“২৩শে জুন ২৬২তম পলাশী দিবসঃ পলাশী ট্রেজেডির মহানায়ক জাতীয় বীর শহীদ সিরাজুদ্দৌলার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি॥
মুজিবুর রহমান মুজিব॥ তেইশে জুন উনিশ সাল-দুইশত বাষট্টিতম পলাশী দিবস। সতেরোশত সাতান্ন সালের তেইশে জুন বৃহস্পতিবার পশ্চিম বঙ্গাঁধীন পলাশীর আ¤্রকাননে বাংল বিহার উড়িস্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলা মনসরুল মূলক হায়বৎ জং বাহাদুর বৃটিশ বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী, সুবে বাংলার সিপাহ সালার মীর জাফর আলী খাঁ, ধনকুবের জগৎ শেঠ, দেশদ্রোহীরাজা, রায় দূর্লভ প্রমুখের সঙ্গেঁ ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে আতাঁত করে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজ কোম্পানীকে জিতিয়ে দেয়। পলাশীর বিয়োগান্তক ট্রেজেডি এবং বাংলার নবাব সিরাজুদ্দৌলার ভাগ্য বিপর্য্যয়ের সাথে সাথে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য্য অস্থমিত হয়। বাংলা বাহিনীর পরাজয় এবং নবাবের পতন এর সঙ্গেঁ সঙ্গেঁ-“ইংরেজ বনিকের মানদন্ড দেখা দেয় রাজ দন্ড রূপে পোহালে শর্বরী।”
এই প্রসঙ্গেঁ প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ শ্রদ্ধেয় স্যার যদুনাথ সরকার যথার্থই বলেন- Thus Ended Muslim rule in Bengal, the foreign master of the sourd had becaome king maker.
ইতিহাস স্বাক্ষী মধ্য যুগে অভিভূক্ত ভারত বর্ষ- সুবে বাংলা একটি সম্বৃদ্ধ ও সভ্য জনপদ ছিল। বিশ্বব্যাপী বাংলার পন্য সামগ্রীর প্রচুর নাম ডাক ছিল। বিদেশী বনিকগণ অধিক মুনাফা ও ব্যবসা বানিজ্যের আশায় সুবে বাংলায় আসতেন। সুবে বাংলার প্রজা বৎসল নৃপতি নবাব আলী বর্দী খাঁর শাসনামলে ইরাকের নজফ থেকে দরিদ্র সৈয়দ আহমদ নজফি এর পরিবার রুটি-রুজি ভাগ্য উন্নয়নের আশায় বাংলায় আসেন। মানব দরদি ও ধর্মানুরাগি বাংলার নবাব আলী বর্দী খাঁ এই সম্ভান্ত-অভিজাত মুসলিম পরিবারকে দয়া পরবশ হয়ে আশ্রয় দেন। সৈয়দ আহমদ নজফির পুত্র মীর জাফর আলীকে একশত টাকা বেতন উমেদার এর চাকরি দেন। বাল্য কাল থেকেই বালক মীর জাফর আলী লোভী, ধূর্ত, ধুরন্দর ও চালাক প্রকৃতির লোক ছিলেন। ভক্তি চোট্রামি ও চালাকি দিয়ে ধূর্ত মীর জাফর আলী বয়োঃ বৃদ্ধ ও জনদরদি নবাব আলী বর্দী খাঁর মন জয় করে নেন। নবাব আলী বর্দী খাঁ মীর জাফর এর আচার আচরনে মুগ্ধ হয়ে সেনা বাহিনীতে চাকরি দিয়ে আপন বৈমাত্রীয় ভগ্নি শাহ খানমকে তাঁর সঙ্গেঁ বিয়ে দেন।
