সবার মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করাই ঈদের শিক্ষা
এহসান বিন মুজাহির॥ দীর্ঘ এক মাস পবিত্র সিয়াম সাধনার পর এবারও রমজানের রোজার শেষে ঈদ এসেছে, তবে খুশির ডালা সাজিয়ে নয়, আসছে আনন্দ, আশঙ্কা, অনিশ্চয়তার অবিমিশ্রিত বার্তা নিয়ে।
ঈদের শুরুটা হয় ঈদগাহে সবাই মিলে নামাজ পড়তে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। কিন্তু করোনার সংকটের কারণে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনার কারণে এবার ঈদগাহে ঈদের নামাজ হয়নি এবং ঈদ জামাতের পর কোলাকুলি ও হাত মেলানো যায়নি। কঠিন ও অভূতপূর্ব ঈদ ইতোপূর্বে আমি পাইনি।
এমনই সময় ঈদটি এসেছে করোনার ভাইরাসের ফলে যখন কোটি মানুষ কর্মহীন। অগণিত মানুষ লড়ছে দুই বেলার আহার জোগাড়ে। গত দুই মাস ঘরবন্দি থাকার পর কতজনের সামর্থ আছে আনন্দের সাথে ঈদ উদযাপন করার!
একদিকে করোনা দুর্যোগ অপরদিকে করোনাকালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাত এবারের ঈদকে আরও ‘দূরের উৎসবে’ পরিণত করেছে।
যত কঠিন সময়ই কাটুক, ঈদ বলে কথা। কোনো
আয়োজন বা প্রস্তুতি না থাকলেও আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারদের জন্য পুরস্কারের দিন হিসেবে ঈদুল ফিতর মুসলমানদের কাছে তাৎপর্যমন্ডিত একটি দিন।
কবির ভাষায় ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানি তাগিদ।
ঈদ এর প্রকৃত অর্থ যদি খুশিই হয় তাহলে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে, সুখ-দুঃখের সমভাগী হয়ে অধিকার ভোগ আর দায়িত্ব পালনের মাঝে যে আনন্দ; সে শিক্ষাই যেন রয়েছে ঈদের মাহাত্ম্যে। জাতীয় কবি কাজী ‘কৃষকের ঈদ’ কবিতায় লিখেছেন-
‘জীবনে যাদের হররোজ রোজা
ক্ষুধায় আসে না নিদ
মুমূর্ষু সেই কৃষকের ঘরে
এসেছে কি আজ ঈদ?
ঈদের মহান শিক্ষাই হচ্ছে সব ভেদাভেদ হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে এক আল্লাহর বান্দা হিসেবে একে অপরের মাঝে ভ্রাতৃত্বে ও সহমর্মিতার বাস্তব দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।
আসুন না সবাই মিলে করোনা সংকটে ধুঁকতে থাকা গরিব-দুঃখী মানুষকে আমাদের ঈদের আনন্দে শামিল করি।
লেখক : প্রিন্সিপাল, শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল ও সভাপতি, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ঐক্য পরাষদ
মন্তব্য করুন