হাকালুকি হাওরে চুন ছিটিয়ে পানি দুষণমুক্ত করার চেষ্টা মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় জেলে পরিবারে হতাশা
আবদুর রব॥ দেশের সর্ববৃহৎ হাওর ও মিঠাপানির মৎস্যভান্ডার খ্যাত হাকালুকির পানি দুষণমুক্ত ও মাছের মড়ক রোধে প্রশাসন চুন ছিটানো শুরু করেছে। বড়লেখা ইউএনও এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন ও উপজেলা মৎস্য অফিসার আবু ইউসুফ সোমবার ও মঙ্গলবার হাওরে ৫ টন চুন ছিটিয়েছেন। মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করায় হাওর পারের ২২ হাজার জেলে জীবন জীবিকা নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন বুধবার হাওরপারের লোকজনের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি অকাল বন্যায় হাকালুকি হাওরের ২৫ হাজার হেক্টরের কাচা-পাকা ধান তলিয়ে যায়। দীর্ঘদিন এসব ধান পানিতে নিমজ্জিত থাকায় তা পচে পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমান বাড়িয়ে দেয়ায় ব্যাপক হারে মারা যায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত দুইদিনে হাওরে আইড়, বোয়াল, রুই, কাতলা, কালি বাউস, সরপুঁটি, পাবদা, ঘুলশা, টেংরা, পুঁটি, বাইমসহ নানা জাতের প্রায় ২০ টন মাছ মারা গেছে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। এভাবে হাওরে মাছ মরতে থাকলে মাছের আকাল দেখা দিতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
মাত্রাতিরিক্ত অ্যামোনিয়া মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অ্যামোনিয়া গ্যাসের প্রভাবে মারা যাওয়া পচা মাছ আর পচা ধানের দুর্গন্ধ ঝড়ো হাওয়ায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। দুষিত পানি আর পচা মাছে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় সৃষ্টির আশংকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোমবার এলাকায় মাইকিং করে জাল দিয়ে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আর এতে মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল হাওরপারের ২২ হাজার জেলে বেকায় পড়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. আবু ইউসুফ জানান, হাকালুকি হাওরের পানি দুষণমুক্ত ও মাছের মড়ক রোধে সোমবার থেকে চুন ছিটানোর শুরু করেছেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাওরে ৫ টন চুন ছিটানো হয়েছে।
ইউএনও এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বিষক্রিয়ায় মারা যাওয়া ও অসুস্থ মাছ খেলে বিভিন্ন কঠিন রোগের আশংকা রয়েছে। এজন্য আপাতত মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এব্যাপারে হাওরপারের জেলেসহ সাধারণ মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্যে বুধবার হাওরপারের তালিমপুর ইউনিয়নের কানুনগো বাজারে মতবিনিময় সভা ডেকেছেন। এ দুর্যোগ মোকাবেলায় তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্তব্য করুন