হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান, কারফিউ চলাকালীন মজুরি পরিশোধ ও শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করার দাবি
স্টাফ রিপোর্টার॥ দেশের চলামান পরিস্থিতিতে এবং বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ এর ৫ ধারা মোতাবেক জরুরী ভিত্তিতে সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান; কারফিউ চলাকালীন সময়ের মজুরি পরিশোধ ও বেআইনীভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন। ২৫ জুলাই গণমাধ্যমে প্রেরিত মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তারেশ চন্দ্র দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহিন মিয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে এই দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন সম্প্রতি সরকারি চাকুরীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অস্থিতিশীলতার কারণে সরকার গত ১৮ জুলাই ২০২৪ মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করেন। চলমান কারফিউ-এর মধ্যে গত ২৪ জুলাই থেকে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫/৬ টা পর্যন্ত অর্থাৎ দিনের বেলা কারফিউ শিথিল করে হোটেল-রেঁস্তোরা, দোকানপাট, শপিংমল খোলে দেওয়া হয়। একই সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয়পত্র ‘কারফিউ পাস’ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু সারাদেশে কর্মরত প্রায় ৩০ লাখ শ্রমিক; যাদের অধিকাংশের পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়নি। মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ ২৩০৫ এর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন যাবত আমরা হোটেল-রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, সরকারের সংশ্লিষ্ট শ্রমদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কাছে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ৫ ধারা অনুযায়ী শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। দেশের চলমান পরিস্থিতি কর্মস্থলে যোগদান ও কাজ শেষে কর্মস্থল থেকে বাসাবাড়িতে ফেরার পথে শ্রমিকদের কারফিউ-এর কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে পড়ে উপযুক্ত পরিচয়পত্র দেখাতে না পারার কারণে হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্খার মধ্যে রয়েছেন। ইতোমধ্যে ঢাকা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শ্রমিকরা পরিচয়পত্র দেখাতে না পারার কারণে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। সিলেটে আবুল কালাম নামের একজন নিরাপরাধ হোটেল শ্রমিক বর্তমানে জেলে আছেন। তাই জরুরী ভিত্তিতে সকল হোটেল-রেঁস্তোরা শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানানোা হয়। পাশাপাশি কারফিউ চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে হোটেল-রেঁস্তোরা মালিকগণ উক্ত সময়ের মজুরি দিচ্ছেন না এবং কারফিউ শিথিল হলে প্রতিষ্ঠান খোলে ব্যবসা মন্দার অজুহাতে অনেক শ্রমিককে বিনা বেতনে বেআইনীভাবে ছাঁটাই করে দিচ্ছেন। এমনিতে হোটেল শ্রমিকরা যে মজুরি পান তা দিয়ে বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে ডালভাত জুটানো দায় হয়ে পড়ে। তার উপর যদি শ্রমিকদের মজুরি না দেওয়া হয় এবং বেআইনীভাবে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়-তাহলে শ্রমিকদের না খেয়ে দিনাতিপাত করতে হবে।
এমতবস্থায় দেশের চলামান পরিস্থিতিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশ শ্রমআইন-২০০৬ এর ৫ ধারা মোতাবেক জরুরী ভিত্তিতে সকল হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান; কারফিউ চলাকালীন সময়ের মজুরি পরিশোধ ও বেআইনীভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান হোাটেল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
মন্তব্য করুন