আন্তঃ মন্ত্রণালয় বৈঠক লাউয়াছড়ায় ২৫ হাজার গাছ না কাটার সিদ্ধান্ত

August 21, 2016,

সাইফুল ইসলাম॥ আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়ায় জাতীয় উদ্যান এলাকায় রেললাইনের দু’পাশের ২৫ হাজার গাছ না কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ হলেই গাছ কাটা হবে।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও মিহির কুমার দো এতথ্য নিশ্চিত করেন।
১৮ আগষ্ট বৃহস্পতিবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গেছে, সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হক, রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আরমান হোসেন প্রমুখ।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের গাছ গণহারে কাটা যাবে না। রেল বিভাগের চিঠিতে দুর্ঘটনা এড়াতে লাইনের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে রেললাইনের দুই পাশের ৫০ ফুট করে গাছ কাটার যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।
বলা হয়, রেললাইনের পাশে কোনো গাছ ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা জরিপ করে এসব গাছ অপসারণ করবেন। এ জন্য রেলওয়ে ও বন বিভাগের প্রতিনিধি এবং কমলগঞ্জের ইউএনও কিংবা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তিন সদস্য করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ ৯ এপ্রিল রেলওয়ের পক্ষ থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর রেললাইনের দুই পাশের গাছ কাটতে বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি অনুযায়ী, ছোটবড় ২৫ হাজারের বেশি গাছ কাটা পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, যা জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি।
এরপর থেকে পরিবেশবাদী সংগঠন ও পরিবেশকর্মীরা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান রক্ষায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে।
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার বলেন,তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এমন কোনো গাছ অপসারণ না করলেই চলে না, সে বিষয়ে কমিটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।
রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আরমান হোসেন বলেন,আমরা আগেও ২৫ হাজার গাছ কাটার কথা বলি নাই।জাতীয় উদ্যানের রেললাইনের দু’পাশে রেলওয়ের ৫০ ফুট জমিতে ঝুঁকিপূণ গাছ রয়েছে। যেহেতু ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করে,সেহেতু ট্রেন যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বাথে কিছু ঝুঁকিপূণ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন,আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঝুঁকি গাছ কাটার। এবং গাছ ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সরজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুঁকিপূণ গাছ চিহৃিত করে তার পর এসব গাছ কাটা হবে বলে তিনি জানান।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান বলেন, রেললাইনে গাছ পড়ার কারণে রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী গাছ কাটার জন্য চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু সংরক্ষিত বনে চাইলেই গাছ কাটা যাবে না। এমনকি লাগানোও যাবে না। রেললাইন চালু থাকবে, গাছও থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com