বাংলার নবাব আলী বর্দী খাঁর কোন পুত্র সন্তান ছিল না, তিন কন্যার জনক ছিলেন তিনি। বাংলার নবাবের কোন ঘোষিত উত্তর সূরী না থাকাতে নবাবের জামাতা এবং সেনাপতি মীর জাফর আলীর বদনযর যায় বাংলার সিংহাসনের দিকে। তিনি নিজেকে মনে মনে নবাব আলী বর্দী খাঁর উত্তর সূরী হিসাবে ভাবতে থাকেন। কিন্তু বয়োঃ বৃদ্ধ নবাব আলী বর্দী খাঁ তাঁর প্রিয় দৌহিত্র নবাবজাদা-যুবরাজ সিরাজুদ্দৌলাকে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী বিবেচনা করে তাকে দিবসে নিশীতে যুদ্ধে বিগ্রহে-রাজ্য শাসন রাজ্য পরিচালনায় তঁাঁর সঙ্গেঁ রাখতেন। বাল্য কাল থেকেই যুবরাজ-নবাবজাদা সিরাজুদ্দৌলাও ছিলেন সাহসী, দেশ প্রেমিক, যুদ্ধ বিদ্যার পারদর্শি এবং বৃটিশ বিদ্বেসী। ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল পরিণত বয়সে নবাব আলী বর্দী খাঁর মৃত্যো হলে তাঁর ওছিয়ত মোতাবেক প্রিয় দৌহিত্র মির্জা মোহাম্মদ সিরাজুদ্দৌলা বাংলা বিহার উড়িস্যার সিংহাসন আরোহন করেন। নবাব আলী বর্দী খাঁর কঠোর শাসনামলে ইংরেজদের উৎপাত ছাড়া বাংলার মসনদ নিসকন্টক ছিল। মারাঠা বর্গী ও ইংরেজদেরকে কঠোর হস্তে দমন করে বীর যোদ্ধা এবং যোগ্য শাসক নবাব আলী বর্দী খাঁ সূবে বাংলায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেও তাঁর ইন্তিকালের পর গৃহ বিবাদ শুরু হয়, বিদেশী শত্রুদের আনা গুনা ও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তরুন নবাব সিরাজুদ্দৌলা বাংলার সিংহাসন আরোহন করে ঘরে-বাহিরে কঠোর হস্তে শত্রু দমন করেন। বিশেষত ধূর্ত ইংেেরজ এবং ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ব্যাপারে তরুন নবাব ছিলেন কঠোর, কঠিন এবং অনমনীয়। প্রিয় দাদু নবাব আলী বর্দী খাঁর উপদেশ ও শিক্ষা ছিল ইংরেজদের সম্মন্ধেসজাগ ও সর্তক থাকা, তাদেরকে বিশ্বাস না করা। কিন্তু দূর্ভাগ্য বাংলা ও বাঙ্গাঁলির নবাবির বছর না ঘুরতেই তাঁকে ক্ষমতা চ্যুত করতে সিপাহ সালার মীর জাফর আলী, খালা ঘসেটী বেগম, ধনকুবের মাহতাব চাঁদ জগৎ শেঠ, লোভী রাজা রাজ বল্লভ, রায় দূর্লভ, সেনাপতি এয়ার লতিফ প্রমুখ কোম্পানীর সঙ্গেঁ গোপন বৈঠকে চুক্তি করলেন, বাংলার নবাবীকে নীলামে উঠালেন। নবাব বাহাদুরকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কতেক শর্তসহ চুক্তি করলেন। নবাব বিরোধী চক্রের গোপন চুক্তি মোতাবেক ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কর্তা রবার্ট ক্লাইভ, মেজর জেমসকিল প্যাট্রিক, মেজর আর্চ রোড গ্রন্টি মেজর আয়ার ফুট এবং ক্যাপ্টেন জর্জ গপনামীয় চারজন অফিসার, মাত্র একহাজার ইংরেজ সৈন্য, দুই হাজার দেশীয় সিপাহী এবং মাত্র দশটি ছোট বড় কামান নিয়ে নবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা শুরু করতঃ ১৭৫৭ সালের ১৩ইং জুন রাজধানী মুর্শিদাবাদ অভিমুখে রওয়ানা হন। ক্লাইভ ১৯জুন নবাবের নিয়ন্ত্রনাধীন কাঠোয়া দখল করতঃ ২২ শে জুন গঙ্গাঁ নদী পেরিয়ে কোলকাতা থেকে মাত্র সত্তোর মাইল দক্ষিনে নদীয়া জেলাধীন ভাগিরথী নদীর তীরে পলাশীর আ¤্রকাননে শিবির স্থাপন করেন। মাটির উচু দেয়াল ঘেরা দেড় হাজার বিঘার লক্ষ বাগ লক্ষ বৃক্ষের বাগান বলে এলাকাটি লক্ষ বাগ নামে খ্যাত।
