হাকালুকিতে দেখা মিলল বিপন্ন ভূতি হাঁস ও বিরল প্রজাতির বৈকাল তিলিহাঁস
আব্দুর রব : এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ও দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি হাকালুকি হাওরে এবার দেখা মিলেছে বিশ্বব্যাপি বিপন্ন বেয়ারের ভূতি হাঁস ও বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির বৈকাল তিলিহাঁস। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিনিধি দল ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি দুইদিন ব্যাপি হাকালুকি হাওরে পরিযায়ী জলচর পাখি জরিপ সম্পন্ন করেছে। যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)-এর আর্থিক সহায়তায় কেয়ার বাংলাদেশের নেতৃত্বে পরিচালিত এবং সিএনআরএস কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন নবপল্লব প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে পাখি জরিপ করে। এতে সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর।
পাখি জরিপে অংশ নেন পাখি বিশেষজ্ঞ ওমর শাহাদাত, ফা-তু-জো খালেক মিলা, সুলতান আহমেদ, মো. সাব্বির আহাম্মেদ, উজ্জ্বল দাস, আবু মুসা রাজু, মাহফুজ হিমেল ও খোরশেদ আলম।
বার্ড ক্লাবের প্রতিনিধি দল হাকালুকি হাওরের ৪৫টি বিলে সর্বমোট ৩৫,২৬৮ টি পাখি পর্যবেক্ষণ করেছে। তন্মধ্যে পিংলা বিলে বিশ্বব্যাপী বিপন্ন বেয়ারের দুইটি ভূতি হাঁস, নাগুয়া-লরিবাই বিলে বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির একটি বৈকাল তিলিহাঁস, সংকটাপন্ন তিনটি ফুলুরি হাঁস, সংকটাপন্ন মরচে রঙের ১৫৮৮টি ভূতিহাঁস, সংকটাপন্ন জাতের ছয়টি উত্তুরে টিটি, সংকটাপন্ন কালো মাথা ৩৯৩টি কাস্তেঢ়রা এবং বিশ্বব্যাপী বিপন্ন জাতের ৯০৯টি পাতি ভূতিহাঁস গণনা করা গেছে। এছাড়াও পিয়াং হাঁস ৫৫৫২টি, উত্তুরে ল্যাঞ্জ্যা হাঁস ৪২৭২টি, এশিয়া শামুকখোল ৪২২৮ টি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
হাকালুকি হাওরের প্রায় প্রতিটি মৎস্য জলাশয়ে মৎস্য আহরণ চলতে থাকায় এবং বেশির ভাগ বিল পানি শূন্য হয়ে পড়ায় বিগত বছরের তুলনায় এবার পাখির সংখ্যা তুলনামূলক কম সংখ্যক পাখি পরিলক্ষিত হয়েছে।
প্রতিনিধি দলের প্রধান ওমর শাহাদাত জানান, ব্যাপকভাবে ধান চাষের আবাদ ও বিলে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে ও বিষটোপ পাখি শিকার, স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। এসময় কয়েকটি বিলে হাতেনাতে অবৈধ জাল ধরে তা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি পরিত্যক্ত মাছ ধরার ফাঁদ সমগ্র হাওরে ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান হয়। পরিযায়ি পাখির অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করতে পারলে আগামিতে বিশ্বের বিভিন্ন ঠান্ডা প্রধান দেশ থেকে আরো বেশি অতিথি পাখির সমাগম আশা করা যায়।
মন্তব্য করুন