সিলেটের বৃহৎ শিয়া ধর্মের মহরমের উৎসব উদযাপনে কুলাউড়ার নবাববাড়ি প্রস্তুত
এম মছব্বির আলী॥ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সিলেট বিভাগের একমাত্র কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশায় শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে পবিত্র মহরম মাসে কারবালার স্মৃতিকে স্মরণ করে ১০দিন ব্যাপী বিশাল আয়োজনে মহরমের শোক পালনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হরা হয়েছে।
সিলেট বিভাগের মধ্যে একমাত্র উল্লে¬খ্যযোগ্য সংখ্যাক শিয়া সম্প্রদায় পরিবারের বসবাস পৃথিমপাশায়। যার ফলে, এখানে দীর্ঘ প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময় থেকে মহরম পালন করে আসছেন পৃথিমপায় শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা। অতিরিক্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে এবার প্রথম বারের মতো নবাব বাড়ির প্রবেশ পথ, ইমাম বাড়ি ও মসজিদ এলাকায় সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩ অক্টোবর সোমবার পহেলা মহরম শুরু এবং ১২ অক্টোবর বুধবার ১০ মহরম পবিত্র আশুরা। সূত্রে জানা গেছে-৬১ হিজরীতে পবিত্র কারবালা প্রান্তরে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আঃ) ও উনার সঙ্গীরা ইসলামের জন্য শাহাদাত বরণ করেন কারবালার প্রান্তরে। কারবালার স্মৃতিকে লালন করে এখানে প্রথম থেকে ১০ মহরম পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপী মহরমের শোক পালন উপলক্ষে কারবালার স্মৃতিস্মরণ করে মজলিশ, ওয়াজ, দোয়া, নোওহা, জারি, আমল, বিশেষ জিয়ারত, জিঞ্জির-মাতম, শোকের নিশান আলম ও তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হবে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও।
পবিত্র মহরমের শোক অনুষ্ঠানসূচী পালিত হবে নবাব বাড়ি, তরপী সাহেব বাড়ি, ছোট সাহেব বাড়ি, বাঘ বাড়ি, মরহুম শাহাদাত হোসেনের বাড়ি, গোলাম হোসেনের বাড়ি, মনরাজ সাহেব বাড়ি, পাল¬াকান্দি সাহেব বাড়িতে।
১০ মহরম ১২ অক্টোবর বিকালে নবাব বাড়ি ইমাম বাড়ি থেকে বিশাল তাজিয়া মিছিল সহকারে রবিরবাজার আলী আমজদ স্কুলের সম্মুখে (পদ্মদিঘিরপার) নামক স্থানে গিয়ে মজলিশ, মাতম, দোয়া ও জিয়ারতের মাধ্যমে ১০ দিন ব্যাপী শোক অনুষ্ঠান সমাপ্ত হবে। তা ছাড়া মহরম উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে আগত মাওলানারা কারবালার ইতিহাসের উপর বয়ান পেশ করবেন। এদিকে পবিত্র মহরমের অনুষ্ঠান দেখতে শিয়া ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজন এ এলাকায় আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন। প্রতি বছর এ সময় এ এলাকার সকল বাড়িতে প্রচুর মেহমান থাকেন। মহরম উপলক্ষে নবাব বাড়িতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে এবং বিভিন্ন ধরনের দোকানপাঠ বসে। পৃথিমপাশার নবাব বাড়ির বাসিন্দা নবাব আলী হামিদ খান জানান, মহরমের শোক অনুষ্ঠান পালনের জন্য তিনি ও সাবেক এমপি নবাব আলী আব্বাছ খানের উদ্যোগে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে ইতোমধ্যে। এখানে মরহমের শোক অনুষ্ঠান পালনে এলাকার সকল সম্প্রদায়ের লোকজন সার্বিক সহযোগিতা করে থাকেন। আশাকরি এ বছরও সুষ্টভাবে সকল অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন