৫০ কিশোর-তরুণের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বড়লেখায় স্বেচ্ছাশ্রমে ঝোঁপঝাড় পরিস্কার

August 9, 2021,

আব্দুর রব॥ বড়লেখার কলাজুরা এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে দু’টি গোরস্থানে বেড়ে ওঠা গাছের ডালপালা আর ঝোঁপঝাড় ও রাস্তার পাশের বনজঙ্গল পরিস্কার করেছে একদল কিশোর-তরুণ। এতে ঝোঁপঝাড়ের আড়ালে থাকা পুরাতন কবরগুলো বেরিয়ে এসেছে। এখন স্বজনরা কবরগুলো দেখে জিয়ারত করতে পারবে। কারণ এতদিন কবরগুলো ঝোপঝাড়ের আড়ালে ছিল।
গত তিন দিনে স্বেচ্ছাশ্রমে গোরস্থান দু’টি পরিস্কার করেছে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আলোর পথের যাত্রী পূর্ব-হাতলিয়া (কলাজুরা)’র সদস্যরা। কিশোর গ্যাংকের নানা অপরাধ কর্মকা-ে অভিভাবক মহল ও প্রশাসন যখন উদ্বিগ্ন, তখন এলাকার কিশোর-তরুণদের এধরণের জনকল্যাণ মূলক কাজ প্রশংসিত হচ্ছে ।
এর আগে কিশোর-তরুণরা কলাজুরা বাজার থেকে বাংলা নার্সারি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারের ঝোপঝাড়-জঙ্গল কেটে পরিস্কার করেছে। পাশাপাশি কলাজুরা বাজারে যত্রতত্র ফেলা ময়লা-আবর্জনাও পরিস্কার করেছে। এতে এলাকার দৃশ্য অনেকটা পালটে গেছে। এছাড়া করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এলাকার মসজিদগুলোতে সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণের পাশপাশি কলাজুরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে করোনা টিকার নিবন্ধন করে দিয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার কলাজুরা বাজারের পাশে প্রায় ৯০ শতক জায়গা জুড়ে একটি সার্বজনীন গোরস্থান রয়েছে। একই এলাকার হাজী আপ্তাব মিয়া মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে প্রায় ৯০ শতক জায়গা জুড়ে আরেকটি সার্বজনীন গোরস্থান রয়েছে। এলাকার কেউ মারা গেলে গোরস্থান দু’টিতে কবর দেওয়া হয়। গোরস্থান দু’টিতে রয়েছে এলাকার শত শত মানুষের কবর। রয়েছে নানা জাতের গাছপালা। দীর্ঘদিন ধরে গোরস্থান দু’টিতে বেড়ে ওঠা গাছের ডালপালা ও ঝোপঝাড় পরিস্কার করা হয়নি। এতে ঝোপঝাড়ের নিচে আড়াল পড়েছে অনেক কবর। জিয়ারত করতে আসা অনেকেই ঝোপঝাড়ের কারণে দেখতে পারতেন না তার আপনজনের কবর। এছাড়া ঝোপঝাড়ের কারণে গোরস্থানের ভেতরে কারও লাশ দাফন করতে গেলে আগে ঝোপঝাড় কাটতে হতো। এতে তাদের অনেকটা সমস্যায় পড়তে হতো। এই সমস্যা দূর করতে কলাজুরা এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আলোর পথের যাত্রী পূর্ব হাতলিয়া (কলাজুরা)’র সদস্যরা গোরস্থান দু’টি স্বেচ্ছায় পরিস্কারের উদ্যোগ নেয়। শনিবার থেকে সংগঠনের প্রায় ৫০ সদস্য গোরস্থান দু’টির ঝোপঝাড় পরিস্কার কার্যক্রম শুরু করে। রোববার তারা কলাজুরা বাজারের পাশের সার্বজনীন গোরস্থান পরিস্কারের কাজ সম্পন্ন করেছে। সোমবার সকালে একই এলাকার হাজী আপ্তাব মিয়া মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের আরেকটি সার্বজনীন গোরস্থানের ঝোঁপঝাড় ও জঙ্গল তারা পরিস্কার করেছে।
সংগঠনের সভাপতি রিফাত বিন মুহিত ও সাধারণ স¤পাদক মুরাদ আজীর বলেন, কয়েক যুগ থেকে এলাকার কেউ মারা গেলে গোরস্থান দু’টিতে লাশ দাফন করা হয়। একটি গোরস্থান কলাজুরা বাজারের পাশে। অপরটি স্থানীয় হাইস্কুলের পাশে। কিন্তু গাছের ডালপালা আর ঝোঁপঝাড়ের কারণে গোরস্থানের পুরাতন কবরগুলো দেখা যাচ্ছিল না। এছাড়া এলাকার কেউ মারা গেলে গোরস্থান দুঁটিতে বনজঙ্গলের কারণে কবর দেওয়ার উপযুক্ত জায়গাও পাওয়া যেত না। কেউ সেগুলো পরিস্কার করেনি। তাই আমরা গোরস্থান দু’টি পরিস্কারের উদ্যোগ নিয়ে মাত্র ৩ দিনে পরিস্কার করেছি।
এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, হাজী আপ্তাব মিয়া মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সার্বজনীন গোরস্থানটিতে আমার অনেক আত্মীয়-স্বজনের পাশাপাশি এলাকার অনেক মানুষের কবর রয়েছে। এটি অনেক পুরাতন গোরস্থান। দীর্ঘদিন ধরে গোরস্থানটির ঝোঁপঝাড় পরিস্কার করা হয়নি। এতে অনেক পুরাতন কবরগুলো ঝোপের আড়ালে অযতেœ অবহেলায় পড়েছিল। এছাড়া এলাকার কেউ মারা গেলে গোরস্থানটির যে জায়গায় দাফন করা হয়, সেই জায়গাটুকু পরিস্কার করা হয়। গোরস্থানের ভেতরে কাউকে দাফন করতে আগে ঝোঁপঝাড় পরিস্কার করতে হয়। যা মারাত্মক ঝামেলা। তবে এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আলোর পথের যাত্রী পূর্ব-হাতলিয়া (কলাজুরা)’র সদস্যরা দু’টি গোরস্থান পরিস্কার করেছে। এতে ঝোঁপঝাড়ের আড়ালে থাকা অনেক পুরাতন কবর বের হয়েছে। এখন এলাকার কেউ মারা গেলে গোরস্থানের ভেতরে দাফন করা সহজ হবে।
