হুমকিতে নদীর দু’পাড়, গোপলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে গ্রামবাসীর প্রতিবাদ
স্টাফ রিপোর্টার॥ বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। এতে চরম হুমকিতে পড়ছে নদীর দু’পাড়,কৃষিজমি ও মৎস্য খামার। ভূগতভোগি গ্রামবাসীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার,উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে নানা স্থানে ধর্না দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছেনা। এমন অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্থ নদী তীরবর্তী গ্রামবাসীদের।
জানা যায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের রাতগাঁও ও নারায়নপাশা মৌজাস্ত গোপলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। অভিযোগ উঠেছে কোনো ধরনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ইজারার দোহাই দিয়ে পরিবেশের ক্ষতিকারক বড় পাইপের ড্রেজার মেশিন দ্বারা বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নারাইনপাশা গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে ইউপি সদস্য মুহিত মিয়া ও আটঘর গ্রামের মনর মিয়ার ছেলে ইউপি সদস্য মহসিন মিয়াসহ আর অনেকেই অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলন করছেন। তাদের এমন বেপরোয়া বালু উত্তোলনে নদীর পাড়,পাশ্ববর্তী কৃষিজমি ও মৎস্য (ফিশারী) খামার মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। চরম ঝুঁকিতে থাকা নদী তীরবর্তী কৃষিজমি ও মৎস্য খামারের মালিক এবং গ্রামবাসী এভাবে বালু উত্তোলন না করার অনুরোধ জানালেও সংশ্লিষ্টরা কর্ণপাত করছেন না।
স্থানীয় বাসিন্ধারা বলছেন এভাবে অপরিকল্পিতভাবে ভালো উত্তোলন চলতে থাকলে নদীর পাড়,ব্যক্তি মালিকানাধীন কৃষিজমি ও মৎস্য খামারের পাড় ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা করছেন। চলতি মাসের ৭ অক্টোবর এলাকাবাসীর পক্ষে রাতগাঁও গ্রামের হাজী মো: আব্দুল মন্নান এর ছেলে মো: রকিব মিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে গোপলা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন জনস্বার্থে বন্ধে রাখতে আবেদন করেন। এর অনুলিপি পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মৌলভীবাজার মডেল থানা ও নাজিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানকেও দেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বালুউত্তোলন বন্ধে কার্যত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই বলে জানান আবেদনকারী ও গ্রামবাসীরা। চরম ক্ষতির আশঙ্কায় থাকা গ্রামবাসীরা বলছেন প্রশাসন দ্রুত প্রতিকার না নিলে তারা আন্দোলনে নামবেন।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন চৌধুরী বলেন আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমি অবগত নয়। এই লিখিত ওই অভিযোগটি আমার হস্তগত হয়নি। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সরজমিনে অভিযানে নামব।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. উর্মী বিনতে সালাম মুঠোফোনে বলেন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। জেলার অন্যান্য উপজেলাসহ সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের গোপলা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি জেনেছি। জেলা প্রশাসক বলেন ইতোমধ্যে জেলার প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বালু উত্তোলনের জন্য যারা ইজারা নিয়েছেন তারা যেনো শর্ত ভঙ্গ না করেন। সে বিষয়ে ইজারাদারদের ডেকে তারা ওদেরকে অবগত করবেন। ইজারার শর্তভঙ্গ হলে তা বাতিল করা হবে।
মন্তব্য করুন