সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ উগ্রবাদ ইসলামে নিষেধ

July 27, 2016,

এহসান বিন মুজাহির

সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ উগ্রবাদ ইসলাম কখনো অনুমোদন করে না। বোমাবাজি, মানুষ হত্যা, সন্ত্রাস, ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি ও আত্মঘাতী তৎপরতা ইত্যাদি ইসলামে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করা হয়েছে। দুনিয়ায় ফেতনা-ফাসাদ, রক্তপাত, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা, মানুষ হত্যা, যেকোনো ধর্ম, মতাদর্শ ও সভ্যতাবিরোধী। ফেতনা-ফাসাদ, অরাজকতা, ত্রাস সৃষ্টি করাকে ইসলাম ধর্মে পরিস্কার হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসীদের কোনো ধর্ম নেই। মূলত কোনো ধর্ম, মতবাদ বা আদর্শ সহিংসতা বা সন্ত্রাস শিক্ষা দেয় না। ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই হোক বা পার্থিব-অপার্থিব কল্যাণের অলীক আশায় হোক, যে বা যারা সন্ত্রাসী-জঙ্গি কর্মকা- পরিচালনা করছে তারা ইসলাম, দেশ-মানবতার দোশমন। তারা সন্ত্রাসী কর্মতঃপরতার মাধ্যমে পবিত্র ধর্ম ইসলাম, মুসলিম উম্মাহকে নানভাবে কলঙ্কিত ও দেশ-জাতির বিরাট ক্ষতিসাধনে বিরাট ভূমিকা রাখছে। যে দল বা ব্যক্তি এগুলো করছে তারা বিভ্রান্ত, ইসলাম বিরোধীদের ক্রীড়নক। জঙ্গিরা সত্যিকার ইসলামপন্থি, ইসলাম প্রচারক ও দ্বীনি আন্দোলনকারীদের বিতর্কিত করতে জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে বাংলাদেশসহ ইসলামী দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নতির পথ রোধ করতে এবং এসব দেশে তাদের সামরিক আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে একে কাজে লাগাচ্ছে। ইসলাম নামধারী জঙ্গি সংগঠনগুলো হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ও ক্ষমতার লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য আদর্শের উগ্র উন্মাদনায় মেতে ওঠে  দেশ-বিদেশে একের পর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠছে। তারা তাদের হীন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্য কিছু বিভ্রান্ত তরুণ মুসলমানকে এহেন কাজে ব্যবহার করছে। বিশ্বের সকল বরেণ্য আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ইসলামী চিন্তাবিদগণ এবং মূলধারার সকল ইসলামী সংগঠন ও সংস্থা এ বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, এধরনের ব্যক্তিরা বিভ্রান্ত, বিপথগামী। এরা ইসলামের শত্রুদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। ইসলামের শত্রুরা এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। ওরা এদেরকে ইসলামের ভাব-মর্যাদা ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করছে। এসকল ব্যক্তি  কোনভাবেই ইসলামের জন্য কল্যাণকর হতে পারেনা। তারা ইসলামকে বিশ্ববাসীর সামনে বিকৃত ও কুৎসিতভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়। পৃথিবীতে ফেতনা-ফাসাদ, রক্তপাত, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, সৃষ্টিকরাই ওদের উদ্দেশ্য। অথচ  ইসলাম ধর্মেও জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ রুখতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ এরশাদ করেন ‘পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে প্রয়াসী হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীকে পছন্দ করে না।’ (সুরা কাসাস ৭৭)

আল্লাহপাক বলেন, ‘ফিতনা (দাঙ্গা, বিশৃঙ্খলা ও গৃহযুদ্ধ) হত্যা অপেক্ষা গুরুতর পাপ।’ (সুরা বাকারা ১৯১)

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা : নিসা: ৯৩)

আল্লাহ  আরও এরশাদ করেন ‘আর যে কারো প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সুরা মায়েদা ৩২)

এহান আল্লাহ এরশাদ করেন ‘নরহত্যা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল।’ (সুরা মায়েদা: ৩২)

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া গোনাহর কাজ আর তাকে হত্যা করা কুফরি। (বুখারি, হাদিস : ৬০৪৪)

ইসলামের আইনে যেভাবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বড় গোনাহ, তেমনি রাষ্ট্রিয় আইনেও মারাত্মক গোনাহ। কাজেই সমাজ-রাষ্ট্রে ফেতনা-ফাসাদ, বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসীদের রোধ করতে ধর্মীয় শিক্ষা, আল্লাহর ভয় ও  ইসলামী অনুুসাশনের বিকল্প নেই।

 

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com