প্রবাসী স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা কুলাউড়ার গৃহবধূ রোজিনা
এক বছর পার হলেও সৌদি প্রবাসি স্বামীর মৃত্যুর রহস্য জানেন না রোজিনা। প্রবাসী স্বামীকে হারিয়ে তার জীবনে নেমে এসেছে চরম হতাশা। কুলাউড়া উপজেরার র্কমধা ইউনিয়নের মনসুরপুর গ্রামে রোজিনার স্বামীর বাড়ি। মনসুরনগর গ্রামের মৃত সত্তার আলীর ছেলে ছয়ফুলের সাথে রোজিনার বিয়ে হয় ২০১২ সালে। ছয়ফুল অভাব-অনটনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে ২০০৭ সালেই সৌদি আরব পাড়ি জমান। চাকুরি পান সৌদি আরবের আবহা জেলার জাহরান আল-জুনাব এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে। চাকুরির ফাঁকে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তিনি দেশে ফেরেন। বিয়ে সম্পন্ন করে ৫ মাস দেশে অবস্থান করে তিনি জুন মাসে চলে যান। সম্প্রতি মনসুরপুর গ্রামে সরেজমিনে গেলে কথা হয় রোজিনা সাথে। রোজিনা জানান, তার স্বামী দেশে ছুটিতে আসার সময় পেট্রোল পাম্পের চাকুরির কাজ সাময়িকভাবে তার মামাতো ভাই একই উপজেলার বেড়ি গ্রামের চেরাগ মিয়ার পুত্র মুইদকে দিয়ে আসেন। এই কাজ হস্তান্তর করাটাই ছয়ফুলের জীবনের জন্য কাল হয়ে যাবে কে জানে। বাংলাদেশ থেকে ফিরে গিয়ে ছয়ফুলকে মুইদ কাজ ফিরিয়ে দিচ্ছিল না। মুইদের সাথে ছয়ফুলের কাজ এবং টাকা লেনদেন নিয়ে বিদেশে তুমুল ঝগড়া হয় বলে তার স্বামী তাকে (রোজিনাকে) ফোনে জানান। রোজিনা তাকে শান্ত¡না দেন যেনো মুইদের সাথে কোনো ঝামেলায় না জড়ান। ছয়ফুল তার পেট্রোল পাম্পে কাজ না পেয়ে অবশেষে মাজরার (বাগানে) কাজে যোগ দেন। ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর স্বামীর কপিল তাকে পেট্রোল পাম্পের কাজে নিয়োগ দেয়। কাজে যোগদানের পর থেকে ছয়ফুলের সাথে মুইদের সম্পর্কে চিড় ধরে। এক পর্যায়ে দ্বন্দ্বও বাড়তে থাকে। রোজিনা আরও জানান, তার স্বামী ফোনে যোগাযোগ করে তাকে বলেছেন মুইদ তাকে হুমকি দিচ্ছে। ৯ সেপ্টেম্বর দিনের বেলা স্বামীর সাথে কুশলাদি বিনিময়ে শেষ কথা হয়। স্বামী ছয়ফুল ফোনে বলেন, কাজের চাপ বেড়ে গেছে। দিনে-রাতে কাজ করতে হয়। রোজিনা তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ছয়ফুলের মামাতো ভাই মুইদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে সে ফোন ধরেনি। বার বার চেষ্টা করে রোজিনা যখন ছয়ফুলের কোনো খবর পাচ্ছেন না তখন নোয়াখালী এলাকার বাসিন্দা ছয়ফুলের বন্ধু মুজিবের সাথে যোগাযোগ হয়। মুজিব রোজিনাকে জানায়, ছয়ফুলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সে অসুস্থ এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ফোন ধরবে না। মুজিব রোজিনাকে বলেছে, মুইদের নির্দেশ ফোন করে তাদের যেনো বিরক্ত না করা হয়। ঘটনার ৩/৪ দিন পর মুইদের বাহরাইন প্রবাসী আরেক ভাই লকুছ মুইদের বাড়িতে ফোনে জানায়, ছয়ফুলের লাশ সৌদির মাজরার (বাগানের) কুয়াতে পাওয়া গেছে। এরপর থেকে মুইদ, মুজিবসহ এদের কারো