(ভিডিও সহ) সিলেট বিভাগে যদি জঙ্গিবাদের কোন ঘটনা ঘটে তাহলে কাউকে জীবিত অবস্থায় ফেরত দেয়া হবে না-সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি’র হুঁশিয়ারী
স্টাফ রিপোর্টার॥ সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম বলেছেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরে এই প্রথম গুলশান ট্র্যাজেডি ঘটনা ঘটে। এ হত্যাকান্ডের শিকার হয় বিদেশীগণ। আপনাকে-আমাকে চিন্তা করতে হবে কি কারণে বিদেশীদের টার্গেড করা হয়।
আজকে বাংলাদেশ যে মুহুর্তে সারা বিশ্বে বিভিন্ন সূচকে সারা পৃথিবীকে চমক লাগিয়ে সর্ব ক্ষেত্রে উচ্চ শিখরে যাচ্ছে। ঠিক সেই মহুর্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে এই হত্যা কান্ডে সংঘঠিত হচ্ছে। আজকে সারা পৃথিবীতে জিডিপির হার যেখানে ৫ পার্সেন্ট বাংলাদেশের সেখানে জিডিপির হার সেখানে ৭ পয়েন্টের উপরে। বাংলাদেশ যখন পৃথিবীর সকল দেশের তুলনায় গামের্ন্টেস সেক্টরে প্রথম সারির দিক দিয়ে প্রথম স্থানে ঠিক সেই সময়ে বিদেশীদের হত্যা করা হয়েছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ যখন সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে,যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা ছাড়াই যখন পদ্মা সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে এবং ২০১৮ সালে এর উদ্ভোধন হবে, বাংলাদেশ যখন মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে চতুর্থ ঠিক সেই মুহুর্তে গুলশান ট্র্যাজেডি সংঘটিত হয়েছে। বাংলাদেশে
এডুকেশন সেক্টরে বাংলাদেশের সন্তানরা সারা বিশ্বের মূখ উজ্জল করেছে ঠিক সেই মুহুর্তে এই হত্যাকান্ড। যখন বাংলাদেশে ডেভেলাপমেন্ট এর ক্ষেত্রে প্রথম মেট্রো রেলের উদ্ভোধন করা হল, মেট্রোরেলের যে সমস্ত কারিগরি সহায়তার জন্য জাপান থেকে এক্সপার্টিজ এসেছিল সেই জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হল।
১ আগষ্ট সোমবার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং ইউনিট আয়োজনে জঙ্গিবাদ,সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ্ জালাল সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন এর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রসাশক মোঃ কামরুল হাসান, জেলা পরিষদ প্রশাসক ও মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আজিজুর রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ ফিরোজ, পৌরসভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য হোসনে আরা ওয়াহিদ, জেলা মজিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী সৈয়দা জহুরা আলাউদ্দিন, মৌলভীবাজার চেম্বার অ্যান্ড কর্মাসের সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সম্পাদক এস এম উমেদ আলী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান, বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম সুন্দর।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিহির কান্তি দে, শিক্ষক রাশেদা আক্তার, মাওলানা সামছুল ইসলাম, মাওলানা শামিম আহমদসহ আরো অনেকে। সভায় জেলা বিভিন্ন উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, প্রেসক্লাব নেতৃবন্দসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সহ¯্রাধিক গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ডিআইজি আরো বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এদেশে ছিল না। এদেশে মুক্তিযোদ্ধা বিনা অস্ত্রে এদেশ স্বাধীন করে ছিল। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চে প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার প্রথম সূচনা করে ছিল। সুতরাং আমরা সেই উত্তরসূরীদের একজন। আজকে বক্তব্য রাখতে হচ্ছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে,সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন আমাদের বাংলাদেশে যখন অপরাধ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে, অপরাধ পরিস্থিতি একেবারে বিগত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ভাল অবস্থানে ছিল ঠিক সেই মুহুর্তে এই হত্যাকান্ড গুলি। পুরোহিত হত্যাকান্ড, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ধর্মযাজককে হত্যাকান্ড জাপানি নাগরিকদের এ হত্যাকান্ডের সাথে মিল ছিল। কারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তা এদেশের মানুষ ভাল জানেন। এখানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে আমরা মনে করি দেশি-বিদেশী চক্রান্ত এখানে জড়িত। এদের মূল উৎপাটন করার দায়িত্ব হল আমাদের। এই দায়িত্ব বাংলাদেশ পুলিশের বা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রীর একার পক্ষে সম্ভব নয়। সম্ভব হবে যদি আজকে এই কমিউনিটি সবাইকে আমরা জড়িত না করি। যার কারণে আজকের এই সমাবেশ।
আমরা বলতে চাচ্ছি-গুটি কতেক বিপদগামী তরুণ যারা ইসলামের নামে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশে সে ধনীর দুলাল হোক আর সে মাদ্রাসার ছাত্র হোক কাউকে কিন্তু আর কোন ভাবে ছাড় দেয়া হবে না। আমি শুধু এটুকু বলি সিলেট বিভাগে যদি জঙ্গিবাদের কোন ঘটনা ঘটে তাহলে কাউকে কিন্তু জীবিত অবস্থায় ফেরত দেয়া হবে না। আমার পুলিশ বাহিনীর সদস্যর গায়ে যদি একটি হাত পড়ে, একটি বোমা পড়ে,একটি গ্রেনেড হামলা হয় দায়িত্ব হিসাবে আমি ডিআইজি বলতে চাচ্ছি ওই জঙ্গি বাংলাদেশে কোনদিন আর বাবা-মার কাছে ফেরত যাবে না, যেতে দেয়া হবে না। আমরা বলতে চাচ্ছি একাত্তরে আমাদের পুলিশের একটা ভূমিকা ছিল এদেশে মানুষ গুলশান ট্র্যাজেডি বা শোলাকিয়া ট্র্যাজেডির পর যে থেমে যাবে এদেশের মানুষ কিন্তু এমন নয়। আমি বিশ্বাস করি যে দেশে ৬৯ হয়, যে দেশে ৫২ সাল আছে, যে দেশে ৬৬ আছে, যে দেশে ৭১ সাল আছে সে দেশে জঙ্গিদের স্থান হবে না।
মন্তব্য করুন