সিলেটে হোটেল শ্রমিকনেতাদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে স্মারকলিপি
স্টাফ রিপোর্টার॥ মহান মে দিবসের কর্মসূচি পালনের ঘটনাকে কেন্দ্র সিলেটে জনৈক হোটল মালিক কর্তৃক সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতাকৃত শ্রমিক নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
২৩ মে দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় ১৯৯৩ সাল থেকে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ১৯৩৩ শ্রমিকদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের প্রচলিত আইন মোতাবেক নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন-সংগ্রামের পাশাপাশি মালিকদের সাথে দরকষাকষি করে আসছে। মহান মে দিবসে শ্রমিকদের ঐক্য ও সংহতির সাথে একাত্ম হতে ১ মে ছুটির জন্য বিগত বছরের ন্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এবারও মালিকদের চিঠি দেওয়া হয়। এপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ শ্রমিকদের ছুটি দিয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন। কিন্তু অতি নগন্য সংখ্যক মালিক তাদের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত বাস্তায়নের মানসে এবছর মে দিবসে শ্রমিকদের জোরপূর্বক কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে উস্কানিমূলক পরিবেশ তৈরি করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১ মে’২০২৪ সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫-২০ জনের নাম অজ্ঞাত রেখে জনৈক হোটেল মালিক আব্দুল মালিক থানায় অভিযোগ দায়ের করে যা পরবর্তীতে দক্ষিণ সুরমা থানায় তাং ০২/০৫/২৪খ্রি: মামলা নং জি আর ৭৪/২০২৪ হিসেবে লিপিবদ্ধ। এই মামলাটি যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক তা গতবছরের মহান মে দিবসে মালিকদের দ্বারা প্ররোচিত হোটেল শ্রমিক শাহিন আহমদের দায়েরকৃত মামলা জিআর দক্ষিণ সুরমা ১০৮/২০২৩ এর এজহারের সাথে মিলালে প্রমাণ হয়। কারণ উভয় মামলায় এজহারভূক্ত আসামীর নাম ও ঠিকানা একই। এমনকি পরবর্তীতে হোটেল শ্রমিক শাহিন আহমদ উনার মালিকদের প্ররোচণার ফাঁদে পড়ার ভুল বুঝতে পারলে সংগঠনের নিকট দুখঃপ্রকাশ করেন এবং অনুতপ্ত হয়ে ইউনিয়নের কাজে আত্ননিয়োগ করেন। যার কারণে পরবর্তীতে শ্রমিক শাহিন আহমেদও মালিকদের রোষানলে পড়েন। ২০২৩ সালে শাহিন আহমদকে দিয়ে মালিকদের দ্বারা মিথ্যা মামলায় এজহারভুক্ত এইক আসামীকেই ২০২৪ সালে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। যেখানে শাহিন আহমদকে ২নং আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
১ মে সকাল ১০টায় সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে সমাবেশ ও পরবর্তীতে র্যালি করে জাতীয় ফেডারেশন বাজাফে-০৫ এর বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সিলেটের ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন। মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের ভাষ্য অনুযায়ি যে সময় হোটেল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে তখন অর্থাৎ সকাল ১০টা হতে দুপুর ১.২০ মিনিট পর্যন্ত সমাবেশ ও পরবর্তীতে র্যালি আম্বরখানা গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। মিছিল পরবর্তী দুপুর ২টায় সংগঠনের কর্মসূচী সমাপ্ত হয়। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫-২০ জনের নাম অজ্ঞাত রেখে জনৈক হোটেল মালিক আব্দুল মালিক মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত সকলেই কোর্ট পয়েন্টের শ্রমিক সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন সময় মালিকদের কাছ থেকে আইনি পাওনা ও ত্রিপক্ষিয় বৈঠকের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে ভূমিকা রাখে সংগঠন। মালিক সমিতির সভাপতিসহ সমিতির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক মালিক/প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের আইনি পাওনা পরিশোধ করে। যার কারণে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ মালিকদের রোষানলে পড়েন।
স্মারকলিপিতে অবিলম্বে সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের নামে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়।
মন্তব্য করুন