৩ সুপার প্রার্থীর আবেদন গায়েবের অভিযোগ বড়লেখার ফকিরবাজার মাদ্রাসার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত
বড়লেখা প্রতিনিধি॥ বড়লেখা উপজেলার ফকিরবাজার দাখিল মাদ্রাসার সুপাররিনটেন্ডেন্ট ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করেছেন আদালত। আব্দুল করিম নামের সুপার পদপ্রার্থীর আবেদন গায়েব করায় তিনি ২ আগষ্ট মৌলভীবাজার সহকারী জজ আদালতে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের প্রার্থনা জানিয়ে স্বত্ত্ব মামলা ( স্বত্ত্ব মামলা নং-২৫৯/১৭) দায়ের করেন। অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতির পছন্দের এক প্রার্থীকে সুপার নিয়োগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে নানা অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপার আব্দুস সবুর অবসরে যাওয়ায় ফকিরবাজার দাখিল মাদ্রাসার সুপারের পদ শূন্য হয়। এরপর ৪-৫ বার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েও সুপার পদটি পুরণ করা হয়নি।
বছরের ১৮ নভেম্বর সুপার ও নি¤œমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সুপার পদে ৮ জন ও কম্পিউটার অপারেটর পদে ১১ জন প্রার্থী অংশ নেন। নিয়োগ বোর্ড সুপার পদে মো. আব্দুল মোহিম ও নি¤œমান সহকারী পদে জাহেদ হোসেনকে নির্বাচিত করে। অভিযোগ রয়েছে পছন্দের এক প্রার্থীকে সুপার পদে নিয়োগ দিতে মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি এ নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করেন। পরবর্তীতে পুণরায় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে অনেকের সাথে সুপার পদপ্রার্থী আব্দুল খালিক, ওয়াছিক উদ্দিন, আব্দুল করিম ও রফিক উদ্দিন যথযথভাবে ১ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফটসহ আবেদন করেন। কিন্তু বাছাইয়ের আগেই তাদের আবেদনপত্র গায়েব করা হয়। একজনের অনাপত্তিপত্র ফেলে দিয়ে আবেদন বাতিল করা হয়।
সুপার প্রার্থী আব্দুল করিম জানান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে তিনি জানতে পারেন ৬ আগষ্ট নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বাছাইকালে তার আবেদন পাওয়া যায়নি। অথচ তিনি ডাকযোগে আবেদন পাঠিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সংগ্রহ করেছেন। তার আবেদনে কোন ভুলভ্রান্তি ছিল না। উদ্দেশ্যমুলকভাবে তার আবেদন গায়েব করা হয়। এজন্য তিনি গত ২ আগষ্ট মাননীয় আদালতের শরনাপন্ন হন। বিজ্ঞ আদালত তার প্রার্থনার পক্ষে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ জারি করেন।
অপর সুপার পদপ্রার্থী আব্দুল খালিক জানান, সভাপতির চাচাকে নিয়োগ দিতে গত দেড়/দুই বছর ধরে এ মাদ্রাসায় নিয়োগ নাটক চলছে। অনাপত্তিপত্র না থাকায় তার আবেদন বাতিল করা হয়েছে শুনে তিনি অবাক হন। ইচ্ছা করেই তার অনাপত্তিপত্র ফেলে দেয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সমীর কান্তি দেব জানান, গত ২৬ জুলাই তার কার্যালয়ে আবেদনপত্রের বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। ভারপ্রাপ্ত সুপার ও সভাপতি সুপার পদের ৮টি ও অফিস সহকারী পদের ১৫টি আবেদন নিয়ে আসেন। সুপার পদপ্রার্থী ওয়াছিক উদ্দিন, আব্দুল করিম ও রফিক উদ্দিনের কোন আবেদন তিনি পাননি। আব্দুল খালিকের আবেদনের সাথে অনাপত্তিপত্র না থাকায় তা বাতিল করা হয়। তিনি আরো বলেন, ইতিপুর্বে মেধার ভিত্তিতে মাদ্রাসা সুপার পদে মো. আব্দুল মোহিম ও নি¤œমান সহকারী পদে জাহেদ হোসেনকে নির্বাচিত করে তাদেরকে নিয়োগ দেয়ার জন্য মাদ্রাসা কমিটিকে সুপারিশ করা হয়। কিন্তু বিনা যুক্তিতে কমিটি এ নিয়োগ বাতিল করেছে।
মাাদ্রাসা কমিটির সভাপতি শামীম আহমদ জানান, আদালত থেকে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিতের কোন কাগজ তিনি এখনও পাননি। পছন্দের ব্যক্তিকে সুপার নিয়োগ দেয়ার অভিযোগও তিনি অস্বীকার করেন।
মন্তব্য করুন