সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন এক অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী : কবি মোহাম্মদ আল্লারাখা
সালেহ আহমদ (স‘লিপক)॥ কলকাতার বিশিষ্ট লেখক গীতিকার ও কবি মোহাম্মদ আল্লারাখা বলেন, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রবন্ধ নিবন্ধ গল্প কাহিনী উপন্যাস রচনায় ড. সৈয়দ মুজতবা আলী অসাধারণ পাণ্ডিত্যের পরিচয় দিয়ে গেছেন। তাই তাঁকে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবো যুগে যুগে।
বৃহস্পতিবার ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রসসাহিত্যের মহাপুরুষ সৈয়দ মুজতবা আলীর ১১৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের ভার্চ্যুয়াল এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
পোয়েটস ক্লাবের চেয়ারম্যান কবি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন কলকাতা পোয়েটস ক্লাবের সভাপতি কবি মোহাম্মদ আল্লারাখা। তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী প্রসঙ্গে উপরোল্লিখিত কথাগুলো বলেন।
আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন, বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাবের পরিচালক কবি সি আর চৌধুরী, ঢাকা মহানগর সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি মুজিবুর রহমান বকুল, চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক কবি উত্তম দেবনাথ, নরসিংদী জেলা সভাপতি কবি মুর্শিদা ভূঞা মীরা, মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি কবি সালেহ আহমদ (স’লিপক), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সভাপতি কবি সৈয়দা শিরিন আক্তার, ঢাকা জেলা সাংস্কৃতিক সম্পাদক কন্ঠশিল্পী জেসমিন হোসেইন, নির্বাহী সদস্য ইফফাত রূপা জামান, চট্টগ্রাম জেলা মহিলা সম্পাদক কবি আফসানা আলম, সিলেটের বালাগঞ্জ শীতলপাটি সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহিদ, মানিকগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক কবি রওশন আরা রুশো, ঢাকা মহানগর সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি সৈয়দ পাভেল মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে কবি নজরুলের গজল গীত পরিবেশন করেন, বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব ঢাকা মহানগর সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি মুজিবুর রহমান বকুল ও ঢাকা জেলা কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী জেসমিন হোসেইন।
আলোচকরা বলেন, সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রম্যরচয়িতা ও জীবনবোধের নানামুখি অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ একজন সাহিত্যিক।
বহুভাষাবিদ এই পন্ডিত বাংলা সাহিত্যে বিবিধ ভাষার শ্লোক ও রূপক ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য দান করেছেন।
সত্যপীর, ওমর খৈয়ম, টেকচাঁদ, প্রিয়দর্শী প্রভৃতি ছদ্মনামে লিখতেন সৈয়দ মুজতবা আলী। তিনি ভ্রমণ কাহিনী রচনার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
বাংলা সাহিত্যে বিশিষ্ট ‘রম্য’ লেখক হিসেবে সুপরিচিত তিনি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পর তিনিই বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে বেশি আরবি ও ফারসি শব্দ ব্যবহার করেছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী বাংলা ছাড়াও সংস্কৃতি, ইংরেজি, ফার্সি, হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মানি, উর্দু, ইতালিয়ান প্রভৃতি ভাষাতে কথাবলা ও রচনায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। তাঁর রচিত ভ্রমণ কাহিনী গ্রন্থ ‘দেশে বিদেশে’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম স্বার্থক ভ্রমণ কাহিনী হিসেবে গণ্য।
সরস, মার্জিত ও বুদ্ধিদীপ্ত সাহিত্য ধারার প্রবর্তক সৈয়দ মুজতবা আলীর বিশেষ উক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য (১) জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়ে মহত্তর, (২) রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালোচোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে, কিন্তু বই খানা অনন্ত যৌবনা.. ও (৩) বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না প্রভৃতি।
বাংলাদেশ পোয়েটস ক্লাব মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি কবি সালেহ আহমদ (স’লিপক) আলোচনার একপর্যায়ে বহু সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর প্রয়ান দিবসে তাঁকে স্মরণ করলে, পর্যায়ক্রমে আলোচকরা সৈয়দ মহসীন আলীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ ও গভীর শোক প্রকাশ করেন।
মন্তব্য করুন