হাকালুকি হাওরে পানির নীচে বোরো ধানের বীজতলা-দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা
কুলাউড়া অফিস॥ এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর তীরে এখনও পানির নীচে বোরো ধানের বীজতলা। দীর্ঘ ৭ মাসেও বন্যার পানি না নামায় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। এখনও বীজতলা প্রস্তুত করতে পারেননি কৃষকরা।
সরেজমিন হাকালুকি হাওর তীরে গেলে দেখা যায়, হাকালুকি হাওরের পানি কমছে ধীর গতিতে। অগ্রহায়ন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বোরো বীজতলা প্রস্তুত না করতে পারলে এবার বোরো আবাদ করা কঠিন হবে। কিনে বোরা চারা (স্থানীয় ভাষায় হালি) এনে বোরো জমিতে রোপন করতে হবে বলে জানান হাওর তীরের ভুকশিমইল ইউনিয়নের কৃষক রফিক মিয়া, আব্দুল হাসিম, জবেদ মিয়া। হাকালুকি হাওরের প্রধান সম্পদ মাছ। এরপর ধান। হাওর তীরের কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ এই ৫টি উপজেলায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়ে থাকে। এবার যে কি হবে তা বলা মুশকিল? কৃষকরা হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এবার বন্যার স্থায়িত্ব ৭ মাস অতিক্রম করেছে। স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘতম বন্যা ছিলো। হাওর তীরে এবার রবিশষ্য নেই বললেই চলে। ফলে এই এলাকায় এবার শীতকালিন সবজি চড়া মুল্যে কিনতে হবে মানুষকে। হাওর তীরের ভুকশিমইল ইউনিয়নে আলু ও জুড়ী উপজেলার বেলাগাঁও গ্রামে সবজি এলাকার মানুষের চাহিদা মেটায়। কিন্তু এবার এখনও সবজি আবাদের জমি থেকে এখনও বন্যার পানি নামেনি। ফলে সবজি চাষের কথা বাদ দিয়েছেন চাষীরা। হাওর তীরের মানুষ বছরে এই একবারই ধান রোপন করে থাকেন। এখানে সারা বছরে এক ক্ষেত। সেটি হচ্ছে বোরো। আর যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে কৃষকরা বোরো চাষ করতে না পারেন তাহলে হাওর তীরে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
ইতোমধ্যে হাওর তীরের অনেক কৃষক অন্যত্র উঁচু এলাকায় বোরো বীজ বপন করছেন। এতে কৃষকের খরচ দ্বিগুন পড়বে বলে জানান কৃষক আব্দুল মালিক, ছমিন আলী ও ইরা মিয়া। তারা জানান, পাহাড়ী ঢলের আশঙ্কায় হাকালুকিতে আগাম বোরো আবাদ করতে হয়। অগ্রহায়ন মাসের প্রথম সপ্তাহে বোরো ধানের চারা এক ইঞ্চি পরিমান হওয়ার কথা। অথচ এখনও বীজতলাই প্রস্তুত হয়নি।
দীর্ঘ মেয়াদি বন্যার কারণে শীতকালিন সবজি চাষ হয়নি। তাছাড়া বোরো ধানের বীজতলা প্রস্তুত করতে পারছে না কৃষক।
মন্তব্য করুন