সেকালে একালের মত তথ্য প্রযুক্তির যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। বাংলার স্বাধীন চেতা নবাব সিরাজুদ্দৌলা গুপ্তচর মারফত কোম্পানীর রনসজ্জা ও শিবির স্থাপনের সংবাদ পেয়ে কোন আলোচনা নয় যুদ্ধের জবাব যুদ্ধের মাধ্যমেই দেবার জন্য তাৎক্ষনিক ভাবেই আক্রমণ কারী শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করতঃ রনসাজে সজ্জিত হলেন। পদাতিক ও অশ্বারোহী বাহিনী মিলিয়ে নবাব বাহিনীতে ছিলেন সাত চল্লিশ হাজার সৈন্য, পঞ্চাশটি বৃহদাকৃতির কামান, নবারের অনুগত ফরাসি সেনাপতি সাঁফ্রে এর অর্ধশত সুশিক্ষিত সৈন্য এবং চারটি ছোট কামান। প্রায় অর্ধলক্ষ সুসজ্জিত প্রশিক্ষিত সৈন্য বাহিনী নিয়ে বাংলার নবাব সিরাজুদ্দৌলা পলাশীর এক প্রান্তে শিবির স্থাপন করলেন। তাঁর পাশেই ছিলেন তাঁর একান্ত অনুগত ও বিশ্বস্থ দুই সেনাপতি মীর মদন এবং রাজা মোহন লাল। সেনাপতি মোহন লালের অধীনে ছিল পাঁচ হাজার সুশিক্ষিত অশ্বারোহী এবং সাত হাজার পদাতিক সৈন্য। পলাশীর এই প্রান্তেই অনতি দূরে দাড়িয়ে ছিলেন সিপাহ সালার মীর জাফর আলী শক্তিমান রায় দূর্লভ, ভাগ্য বানরাজা রাজ বল্লভ এবং এয়ার লতিফ খাঁন।
১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন বৃহস্পতিবার সকাল আট ঘটিকায় শুরু বাংলাও বাঙ্গাঁলির ইতিহাস খ্যাত ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধ। নবাবের অনুগত সেনাপতি বীর যোদ্ধা মীর মদন এবং ফরাসি সেনাপতি বৃটিশ বিদ্বেসী এবং বাংলা প্রেমিক সাঁফ্রে- এর কামান দাগার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের প্রাথমিক পর্য্যায়ে যুদ্ধের অবস্থা ছিল নবাব বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে। আধ ঘন্টা খানেকের মধ্যে নবাব বাহিনীর কামানের গুলার আঘাতে কতেক কোম্পপানী সৈন্য নিহত হলে রবার্ট ক্লাইভ দিশাহারা হয়ে পিছু হটতে বাধ্য হন। কারণ ধূর্ত রবার্ট ক্লাইভ বুঝতে পেরেছিলেন সিপাহ সালার মীর জাফর আলী ছাড়াও নবাব বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ইংরেজ সেনাদের তিন গুনাধিক।
এমতাবস্থায় অসহায় কোম্পানী সৈন্য গনের জীবনরক্ষার জন্য রবার্ট ক্লাইব সম্মুখ সময়ে রনে ভঙ্গঁ দিয়ে পিছু হটে আম বাগান এবং বিভিন্ন গৃহে আশ্রয় নিলেন, চোরা গুপ্তা ভাবে নবাব বাহিনীকে আঘাত হানতে থাকেন। পাল্টা পাল্টি ভাবে নবাব বাহিনী সেনাপতি মীর মদন এবং সেনাপতি রাজা মোহন লালের নেতৃত্বে কামানের গুলা বর্ষণ করতঃ যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন, কিন্তু দূর্ভাগ্য জনক ভাবে ইংরেজ বাহিনী লুক্কায়িত এবং সুবিধা জনক অবস্থানে থাকায় নবাব বাহিনী বর্ষিত গুলা বারুদ ইংরেজ বাহিনীর উপর না পড়ায় নবাব বাহিনীর গুলা বারুদেরই ক্ষয়-ক্ষতি হল মাত্র। একসময় দুপুরের দিকে প্রবলবর্ষন নামে। তুমুল বৃষ্টিপাতে পলাশীর ময়দান কর্দমাক্ত হয়ে যায়, নবাব বাহিনীর গুলা বারুদ বৃষ্টিতে ভিজে বিনষ্ট হয়। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন বিকাল বেলা প্রবল বৃষ্টিপাত শেষে দেখা গেল নবাব বাহিনীর কামানের গোলা বারুদ ভিজে বিনষ্ট। প্রতিপক্ষ ইংরেজ বাহিনী ও নিশ্চুপ। মীর মদন ও মোহন লাল মনে করে ছিলেন বৃটিশ বাহিনীর গোলা বারুদ ও হয়ত তাদের মত ভিজে বিনষ্ট হয়েগেছে তাই দুই দুঃসাহসী বীর কতেক পদাতিক সৈন্য সহ বন্দুক দিয়েই বৃটিশ শিবির আক্রমণ করলেন, কিন্তু ধুর্ত ইংরেজগণ সুবিধা জনক অবস্থান এবং গৃহাভ্যন্তরে থাকায় কোন গোলাবাারুদই বিনষ্ট হয়নি, ফলতঃ তারা পূর্ণ শক্তিতে নবাব বাহিনীর উপর গোলা বর্ষন করতে থাকে একেপর্য্যায়ে নবাবের বিশ্বস্থ সেনাপতি মীর মদন সম্মুখ সমরে আহত হলে নবাবী সৈন্যদের মধ্যে বিশৃংখলা ও হতাশা দেখা দেয়। এক পর্য্যায়ে মীর মদনের মৃত্যো হলে নবাব স্বয়ং মুষড়ে পড়েন। মৃত্যোকাল বীর সৈনিক মীর মদন বলে যান মীর জাফর বিশ্বাস হন্তা, তিনি গোপনে বৃটিশদের সঙ্গেঁ আতাত করেছেন, তাই দূরে দাড়িয়ে ইংরেজদের রন নৈপুন্য দেখছেন-নবাবের পতন কামনা করছেন, নবাবীর দিবা স্বপ্ন দেখছেন। নবাব, সিপাহ সালার মীর জাফরকে শিবিরে ডেকে পাঠান, বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বৃটিশদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারনের আহ্বান জানিয়ে তাঁর মাথার তাজ মীর জাফরের পায়ের কাছে রেখে বলেন ÒIt is for you to defend my honour”ভারতের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও গবেষক ডক্টর অমলেন্দু দে তাঁর গবেষনামূলক গ্রহ্ণ- “সিরাজের পুত্র ও বংশধরদের সন্ধানে” তে এই তথ্য প্রদান করেন। ধূর্ত মীর জাফর আল্লাহর নামে কসম খেয়ে আগামী কল্য থেকে যুদ্ধ করার ওয়াদা করে অদ্য রনাঙ্গঁন থেকে নবাবী সৈন্য প্রত্যাহারের আবেদন জানান। অতঃপর হতভাগ্য নবাব সেনাপতি রাজা রায় দূর্লভকে ডেকে পাঠালে তিনিও এই অভিমত ব্যক্ত করতঃ ঔদ্যত্য পূর্ণ ও শাহী শিষ্টাচার বহির্ভূত ভাবে শিবির ত্যাগ করেন। নবাব নিরূপায় হয়ে সিপাহ সালার এর প্রস্তাব মত রাজা মোহন লালের নেতৃত্বাধীন নবাব বাহিনীকে যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে সৈন্য প্রতাহারের নির্দেশ জারী করেন। গোপনে এই সংবাদ বেঈমান মীর জাফর ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভকে জানিয়ে এই মূহুর্তে নবাব শিবির অক্রমনের আমন্ত্রণ জানান। গোপন সূত্রে এই সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে রবার্ট ক্লাইভ সসৈন্যে রনাঙ্গঁনে ঝাপিয়ে পড়েন, নবাব শিবির আক্রমণ করেন। সেনাপতি বিহীন নবাব বাহিনী ছত্রভঙ্গঁ হয়ে পালিয়ে গেলেন। বিকাল চারটার মধ্যেই পলাশীর ময়দানে বৃটিশের বিজয় নিষান উড়ে, বিজয় বাজনা বাজতে থাকে। ভাগ্যহত নবাব সিরাজুদ্দৌলা কতেক অনুচর সহ রাজধানী মুর্শিদাবাদ এর উদ্দেশ্যে পশ্চাদ বরন করেন- উদ্দেশ্য প্রাণ নিয়ে পলায়ন নয়, শক্তি সঞ্জয় ও সৈন্য সংগ্রহ করতঃ পুনরায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে সেসুযোগ আর তিনি পাননি। পাটনার উদ্দেশ্যে নৌপথে গমন কালে বেঈমান মীর জাফর পুত্র মীরন বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন, অতঃপর তাকে ২রা জুলাই নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।