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ সদস্য আজিম উদ্দিন বলেন, ‘আলোর পথের যাত্রী পূর্ব-হাতলিয়া (কলাজুরা)’র সদস্যরা কখনও এলাকার রাস্তা, কখনও বাজারে ফেলা ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করছে। গত কদিনে এলাকার দু’টি সার্বজনীন গোরস্থান পরিস্কার করেছে। করোনাকালে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় কিশোর-তরুণরা যখন মুঠোফোনে সময় কাটাচ্ছে, অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ঠিক সেসময় সংগঠনের কিশোর-তরুণরা এলাকায় সমাজসেবামূলক কাজ করছে, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক নেতার স্ত্রীর খুনিদের ফাঁসি ও বাগান থেকে উচ্ছেদের দাবি
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি॥ শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক নেতা বিজয় হাজরা’র স্ত্রী রূপবতী হাজরা খুনের ঘটনায় খুনিদের ফাঁসি ও বাগান থেকে উচ্ছেদের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে তিনটি চা বাগানে এক ঘন্টা কর্মবিরতি করে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করে চা শ্রমিকরা।
সোমবার ৯ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ভাড়াউড়া চা বাগানে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করা হয়। সমাবেশে ভাড়াউড়া চা বাগান, খাইছড়া চা বাগান ও ভুরভুরিয়া চা বাগানের শতাধিক নারী পুুরুষ চা শ্রমিক অংশ নেন।
ভাড়াউড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটি সভাপতি নুর মিয়ার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা পরাগ বাড়ই, সহ সভাপতি পংকজ কন্দ, ভাড়াউড়া চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজল হাজরা, সাবেক সভাপতি উজ্জল হাজরা প্রমুখ। এসময় মানববন্ধনে ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরার পরিবারের উপর প্রতিবেশী কয়েকজন একযুুগে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় গুরুতর আহত হন বিজয় হাজরার স্ত্রী রুপবতী হাজরা, ছেলে সাধন হাজরা (৩০) ও ছেলের বউ সাথি হাজরা (২৫)। পরে অইদিন রাত সাড়ে ১০টায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রূপবতী হাজরা।

প্রবাসীদের সহায়তায় কুলাউড়া হাসপাতালে ৩২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার
স্টাফ রিপোর্টার॥ কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে যুক্তরাষ্ট্রে কুলাউড়ার প্রবাসীদের সংগঠন কুলাউড়া বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব ইউএসএ এর আর্থিক সহায়তায় ৩২ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার ৮ আগস্ট বিকেল ৩টায় হাসপাতালের হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও হাসপাতালের আরএমও ডা. জাকির হোসেনের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফেরদৌস আক্তার, ওসি (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম, কুলাউড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বদরুজ্জামান সজল। ইনক্ সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা মো. এনামুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন জালাল।
কুলাউড়া হাসপাতালে বর্তমানে ৭০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুদ রয়েছে। তারমধ্যে কুলাউড়া বাংলাদেশী এসোসিয়েশন অব ইউএসএ ইনক্ প্রথম পর্যায়ে ১১ টি, ঢাকাস্থ মৌলভীবাজার জেলা সমিতি ২৫টি ও হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় ৩৪টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হলে শুধু রিফিল প্রয়োজন হবে। এটা হলেই আমরা করোনা রোগীদের উন্নত সেবা দিতে পারবো।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com