সচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে জলবায়ু ধর্মঘট অনুষ্ঠিত
স্টাফ রিপোর্টার॥ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে মৌলভীবাজারে অনুষ্ঠিত হলো ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক ২০২৪’। ‘বেঁচে থাকার অধিকার, চাই জলবায়ুর সুবিচার’ এই স্লোগানে গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকের ব্যানারে এই জলবায়ু ধর্মঘটের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার ২০ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত শহরের চাঁদনীঘাট ব্রিজ সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কমিউনিটি ইউনাইটেড ফর রিলিফ এন্ড ইমপাওয়ার্মেন্ট (ঈটজঊ) শতাধিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক পালন করে। এতে যুব ভলেন্টিয়াররা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমানো, প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করা, কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং নবায়নযোগ্য সম্পদে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য জোর দাবি জানায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে এবং ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানান ধর্মঘটকারীরা। এসময় তারা তাদের দাবি সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানান ।
এই স্ট্রাইকে তরুণদের সাথে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর জাতীয় পরিষদ সদস্য আসম সালেহ সোহেল। তিনি লাউয়াছড়া জাতীয় উদানে অতিরিক্ত টুরিস্টের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং এর প্রতিবাদ জানান। এছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন জলবায়ু সম্পৃক্ত সমস্যা নিয়ে তিনি আলোচনা করেন। তার এই আলোচনায় উপস্থিত কিশোর কিশোরীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
এছাড়াও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্কাউটস কমিশনার খায়রুল আমিন সোহেল, জেলা স্কাউটস মৌলভীবাজারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনির মিয়া। তারা ইয়ুথদের এই সংগ্রামে সমর্থন জানান এবং মৌলভীবাজারের বর্তমান সমস্যা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই বিশ্ব জলবায়ু স্ট্রাইকে সমর্থন জানান- মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল আলি, জেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান, মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, এফ.এস.সি.ডি স্টেশন মাস্টার যীশু তালুকদার, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্কাউটস সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম সিপন, শেখ বোরহান উদ্দিন ইসলামিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এম মুহিবুর রহমান, মৌলভীবাজার সদর মিনি পার্লামেন্ট মেম্বার সেলিনা বেগম প্রমুখ।
এসময় ধর্মঘটকারীরা জানান, বিশ্বের তাপমাত্রা আরও বাড়লে, খরা, বন্যা ও প্রচণ্ড গরমের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে। যা কয়েক মিলিয়ন মানুষের ধ্বংস, বাস্তুচ্যুতি ও দারিদ্র্যের কারণ হবে। বিশেষকরে বিশ্বের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর মানুষের জন্য এটি একটি বিড়ম্বনার বিষয়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনে এ অঞ্চলের লোকেরা সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখলেও, সবচেয়ে বড় মূল্য তাদের দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখে পড়ার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশ বলে উল্লেখ করেন ধর্মঘটকারীরা।
কমিউনিটি ইউনাইটেড ফর রিলিফ এন্ড ইমপাওয়ারমেন্টের সভাপতি মাহতাবুল ইসলাম উদয় বলেন, “পৃথিবী কতটুকু ধ্বংসের দিকে আগাচ্ছে তা আমাদের কল্পনার বাইরে। আমাদের এই আন্দোলন শুধু আমাদেরই নয় তা এই সমাজের। এই দেশের এবং এই পৃথিবী সবার। তাই এই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।”
উদয় বলেন, ‘এই স্ট্রাইকের মাধ্যমে আমরা সফলভাবে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে সক্ষম হই।’
ইয়ূথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক দ্বীপ্র ধর অর্ঘ্য বলেন, আমাদের ধর্মঘট থেকে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের কাছে আমরা দাবি জানাই যে, জ্বালানি ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ চাই, ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ চাই। তাই আমাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে তরুণ ও সচেতন মহলের এগিয়ে আসতে হবে।
মন্তব্য করুন