ফরিদ গাজির পরামর্শে বৃহত্তর সিলেটের সকল নেতৃবৃন্দের সামরীক প্রশিক্ষনের জন্য এস.পি.এল- ওয়ান গঠন করেন। আমরা করিমগঞ্জ সমবেত হই, আমাদেরকে আসাম এর লোহার বন্দ মাসাধিক কালের সামরীক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়। কর্নেল বাগচি ছিলেন সেই ট্রেনিং সেন্টারের প্রিন্সিপাল। আমি ছিলাম এই ব্যাচ এর কমান্ডার। আমার টু-আই-সি ছিলেন কুলাউড়ার ছাত্র লীগ নেতা সৈয়দ জামাল উদ্দিন। শারীরিক ভাবে আমি হালকা পাতলা গড়নের হলেও সাময়ীক টেনিং এ আমার কষ্ট হলেও খুব অসুবিধা হয় নি। এম,সি, কলেজ অধ্যয়ন কালে ইউ,ও,টি,সি, (University officers training course) ট্রেনিং দিয়েছিলাম, বন্দুক চালনা ও জানতাম। কৃতিত্বের সাথে ট্রেনিং শেষে আমাদের চার নম্বর টেক্টারে সংযুক্ত হই। মুক্তি যুদ্ধে চার-পাঁচ নম্বর সেক্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। শীতের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের খবর ও গরম হতে থাকে। এই ক’মাসে খান সেনাদের কমর ভেঙ্গে গেছে। ৬ইং ডিসেম্বর একাত্তোর ভারত সরকার কতৃক প্রবাসী মুজিবনগর সরকারকে স্বীকৃতি দানের মাধ্যমে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর যৌথ অভিযানে আটই ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত হয়। সদরের এমপি.এ.সি-ইন-সি-স্পেশিয়াল এর বীর যোদ্ধা এম.আজিজুর রহমান এস,ডি,অ, অফিসে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। আমরা সদলবলে বীরের বেশে প্রিয় শহরে ফিরে এলাম। ষোলই ডিসেম্বর পড়ন্ত বিকেলে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর আঞ্চলিক অধিনায়ক লেঃ জেঃ জগজিত সিং অরোরার নিকট পাক বাহিনীর এতদাঞ্চলিয় অধিনায়ক লেঃজেঃ আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজির নিঃশর্ত আত্ব সমর্পনের মাধ্যমে ন’মাসের রক্ত ক্ষয়ী স্বাধীনতা ষ্রংামের পরিসমাপ্তি ঘটে। জন্ম নেয় একটি নূতন দেশ বাংলাদেশ-স্বাধীন বাংলাদেশ।
গণতন্ত্র সুশাসন ও আত্ব নির্ভরশীল অর্থনীতিই ছিল স্বাধীনতার মূলনীতি যা এখনও অধরা।
স্বাধীনতার এই সুবর্ণ জয়ন্তিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর শহীদানের স্মৃতির প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি, যুদ্ধাহত বীর সহ যোদ্ধাদেরকে সমবেদনা ও ভালোবাসা।
আমাদের প্রজন্ম দেশ ও জাতিকে উপহার দিয়েছেন চীর কাংখিত-প্রিয়তম স্বাধীনতা, এ প্রজন্মের পবিত্র দায়িত্ব প্রিয়তম স্বাধীনতার সু-সংহতি ও সার্বজনীনতা। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়ে একাত্তোরের বীরেরা-এই আমরা এখন সত্তরোর্ধ-জীবন সায়াহ্ণে-পড়ন্ত বেলায়। ষোলই ডিসেম্বর-এই বিজয় দিবস যেন আমাদের জীবনে শেষ বিজয় দিবস না হয় মহান মালিকের কাছে এই মোনাজাত সহ আমীন। ছুম্মা আমীন।
[ষাটের দশকে ছাত্র লীগ নেতা। মুক্তিযোদ্ধা। কলামিষ্ট। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি ও মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।]

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com