বেঈমানী ও বিশ্বাস ঘাতকতার তেইশে জুনের পলাশীর যুদ্ধ সত্যিকার অর্থে কোন যুদ্ধ ছিল না এবং সেই যুদ্ধ জয় নিয়ে গর্ব করার মত ও কিছু নেই। এই প্রসঙ্গেঁ “ ঈড়ৎহবষ সধষরংড়হ তাঁর “ উবপরংরাব ইধঃঃষবং ড়হ ওহফরধ, চড়ষধংংু ধিং, রহরঃং, চ.৭৩-গ্রহ্ণে যথার্থই বলেন-Ò Cornel malison Zuvi Ò Decisive Battles on India, Polassy was, inits, P.73-MÖ‡nè h_v_©B e‡jb-ÒYes! As a Victory Polassy was, in its consequences perhaps the, the greatest ever gained, But as a battle it is not in any openion a matter to be proud of in the first place it was not a fair fight who can doubt. That if the three prin cipal generals of Sirajddaulah had been faithful to their master, Plessey would Nat have been won? নবাব সিরাজুদ্দৌলার চরিত্রের কৃতিত্বও মহত্ত বর্ণনা করতে গিয়ে এই ইংরেজ ঐতিহাসিক উক্ত গ্রহ্ণে আরো বলেন-“সেই দূঃখময় নাটকে প্রধান অভিনেতাদের মধ্যে তিনিই সিরাজ-উদ-দ্দৌলা ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি কোন প্রতারনার আশ্রয় নেন নি-”।
বাংলার স্বাধীনচেতা স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দেলা বাংলার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে গুরুত্ব দিয়েছেন-নবাবী টিকিয়ে রাখার জন্য বাংলার স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে কোম্পানীর সঙ্গেঁ আতাত করেন নি-ক্ষমতার ভাগ বাটোয়ারা করেন নি-ঐক্যমতের সরকার গঠনের প্রস্তাব ও দেন নি, ইংরেজদের কাছে প্রাণ ভিক্ষাও চাননি, বাংলার স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেন। বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম শহীদ হিসাবে ইতিহাসে খ্যাতি ও স্বীকৃতি লাভ করেন।
পলাশীর পরাজয় ও নবাবের ভাগ্য বিপর্যয়ে সুবে বাংলার মধ্য যুগীয় ইতিহাসে গুণগত মৌলিক পরিবর্তন আসে। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কেরানী ক্লাইভ হন কর্নেল, লর্ড, অতঃপর ভারত বিজেতাও ভারত শাসক। ইংরেজ বনিকের মানদন্ড দেখা দেয় রাজ দন্ড রূপে। বাংলা ভারত বর্ষ ব্যাপী একশত নব্বই বৎসর চলে বৃটিশের ঝুলুম নির্য্যাতন লুন্টন-সুষন। অবশেষে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম শেষে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয়-অর্জিত হয়-স্বাধীনতা-চীর কাংখিত স্বাধীনতা। ২৩শে জুন পলাশী দিবস। ২৬২তম পলাশী দিবসে শহীদ সিরাজুদ্দৌলার উজ্জল স্মৃতির প্রতি সুগভীর শ্রদ্ধাও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।
(মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাইকোর্ট। সাবেক সভাপতি মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব)
মন্তব্য করুন