২য় বিয়ের অনুমতি না দেয়ায় কমলগঞ্জে ৪ সন্তানের জননীর উপর অমানুষিক নির্যাতন

July 18, 2016,

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥ ২য় বিয়ের অনুমতি না দেয়ায় কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আধকানী গ্রামের ৪ সন্তানের জননীকে স্বামী, দেবর, ননদ ও শ্বাশুড়ী দা দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত নারী এখন কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। রোববার ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় এ ঘটনাটি ঘটলে রাতেই কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আদমপুর ইউনিয়নের পূর্ব জালালপুর গ্রামের দিনমজুর বরকত মিয়ার মেয়ে হাসনা বেগম (৩৫) প্রায় ১৬ বছর আগে একই ইউনিয়নের আধকানী গ্রামের মৃত রুশই মিয়ার ছেলে ট্রাকচালক মিজান মিয়া (৩৮)’র সাথে বিয়ে হয়। তাদের ২টি ছেলে ও ২টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। দুই বছর ধরে স্বামী ট্রাকচালক মিজান মিয়া পূর্ব জালালপুর গ্রামের অন্য একটি মেয়ের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য স্ত্রীর অনুমতি চায়। হাসনা বেগম স্বামীর অন্যায় আবদারের অনুমতি না দিলে গত দুই বছর তার উপর চলে শারীরিক নির্যাতন। একপর্যায়ে বাবার বাড়ি থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। দরিদ্র বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বামী, দেবর, ননদ ও শ্বাশুড়ী দা দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠিপেটা করে গৃহবধুকে (হাসনা বেগম) গুরুতর আহত করে। ঘটনার খবর পেয়ে গৃহবধুর বাবা বরকত মিয়া কয়েকজন গ্রামবাসীকে নিয়ে রোববার সন্ধ্যার পর স্বামীর বাড়ি থেকে মেয়েকে অবচেতনভাবে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। রোববার রাতেই গৃহবধুর বাবা বরকত মিয়া বাদী হয়ে স্বামী মিজান মিয়া (৩৮), দেবর শফিক মিয়া (৩২), সাইফুর মিয়া (২৫), শ্বাশুড়ী কাজল বিবি (৫২) ও ননদ আফিয়া বেগম (৩০) কে আসামী করে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগকারী বরকত মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার জামাতা ট্রাকচালক মিজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। সর্বশেষ আমার মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন করায় এখন বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করি। আমি সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ট্রাকচালক মিজান মিয়া ও তার পরিবার সদস্যদের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা: প্রসেন কৈরী জানান, গৃহবধুর মাথার আঘাতটি গুরুতর। সে এখন নিবিড় পর্যবেক্ষনে রয়েছে।
মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, থানায় অভিযোগ হলে তদন্তপূর্ব্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com