সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়োগ দূর্নীতি, ৫ কর্মচারী বদলি করে নিয়োগ জালিয়াতি ধামাচাপ দেওয়ার চেষ্ঠা
স্টাফ রিপোর্টার : জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ৫ কর্মচারীকে বদলী করা হয়েছে। পাতাকুঁড়ির দেশ সহ কয়েকটি গনমাধ্যমে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ দূর্নীতি ও কোটি টাকার বাণিজ্য নিয়ে নিউজের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এরই প্রেক্ষিতে এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ও অভিযুক্ত ৫ কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা হয়।
বদলী হওয়া কর্মচারী সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী অসিত চক্রবর্তী কে শ্রীমঙ্গল, হেড এ্যাসিটেন্ড কাম ক্যাশিয়ার রঞ্জনা দেবীকে রাজনগর,পরিসংখ্যানবিদ অহিজিৎ দাস রিংকুকে কুলাউড়া, ষ্টোর কিপার অলকচন্দ্র পালকে রাজনগর ও ওয়ার্ডবয় বিরোজিত দাসকে রাজনগর উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। ওই ৫ কর্মচারী দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় দাপটের সাথে দূর্নীতি,ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অপর্কমের হোতা ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি সিন্ডেকেট গ্রুপের সাথে তাদের সুসর্ম্পক থাকায় ভয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কেউই ওদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন না। ওই নিয়োগ দূর্নীতির সাথে জড়িত ২৫০ শয্যা সদর জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিতাংশ আচার্য্যরে বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ৫ কর্মচারী বদলী নিয়োগ জালিয়াতি ধামাচাপা দেওয়ার কুট কৌশল কিনা এমনটি প্রশ্ন তোলছেন এবিষয়ে ক্ষোব্দ জেলার সচেতন মহল ও নিয়োগ বঞ্চিতরা।
তবে সংশ্লিষ্ট একটি সুত্র বলছে নিয়োগে জালজালিয়াতির বিষয়টি সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে অন্যত্র বদলী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন মহল থেকে নিয়োগ বাতিল ও ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত দূর্নীতিবাজদের দৃষ্ঠান্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন। তারা বলছেন তদন্ত সাপেক্ষে নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িতদের শাস্তি ও নিয়োগ বাতিল না হলে আইনী পদক্ষেপ নিবেন ও আন্দোলনে নামবেন। জেলাজুড়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ৭টি ক্যাটাগরির ৯৫ টি পদে নিয়োগ দূর্নীতি ও আর্থিক বাণিজ্য নিয়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ওই নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার গুরতরও অভিযোগ নিয়োগ কমিটির সদস্য,পরীক্ষক ছাড়াও আওয়ামীলীগের সাবেক ২ জন এমপি ও ১জন মন্ত্রীসহ সিভিল সার্জন অফিসের ৪ জন কর্মচারী ও ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের একজন কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। ওই নিয়োগে ৭৪ টি পদের মধ্যে কেবল ৬৭টি জনই সনাতন ধর্মাবলম্বী হিসেবে আর্থিক লেনদেন ও কুট কৌশলের আশ্রয়ে অধিক গুরুত্বে নিয়োগ পান। আর ৪টি কোটায় নিয়োগ পান ২০ জন।
জানা যায় ৭টি ক্যাটাগরিতে ২০১৮ ও ২০২৩ সালে দু’টি পৃথক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে ৯৫টি পদের জন্য ২০ হাজার ৮ শ ৬৯ জন আবেদন করেন। এরমধ্যে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৮ হাজার ১৫৪ জন। অভিযুক্তরা চাকুরী দেবার শর্তে অন্তত ৫০-৬০ জন প্রার্থীর কাছ থেকে ৫-৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। নিয়োগের পরও আরেক দফা পোস্টিং বাণিজ্য করেন সিভিল সার্জন অফিসের সংশ্লিষ্টরা। ৫ কর্মচারী বদলীর সত্যতা নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন মুর্শেদ মুঠোফোনে মানবজমিনকে জানান পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে ওদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠায় তাদেরকে বদলী করা হয়েছে। পরবর্তী করণীয় ঊর্ধ্বতন কর্র্র্তৃপক্ষের নির্দেশনানুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন