সেই লাতুর ট্রেন চালুর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লো!
বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেল সেকশন দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা সেই লাতুর ট্রেন চালুর পুনর্বাসন প্রকল্পের মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় ঋণে ছয় বছর আগে এ রেলপথ চালুর উদ্যোগ নেয় সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পটির বিপরীতে এক টাকাও ব্যয় হয়নি। ৬৭৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আবারও দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সুত্রে জানা যায়, শুধু এ প্রকল্প নয়, ভারতের প্রথম ঋণের আওতায় ২০১০ সালে নেওয়া ১৪টি প্রকল্পের মধ্যে ৭ প্রকল্পে স্থবিরতা বিরাজ করছে। মোট ৮৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের মধ্যে ছাড় হয়েছে মাত্র সাড়ে ২৮ কোটি ডলার। এ হিসাবে দুই-তৃতীয়াংশ অর্থ এখনও ছাড় হয়নি। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রত্যেকটি প্রকল্প পর্যালোচনার জন্য দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে ২২ জুন বুধবার।এ বৈঠকে দ্বিতীয় এলওসির ২০০ কোটি ডলারের প্রকল্পের অবস্থাও পর্যালোচনা করা হবে। এ প্রকল্প নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-ভারতের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। এছাড়াও দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ও হাইকমিশন এবং প্রকল্পের পরিচালকদের মধ্যেও বৈঠক হয়েছে। বন্ধ থাকা এ রেলপথের যোগাযোগ পুনঃস্থাপন নিয়ে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ (সাবেক লাতুর ট্রেন) চালুর বিষয় নিয়ে গত বছরের ২৯ ও ৩০ নবেম্ভর ‘গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ’-এর কনফারেন্স রুমে মৌলভীবাজারে ভারত-বাংলাদেশের জেলা প্রশাসকের মধ্যে আলোচনা হয়। ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আসাম রাজ্যের কাচাড় জেলার ডেপুটি কমিশনার ম্যাজিস্ট্রেট (ডিএম) জে বিশ্বাস। আর ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ মে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠকে রেলপথটি পুনরায় চালুর জন্য ৬৭৮ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়। ওই বছর ৭ জুন বাংলদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমনন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ সংস্কার কাজের উদ্ভোধন করেন। প্রসঙ্গত, চা, রাবার, আগর বাগান ও হাওর অধ্যুষিত বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত দাবি যাতে সরকার পূরণ করে। উন্নয়ন প্রকল্পে যাতে কোন অনিয়ম না হয় সে ব্যাপারে দাবি রেখেছিল ওই অঞ্চলের লাখো লাখো বাসিন্দারা। কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত ৪২ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইনে চলাচলকারী ট্রেনের নাম ছিল লাতুর ট্রেন।
মন্তব্য করুন