স্মৃতির মনিকোটায় ‘আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী’ শীরনামে ইউ কে বিডি টিভির আন্তর্জাতিক ভার্চ্যুয়াল স্মৃতিচারণ সভা অনুষ্ঠিত
জেসমিন মনসুর॥ ইউকে বিডি টিভির প্রধাণ উপদেষ্ঠা, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’ একুশের অমর গানের রচয়িতা, বরেণ্য সাংবাদিক, লেখক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবি,ও গীতিকার, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের প্রধান উপদেষ্টা প্রয়াত আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী স্মরণে ইউ কে বিডি টিভির স্মৃতিচারণ মুলক অনুষ্টান স্মৃতির মনিকোটায় কিংবদন্তি সাংবাদিক””আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী” শীরনামে গতকাল এক আন্তর্জাতিক ভার্চ্যুয়াল স্মৃতিচারণ সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ভার্চ্যুয়াল পোগ্রামে দোয়া পরিচালনা করেন লন্ডনের ব্রিকলেন মসজিদের খতিব বিশিষ্ট মাওলানা নজরুল ইসলাম ও শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন আনজুমানে আল ইসলাহ ওয়েলস ডিভিশন এর ট্রেজারার ক্বারী শাহ মোহাম্মদ তসলিম, ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান ও জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকের সভাপতি কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর সভাপতিত্বে এবং ইউকে বিডি টিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাংবাদিক ইঞ্জিনিয়ার খায়রুল আলম লিংকন এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ভার্চ্যুয়াল স্মৃতিচারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের মানণীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশিষ্ট সমাজসেবক ড, এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, বিশেষ অতিথি হিসাবে বৃটেনের বাংলাদেশের হাইকমিশনার হ্যার এক্সেলেন্সি সাঈদা মুনা তাসনিম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউ কে বিডি টিভির উপদেষ্ঠা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ, বৃটেনের বাংলাদেশের হাইকমিশনের প্রেস মিনিষ্টার এম আসিকুন্নবী চৌধুরী,
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাকালীন সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক এম এ সালাম, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. দেওয়ান সৈয়দ আব্দুল লতিফ,ও দৈনিক কালের কন্ঠের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি জুয়েল রাজ, প্রয়াত আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর লেখা বিভিন্ন কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন ইউকে বিডি টিভির ভাইস চেয়ারম্যান শেখ নুরুল ইসলাম, আবৃত্তি শিল্পী মায়াবী হোসাইন নুপুর ও ফয়েজ নূর সহ অন্যান্যরা।
এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন ইউকে বিডি টিভির ফাইন্যান্স ডিরেক্টর শাহ শাফি কাদির, কালচারাল পোগ্রাম ডিরেক্টর হেলেন ইসলাম, মার্কেটিং ডিরেক্টর এম শাহজাহান মিয়া, টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শাহ নেওয়াজ চৌধুরী সুমন সহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিশিষ্ট সমাজসেবক ড, এ কে আব্দুল মোমেন এমপি বলেন তাঁর সাথে আমার অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। আব্দুল গাফফার চৌধুরী হচ্ছেন একটি ইন্সটিটিউশন। তিনি ছিলেন জাতির বিবেক। ওনার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল, তিনি যা সত্য বলে মনে করতেন তা অকপটে প্রকাশ করতেন। আমার সাথে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত মধুর। আমরা যখন ২০০১ সালে কিংবা তারও আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে/আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতাম, তখন অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলতে বসেছিলেন। ১৯৭৮ সালে ১৫ই আগস্ট উপলক্ষে আমি একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করি এবং সেখানেই তার সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়। তারপর থেকে যতবার আমি ইংল্যান্ডে গিয়েছি প্রায় প্রতিবারই তার সাথে সাক্ষাত করতাম। গাফফার ভাইয়ের সাথে কথা বলে আমি অনেক কিছু শিখেছি, অনেক কিছু জেনেছি। গাফফার ভাই ছিলেন প্রকৃত অর্থেই একজন প্রগতিশীল ও প্রজ্ঞাবান। তিনি ছিলেন অসাধারণ লেখক।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বৃটেনের বাংলাদেশের হাইকমিশনার হ্যার এক্সেলেন্সি সাঈদা মুনা তাসনিম, বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ ও জাতি হারালো তার এক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি হারালো তাদের বাতিঘর ও অভিভাবককে। বাংলাদেশের বরেণ্য সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিষ্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী মহান একুশের অমর সংগীত, তার অসাধারণ লেখা ও কমের্র মধ্য দিয়ে আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যও অশেষ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ বলেন সংকট সমস্যায় পরামর্শ ও আশার বাণী শোনার জায়গাটি শেষ হয়ে গেলো। সাম্প্রদায়িক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শক্তি যখন মাথাচাড়া দেয়, তখন যে ব্যক্তিটি লেখা দিয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণের মাধ্যমে হুঙ্কার দিতেন তিনি ছিলেন গাফ্ফার চৌধুরী, আমাদের ভরসা ও নির্ভরতার জায়গা।
শোকাহত ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অনুষ্ঠানের সমাপনি বক্তব্যে ভার্চুয়াল এ স্মরণ সভায় অংশগ্রহণকারী প্রধান ও বিশেষ অতিথিদের কৃতজ্ঞতা এবং সদ্যপ্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা মোহাম্মদ মকিস মনসুর বলেন, তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভা ও বণার্ঢ্য জীবনের অধিকারী সৃষ্টিশীল একজন মানুষ।. মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন। বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রাম, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা আন্দোলন,গণতন্ত্রের স্বপক্ষে ও ১/১১-এর প্রয়াত সাংবাদিক-কলামিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখনি বাঙালি জাতিকে শক্তি ও সাহস যুগিয়েছে।
তাঁর সাহসী ও ক্ষুরধার লেখনী আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। ইউকে বিডি টিভি হারালো তাদের বাতিঘর, আত্মার আত্মীয় ও একজন আপন অভিভাবককে। আর দেশ ও জাতি হারালো তার এক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। তাঁর মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে তিনি অভিমত ব্যাক্ত করেছেন।
সভায় প্রয়াত আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর স্মৃতি ধরে রাখার লক্ষ্যে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী ফাউন্ডেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রস্তাবে সকল বক্তারা সহমত পোষণ সহ এই মহতি উদ্দ্যোগে সহযোগিতা করার প্রতিস্রতি ব্যাক্ত করেছেন।
মন্তব্য করুন