১০ই মহরম মহাপবিত্র আশুরা : ইমাম হোসেন (রাঃ) এর শাহদাত দিবস ইসলাম জিন্দাহোতাহায় হর কারবালা কি বাদ

September 19, 2018,

মুজিবুর রহমান মুজিব॥ মহাপবিত্র ইসলাম একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান। আমাদের মহান স্রষ্টা ও প্রতিপালক সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ তায়ালার বানীর আলোকে সূরা আল ইমরানে/আয়াত ১৯ মোতাবেক ইসলাম ধর্ম আল্লাহ মনোনিত একমাত্র জীবন বিধান। ইসলাম ধর্মের প্রচারক আদর্শ মানব হযরত মোঃ মোস্তফা (সাঃ) একজন আর্দশ ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট শাসক ও রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। মহানবী/মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এর অমর ও মূল্যবান বানী জীবন দর্শন ও জীবনাচরন  হাদিসে রসুল (সাঃ)। ইসলামী আইনের ২য় উৎস। মহানবীর ৬৩ বছরের মানব জীবন ইসলাম ও মুসলিম উম্মার জন্য একটি ইসলাম ধর্মীয় জীবন দর্শনের এক সম্মুজ্জাল উৎকৃষ্ট উদাহরন। মহানবীর মহাপ্রয়ানের পর ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বক্কর থেকে ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রাঃ) পর্যন্ত চার খলিফা খোলাফায়ে রাশেদিন ইসলামীক বিধি বিধান এবং মহানবী প্রদর্শিত পথ ও মত মোতাবেক ইসলামী সমাজ পরিচালনা করেছিলেন। ৬ষ্ট শতাব্দীর সেই যুগে যখন মানব জাতি আধুনিক কালের মত শিক্ষা ও জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ছিলেন না. বিশ্ব মানবের সংস্থা জাতিসংঘের ঘোষনা মোতাবেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ সংসদ, রাজনৈতিক সংগঠন ছিল না. কিন্তু ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় মানুষের ন্যায় বিচার ইচ্ছা ও আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ছিল, মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ছিল, মহানবীর বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষন মানব জাতির জন্য দিক নির্দেশনা বটে। খোলাফায়ে রাশেদিনের আমলে মজলিসই শুরা পরামর্শ দাতা পরিষদ একটি প্রভাব শালী ও শক্তিশালী সংস্থা ছিল। শুরাকে আধুনিক জামানার বোর্ড অফ এডভাইজারস ক্যাবিনেট মিনিষ্টারস এর সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। এই তুলনাটুকু হবে শুধু মাত্র নাম ও পদ পদবী ও ক্ষমতা সংক্রান্ত ব্যাপারে, নৈতিকতা, সততা, ন্যায়পরায়নতার ব্যাপারে মজলিসে শুরার সম্মানীত সদস্যগন ছিলেন সম্মানের পাত্র। তারা ছিলেন সৈভাগ্যবান ছাহাবী। হাল আমলের এডভাইজারস ক্যাবিনেট মিনিষ্ট্রার এর মধ্যে অনেকেই সততা ও সাধুতায় প্রশ্ন বিদ্ধ। ইসলামের ৪র্থ খলিফা ও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জামাতা হযরত আলীর ইন্তেকালের পর হযরত মোয়াবিয়া ইসলামীক সা¤্রাজ্যের আমীর নির্বাচিত হন। হযরত আলীর দুই পুত্র মহানবীর দৌহিত্র ইমাম হাসান এবং হযরত ইমাম হোসেন (রাঃ) এর মধ্যে ইতিপূর্বে ষড়যন্ত্রকারীরা বিষ প্রয়োগে ইমাম হাসানকে হত্যা করেন। সাহাবীদের একাংশ ইসলামের ৫ম খলিফা হিসাবে ইমাম হোসেনের পক্ষাবলম্বী হলেও ইসলামী সা¤্রাজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে হযরত মোয়াবিয়াকে আমীর নির্বাচিত করলেও মোয়াবিয়ার পর ইসলামী সা¤্রাজ্যের ৬ষ্ট খলিফা হিসাবে ইমাম হোসেনকে নিযুক্ত করা হবে বলে স্বিদ্ধান্ত হয়। ইসলামী সা¤্রাজ্যের শাসন ভার আহলে বাইত এর উপর অর্পিত হবে। কিন্তু আমির মোয়াবিয়ার ইন্তেকালের পর তার পুত্র নরপিচাশ এবং ধর্মদ্রোহী ইয়াজিদ ছাহাবীদের মতামত উপেক্ষা করে নিজেকে ইসলামী সা¤্রজ্যের আমীর বলে ঘোষনা করলে দেশব্যাপী মত পার্থক্য বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আমীর মোয়াবিয়ার শাসনামল থেকে ইসলামী সা¤্রাজ্যের রাজধানী মদিনাতুন নবী থেকে দামেসকে চলে যায়। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মক্কা, মদিনার গুরুত্ব হারাতে থাকে। মদ্যপ্য ও চরিত্রহীন ইয়াজিদ এর খিলাফত মক্কা মদিনার শুরা সদস্য তাবেহীন মোজাহিদীনগন না মেনে তারা ইমাম হোসেনকে খলিফা বলে মনে করতে থাকে।

এমতাবস্থায় কুফা থেকে ইমাম হোসেনের কাছে আহ্বান আসে। কুফাবাসী তাহার নেতৃত্ব চায়। তিনি যেন কুফা আসেন। সরল মনোভাবের মহৎ মানুষ ইমাম হোসেন সপরিবারে কতেক অনুচর সহ হিজরী সনের প্রথম মাস মহরম মাসে ইরাকের কুফা অভিমুখে রওয়ানা হন। আঠ মহরম কারবালার প্রান্তরে এসে শিবির স্থাপন করেন। মানব সভ্যতার ইতিহাসে কারবালার যুদ্ধ এক বিয়োগান্তক ঘটনা দূর্ঘটনা। কারবালার অসম যুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের জন্য ইসলামের ঝান্ডা সমুন্নত রাখার জন্য ইমাম হোসেন এজিদের বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবন মরন লড়াই করে অন্যায়ের কাছে আত্মসমর্পন করেন নাই। ইসলামী সা¤্রাজ্য ভাগবাটোয়ারা করে তথা কথিত জাতীয় ঐক্যমতে সরকার গঠন করেন নি। আত্বউৎসর্গ করেছেন, স্বপরিবারে শাহাদাত বরন করেছেন, কারবালা ময়দানে ইমাম হোসেনের পরাজয় ও শাহাদাত বরন ছিল গৌরবের ও সম্মানের। ১১ ই মহরম থেকে মুসলিম জাহান হায় হোসেন হায় হোসেন বলে সূখকে শক্তিকে পরিনত করেন। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত ১০ মহরম মহাপবিত্র আশুরায় মক্কা মদিনায় ঢাকায়, পৃথিমপাশায় উম্মতে মোহাম্মদীগন হায় হোসেন হায় হোসেন আওয়াজ উঠিয়ে দীন ইসলামের জন্য আত্মত্যাগের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সুহাদায়ে কারবালার সম্মান ও স্মরনে এবাদত বন্দেগী করেন।

১০ ই মহরম মহাপবিত্র আশুরায় সোহাদায় কারবালার বীর শাহীদানের উজ্জল সম্প্রতির সুগভীর শ্রদ্ধা ও লাখো সালাম।

(মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র এডভোকেট, হাইকোর্ট/সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব, সেকরেটারী, জেলা জামে মসজিদ, মৌলভীবাজার)

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com