সাথে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি রোজিনা। গ্রামের বাসিন্দা ফারুক মিয়া জানান, ছয়ফুল খুবই ভালো ছেলে ছিল। তার আয়-রোজগারও ভালো ছিল। হয়তো কে বা কারা ঈর্ষাণ্বিত হয়ে এতো বড় সর্বনাশ করেছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তদন্তসাপেক্ষে যেনো এর বিচার হয়। ছয়ফুল, মুইদ ও মুজিব তিনজনের মধ্যে খুবই আন্তরিকতাও ছিল। তিন জনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার যথাক্রমে-০০৯৬৬৫০৩৩৫৭৪৮৮-০০৯৬৬৫৯৮৭১৬৬৪৬-০০৯৬৬৫৯৫৭৮১৯৭১। দূতাবাসের মাধ্যমে বিষয়টির তদন্ত করা হলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুইদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ছয়ফুলের ঘটনা বিদেশে ঘটেছে। আমরা কিছুই জানি না। রোজিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রশ্ন রাখেন-আমার স্বামীকে কি ফিরে পাবো? তাকে জীবত না পেলেও তার লাশটাও কি পাবো না। এদিকে ছেলে হারানোর বেদনায় বিভোর ছয়ফুলের মা মাহমুদা বেগম। পুত্রবধূ রোজিনার কথার সাথে একমত প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে জানান, কে আমার বুকের ধন কেড়ে নিল আমি এর বিচার চাই। বিষয়টি নিয়ে জনশক্তি বিভাগের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস শহীদ বাবুল জানান, ঘটনা সুদূর সৌদি আরবে ঘটেছে। অনেক কিছু আমাদের অজানা। ছয়ফুলের অভিভাবকদের দাবি, ছয়ফুলকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তাদের দাবির সাথে আমি একমত।
এক বছর পার হলেও সৌদি প্রবাসি স্বামীর মৃত্যুর রহস্য জানেন না রোজিনা। প্রবাসী স্বামীকে হারিয়ে তার জীবনে নেমে এসেছে চরম হতাশা। কুলাউড়া উপজেরার র্কমধা ইউনিয়নের মনসুরপুর গ্রামে রোজিনার স্বামীর বাড়ি। মনসুরনগর গ্রামের মৃত সত্তার আলীর ছেলে ছয়ফুলের সাথে রোজিনার বিয়ে হয় ২০১২ সালে। ছয়ফুল অভাব-অনটনের গ্যাঁড়াকলে পড়ে ২০০৭ সালেই সৌদি আরব পাড়ি জমান। চাকুরি পান সৌদি আরবের আবহা জেলার জাহরান আল-জুনাব এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে। চাকুরির ফাঁকে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে তিনি দেশে ফেরেন। বিয়ে সম্পন্ন করে ৫ মাস দেশে অবস্থান করে তিনি জুন মাসে চলে যান। সম্প্রতি মনসুরপুর গ্রামে সরেজমিনে গেলে কথা হয় রোজিনা সাথে। রোজিনা জানান, তার স্বামী দেশে ছুটিতে আসার সময় পেট্রোল পাম্পের চাকুরির কাজ সাময়িকভাবে তার মামাতো ভাই একই উপজেলার বেড়ি গ্রামের চেরাগ মিয়ার পুত্র মুইদকে দিয়ে আসেন। এই কাজ হস্তান্তর করাটাই ছয়ফুলের জীবনের জন্য কাল হয়ে যাবে কে জানে। বাংলাদেশ থেকে ফিরে গিয়ে ছয়ফুলকে মুইদ কাজ ফিরিয়ে দিচ্ছিল না। মুইদের সাথে ছয়ফুলের কাজ এবং টাকা লেনদেন নিয়ে বিদেশে তুমুল ঝগড়া হয় বলে তার স্বামী তাকে (রোজিনাকে) ফোনে জানান। রোজিনা তাকে শান্ত¡না দেন যেনো মুইদের সাথে কোনো ঝামেলায় না জড়ান। ছয়ফুল তার পেট্রোল পাম্পে কাজ না পেয়ে অবশেষে মাজরার (বাগানে) কাজে যোগ দেন। ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর স্বামীর কপিল তাকে পেট্রোল পাম্পের কাজে নিয়োগ দেয়। কাজে যোগদানের পর থেকে ছয়ফুলের সাথে মুইদের সম্পর্কে চিড় ধরে। এক পর্যায়ে দ্বন্দ্বও বাড়তে থাকে। রোজিনা আরও জানান, তার স্বামী ফোনে যোগাযোগ করে তাকে বলেছেন মুইদ তাকে হুমকি দিচ্ছে। ৯ সেপ্টেম্বর দিনের বেলা স্বামীর সাথে কুশলাদি বিনিময়ে শেষ কথা হয়। স্বামী ছয়ফুল ফোনে বলেন, কাজের চাপ বেড়ে গেছে। দিনে-রাতে কাজ করতে হয়। রোজিনা তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ছয়ফুলের মামাতো ভাই মুইদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে সে ফোন ধরেনি। বার বার চেষ্টা করে রোজিনা যখন ছয়ফুলের কোনো খবর পাচ্ছেন না তখন নোয়াখালী এলাকার বাসিন্দা ছয়ফুলের বন্ধু মুজিবের সাথে যোগাযোগ হয়। মুজিব রোজিনাকে জানায়, ছয়ফুলের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সে অসুস্থ এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ফোন ধরবে না। মুজিব রোজিনাকে বলেছে, মুইদের নির্দেশ ফোন করে তাদের যেনো বিরক্ত না করা হয়। ঘটনার ৩/৪ দিন পর মুইদের বাহরাইন প্রবাসী আরেক ভাই লকুছ মুইদের বাড়িতে ফোনে জানায়, ছয়ফুলের লাশ সৌদির মাজরার (বাগানের) কুয়াতে পাওয়া গেছে। এরপর থেকে মুইদ, মুজিবসহ এদের কারো সাথে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি রোজিনা। গ্রামের বাসিন্দা ফারুক মিয়া জানান, ছয়ফুল খুবই ভালো ছেলে ছিল। তার আয়-রোজগারও ভালো ছিল। হয়তো কে বা কারা ঈর্ষাণ্বিত হয়ে এতো বড় সর্বনাশ করেছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে তদন্তসাপেক্ষে যেনো এর বিচার হয়। ছয়ফুল, মুইদ ও মুজিব তিনজনের মধ্যে খুবই আন্তরিকতাও ছিল। তিন জনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার যথাক্রমে-০০৯৬৬৫০৩৩৫৭৪৮৮-০০৯৬৬৫৯৮৭১৬৬৪৬-০০৯৬৬৫৯৫৭৮১৯৭১। দূতাবাসের মাধ্যমে বিষয়টির তদন্ত করা হলে ঘটনার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকাবাসী মনে করেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মুইদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ছয়ফুলের ঘটনা বিদেশে ঘটেছে। আমরা কিছুই জানি না। রোজিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রশ্ন রাখেন-আমার স্বামীকে কি ফিরে পাবো? তাকে জীবত না পেলেও তার লাশটাও কি পাবো না। এদিকে ছেলে হারানোর বেদনায় বিভোর ছয়ফুলের মা মাহমুদা বেগম। পুত্রবধূ রোজিনার কথার সাথে একমত প্রকাশ করে এই প্রতিবেদককে জানান, কে আমার বুকের ধন কেড়ে নিল আমি এর বিচার চাই। বিষয়টি নিয়ে জনশক্তি বিভাগের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস শহীদ বাবুল জানান, ঘটনা সুদূর সৌদি আরবে ঘটেছে। অনেক কিছু আমাদের অজানা। ছয়ফুলের অভিভাবকদের দাবি, ছয়ফুলকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তাদের দাবির সাথে আমি একমত। কুলাউড়া প্রতিনিধি॥
মন্তব্য করুন