স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ৫০টি পরিবার এখন পর্যন্ত পাননি সরকারি ত্রাণ
হোসাইন আহমদ॥ আমাদের ছবি তুলার কোন প্রয়োজন নেই। ভাগ্যে যা আছে তাই ঘটবে। যতসামান্য খাবার শেষ হয়ে গেলে না খেয়ে মারা যাব। আজ পর্যন্ত সরকারি কোন ত্রাণ পাইনি। পানি এবং সাদা ভাত খেয়ে রোজা রাখছি।
দুপুরে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও গ্রামে চৌধুরী আছিয়া রহমান একাডেমীতে গেলে স্কুলে আশ্রয় নেয়া বন্যা কবলিত ৫০টি পরিবারের মানুষ এ প্রতিবেদককে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপরের কথাগুলো বলেন।
ঘর-বাড়ি ভাঙা ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষ আরও বলেন, অনেক টিভি চ্যানেল এসে আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং অনেক সাংবাদিক আমাদের ছবি তুলেছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারী কর্মকর্তা আমাদরে দেখতে আসেননি। স্থানীয় প্রবাসীদের সহযোগীতায় বেঁচে আছি। প্রতিবেদকের কাছে এমন কথা বলে দুঃখে কেঁদে ফেললেন আছিয়া রহমান একাডেমীতে আশ্রয় নেয়া বন্যা কবলিত ৫০টি পরিবারের লোক।
সরেজমিন রাজনগর উপজেলার কোনাগাঁও বাজারে গেলে দেখা যায়, বাজারের পাশে আছিয়া রহমান একাডেমী’র টিন সেডের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস র”মে কোনাগাঁও গ্রামের ৫০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। স্কুলের বারান্দায় বেঁধে রাখা হয়েছে কয়েকটি গর”। বারান্দায় ভ্রাম্যমান চুলা বসিয়ে পাক করা হচ্ছে। এসময় মতিন মিয়া, ছযাইদ মিয়া, আব্দুর রজ্জাক, মতাইর মিয়া, মাসুদ মিয়া, ফাহিম মিয়া ও কয়েছ মিয়ার সাথে কথা হলে তারা বলেন, ৬দিন ধরে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। মনুনদীর বাধ ভেঁঙ্গে আমাদের ঘর বাড়ি চূর্ণবিচুর্ণ করে দিয়েছে। এখন আবার নতুন করে ঘর বানাতে হবে। কিন্তু আমাদের হাতে কোন টাকা নেই। ঘর মেরামত করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। খেয়ে না খেয়ে মানববেতর জীবন যাপন করছি। সেহরীর সময় সাদা ভাত ও পানি খেয়ে রোজা রাখছি এবং ইফতারের সময় এলাকার মাওলানা জুনেদ মিয়া আমাদেরকে খিচুড়ি দিয়ে ইফতার করান। এলাকার প্রবাসীরা বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদেরকে সহযোগীতা করছে। কিন্তু চেয়ারম্যান ও মেম্বারের পক্ষ থেকে আমাদেরকে কোন সহযোগীতা করা হয়নি। গতদিন ইউপি সদস্য পাবেল মিয়া ও মহিলা ইউপি সদস্য র”পিয়া বেগম ২৫ কেজির দুই বস্তা চিড়া নিয়ে আসলে তাদরে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে মহিলা সদস্য র”পিয়া বেগমকে নিয়ে যায়। কিন্তু আমাদেরকে কোন সহযোগীতা করা হয়নি।
এ ৫০টি পরিবার ছাড়াও আর ৪০/৫০ পরিবার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকায় তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের সকলের দাবি সরকারি ভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের পূনর্বাসন এবং প্রয়োজনীয় খাদ্যের ব্যবস্থা করে দেয়া।
মন্তব্য করুন