সন্তান জন্মের পর করোনায় মারা গেলেন মা
স্টাফ রিপোর্টার॥ গৃহবধূ লিমা আক্তার ঈদের দিনে জন্ম দেন ফুটফুটে এক শিশু কন্যা। ঈদের আনন্দ ও নতুন করে পরিবারে যোগ হওয়া ফুটফুটে শিশু পাওয়ার আনন্দ শেষ করে দিল মরণব্যাধি করোনায়।
সেইসঙ্গে দুর্ভাগ্য নেমে এলো নবজাতক কন্যার জীবনে। জন্মের পরপরই মায়ের বুকের দুধ পান করার আগেই এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল ঘুরে করোনা আ’ক্রান্ত (কোভিড-১৯) হয়ে শেষতক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন নবজাতকের মা লিমা আক্তার। নিমিষেই শেষ হয়ে গেল পরিবারের আনন্দ। করোনার ভয়াল থাবায় অনিশ্চিত এখন শিশুর ভবিষ্যৎ।
২০ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টায় সিলেটের নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি লিমা আক্তারের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি রাজনগর উপজেলার ডেফলউরা গ্রামে। পরে রাত সাড়ে ৩টায় জা’নাজা শেষে ইকরামুল মুসলিমিন মৌলভীবাজার মৃতের লাশ দাফন করে উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের ডেফলউড়া গ্রামে।
করোনায় মৃত গৃহবধূ লিমা রাজনগরের টেংরা ইউনিয়নের ডেফলউড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী। ৫ বছর বয়সী তার আরেকটি একটি ছেলে রয়েছে। মৃত লিমা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক শিশুটিকে বিছানায় শুইয়ে ফিডার খাওয়াচ্ছেন তার এক ফুফু। শিশুটির দাদা লকুছ মিয়া ছিলেন পাশে।
তিনি বলেন, সন্তানসম্ভাবা লিমা আক্তারকে ঈদের আগে মৌলভীবাজারের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করান। এ সময় তার করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে গাইনি ডাক্তার করোনা টেস্ট করা’নোর জন্য বলেন এবং সেখান থেকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
নমুনা দেয়ার তিন দিন পর লিমা আক্তারের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সেখানের ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে সিলেট রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে নিয়ে গিয়ে সিজারে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন লিমা আক্তার।
তিনি আরও জানান, সন্তান জন্ম দেয়ার পর তার অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকে। প্রয়োজন হয় আইসিইউর। সেখান থেকে সিলেট মা ও শিশু হাসপাতাল ও পরে মঙ্গলবার দিনে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। শিশুটির দাদা বলেন,নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার পর আস্তে আস্তে তার অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকে। পরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়।
শিশুটির দাদি সালমা বেগম বলেন, আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। মা ছাড়া ১০ দিনের শিশুটিকে কীভাবে লালন পালন করব।
মন্তব্য করুন