হাকালুকি হাওরে বাড়ছে বন্যার পানি ॥ চরম জনদুর্ভোগ
আবদুর রব॥ ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান ফের তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লাখ লাখ মানুষ। জরুরি প্রয়োজনে লোকজন ট্রাক, ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার আর নৌকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলাচল করছেন। তবে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ এসব এলাকা অতিক্রম করতে প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আঞ্চলিক সড়কে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এতে সড়কের ডুবে যাওয়া অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট সড়কের হাতলিঘাট নামক স্থানে গর্তে পড়ে পণ্যবাহী একটি ট্রাক উল্টে গেছে। বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ট্রাকটি সরানো যায়নি। এর আগে গত জুলাই মাস পর্যন্ত প্রায় দেড় মাস এ সড়ক বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল।
সওজ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত জুলাই মাস পর্যন্ত বন্যায় প্রায় দেড় মাস এ আঞ্চলিক সড়কের ১০টি স্থান ডুবে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় চলাচলকারী মানুষকে। পরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সড়ক থেকে পানি নামে। এরপর সওজ (সড়ক ও জনপদ বিভাগ) ইট দিয়ে রাস্তাটি ভরাট করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তুলে।
এদিকে গত কয়েক দিন থেকে আবারও থেমে থেমে ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের কারণে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে সড়কটির ১০টি স্থানে পুনরায় বন্যার পানি উঠেছে।
মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট সরেজমিনে বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের জুড়ী উপজেলা কমপ্লেক্সের সম্মুখ, চৌমোহনী, পশ্চিম হাতলিয়ার ৪টি স্থানসহ সড়কের ১০ স্থান ২-৫ ফুট পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখা যায়। বন্যার পানি থাকায় সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক্, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলারসহ কিছু যানবাহন চলাচল করছে। পানি আর বড় বড় গর্তের মধ্যে সড়কে চলতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ে অনেক যানবাহন। এসময় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায় যাত্রীদের।
হাতলিঘাট এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ায় আগে সড়কের পানি নেমে গিয়েছিল। কিন্তু আবারও বৃষ্টি হওয়ায় আট-দশ দিন থেকে সড়কে পানি উঠেছে। এতে গাড়ি চলাচলে মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, প্রতিদিন বৃষ্টির কারণে হাকালুকি হাওরে পানি বাড়ছে। এতে করে কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের ৩ কিলোমিটার জায়গার ১০টি স্থান পানিতে ডুবে গেছে। আগের বার পানি কমায় ইট দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। এখন যেখানে গর্ত হচ্ছে ইট দেয়া হচ্ছে। পানি কমলে আবার সংস্কার করা হবে। স্থায়ীভাবে এ সড়কের ১০টি নিচু স্পট উচুঁ করার জন্য মেঘাপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে পানি না নামলে কাজ শুরু সম্ভব হচ্ছে না।
মন্তব্য করুন