স্থাপনা বেচা-কেনাকে কেন্দ্র করে রাজনগরে মধ্যরাত ধরে সংঘর্ষ কাজল মালাকারসহ আহত ১৫

April 4, 2023,

রাজনগর প্রতিনিধি॥ রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজারে বাজারের স্থাপনা কেনা-বেচা নিয়ে দিনের বেলা আহতের ঘটনা ও দোকান তালাবদ্ধ করার ঘটনায় পরবর্তীতে মধ্যরাত পর্যন্ত সংঘর্ষ ও ইট-পাটকেলের ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায়  কানু মালাকার, বিরেন্দ্র মালাকার, নিলমনি দেবসহ উভয় পক্ষের আরো প্রায় ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন। পবিত্র মাহে রমযানে এই ঘটনাটি ঘটায় উপজেলার সবচেয়ে জনবহুল মুন্সিবাজারে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য ও ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারের পল্লী চিকিৎসক ও পাশের খলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কাজল মালাকার একই এলাকার নন্দন ঘোষের কাছে অর্ধ্ব কোটি টাকায় দুতলা বিশিষ্ট একটি স্থাপনা বিক্রি করেন। কিন্তু রেজিষ্ট্রি কার্যালয়ে জমিসহ স্থাপনার দাম ধরেন ২১ লাখ টাকা। রেজিস্টিকালে কাজল মালাকারকে দেয়া হয় নগদ ১০ লাখ টাকা। সিকিউরিটি বাবৎ আরো ১১ লাখ টাকা কর্তনসহ তার হাতে আসে সর্বমোট মোট ২১ লাখ টাকা।

কিন্তু রেজিষ্ট্রির পর কাল-বিলম্ব করে নন্দন ঘোষ কাজল মালাকারের টাকা দিতে গরিমসি করেন। এ নিয়ে শুরু হয় উত্তেজনা। গেল সোমবার হঠাৎ মুন্সিবাজার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাহেল মিয়ার সাথে কাজল মালাকারের দেখা করার একটি নোটিশ আসে। কাজল মালাকারের বিরোদ্ধে নন্দন ঘোষের একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ নোটিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে কাজল মালাকার নোটিশ রিসিভ করেননি। এসময় হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে।

মঙ্গবার সন্ধ্যায় আহত কাজল মালাকারের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, সোমবার দুপুর আড়াইটায় স্থানীয় চেয়ারম্যান রাহেল মিয়ার কাছে হাজির হতে একটি নোটিশ পাই। এটি রিসিভ না করায় চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে মুঠোফোনে ভয়-ভীতি দেখান। তাৎক্ষনিক তিনি নন্দন ঘোষ ও আরো দলবলসহ আমার চেম্বারস্থ সুক্রিতি ফার্মেসীতে এসে প্রথমে তিনি আমার মুখে কিল-ঘুষি মারেন।

পরবর্তীতে নন্দন ঘোষ ও তার দল-বলেরা লোহার রড দিয়ে আমার হাত ও মুখে এলোপাতুরি আঘাত করে চলে যান। তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা এসে আমাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহত কাজল বলেন, ওই ঘটনা  ও আমার দোকান তালাবদ্ধ করাকে কেন্দ্র করে ফের রাতে মুন্সিবাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে মধ্য রাত পর্যন্ত।

এ ঘটনায় সোমবার রাতেই ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও নন্দন ঘোষের বিরোদ্ধে রাজনগর থানায় জিডি করেছি। তবে ঘটনার অন্যান্য বিষয় জানতে অপর পক্ষের নন্দন ঘোষের মুঠোফোনে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে একাধিকবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান রাহেল মিয়ার সাথে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলাপচারিতা হলে তিনি জানান, “উভয় পক্ষ দোকান কেনা বেচা নিয়ে উল্টো জামেলা আমার উপর ফেলে দিয়েছে”।

তনি বলেন, সোমবার আমার গ্রাম পুলিশের সাথে কাজল মালাকাররা হাতাহাতি করেছে। আমি সরেজমিনে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে পাঠিয়েছি। তিনি বলেন, তৃতীয় একটি পক্ষ আমাকে অযথা ফাসাঁনোর চেষ্ঠা করছে। রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষন রায় মঙ্গলবার রাতে এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কাজল মালাকারের দোকানে রাতে তালাবদ্ধ করায় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ও উত্তেজনার ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, নন্দন ঘোষের একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে হাজির হতে একটি নোটিশ পান কাজল মালাকার। নোটিশকে কেন্দ্র হতাহতের ঘটনা ঘটে। কাজল মালাকার চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ আপোস-মিমাংশায় বসতে রাজি হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com