ময়লা-আবর্জনা স্তুপ : দুর্গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অতিষ্ঠ

October 9, 2016,

সাইফুল ইসলাম॥ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের কলেজ রোড এলাকা তিনটি প্রতিষ্ঠানের পাশে স্বাধীনতার প্রায় ৪১ বছর ধরে পৌরসভার প্রায় এক একর পতিত জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।  ময়লার স্তুপ থাকায় প্রচন্ড গরমে আসা দুর্গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দা ও তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অতিষ্ঠ।

সরেজমিনে দেখা গেছে,শহরের কলেজ রোড শ্রীমঙ্গল-ভাড়াউড়া চা-বাগান রাস্তার কলেজ এলাকায় ময়লা ফেলার ওই স্থান। ট্রাকে করে এনে ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লার স্তুপ পতিত ওই জায়গা থেকে শুরু করে কলেজ রোডে এসে মিশেছে। এর উল্টো পাশেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ও দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। পশ্চিম পাশে আছে গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসা।

জানা যায়, ময়লা ফেলার স্থানটি সরানোর জন্য বিভিন্ন সময় পৌর কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কলেজ রোডের বাসিন্দা ছাড়াও শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে প্রায় পাঁচ হাজার, দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ১ হাজার ২০০ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বছরের পর বছর এখানকার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ।

কলেজ রোডের বাসিন্দা মানবাধিকার কর্মী আক্তারুজ্জামান দিপু বলেন, ‘জোরে বাতাস বাই শুরু করলে ঘরের ভেতর পর্যন্ত গিয়ে গন্ধ ঢোকে। তখন দম নেওয়া যায় না। কিন্তু কিছু করার নাই। ঘরবাড়ি ছেড়ে তো যাওয়া যায় না, তাই থাকি।’

বাডস্ স্কুলের অভিভাবক  মিলন রায় বলেন, সভ্য সমাজের মূল্য সভ্য মানুষই উপলব্দি করতে পারে কাকে কি বলবো। তিনি জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি।

শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজের প্রাক্তন ছাত্র পুলক দত্ত ক্ষোভে বলেন, কথা বললেই সমস্যায় পড়তে হয়।কি আর করার, পোশায় এই রাস্তায় চলাচল করো নতুবা অন্য পথ ধরো।

দি বাডস্ রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে রাজকুমার অভিজিৎ বলেন,ময়লার স্তুপ। অনেক লবিং /দরখাস্ত করেও সরানো গেল না। প্রচন্ড গরমে দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পরে,ফলে কি ক্লাস, কি কমন রুমে ছাত্রছাত্রীদের দুর্গন্ধের মধ্যে থাকতে হয়। ক্লাসে যখন আমরা পরিবেশ দূষন পড়ায় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রিরা দুর্গন্ধে মুখ চেপে থাকে। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ময়লার স্তুপের মধ্যে যে ঘরগুলো দেখা যাচ্ছে সেখানে নাকি সাস্থ্যসম্মত বিশুদ্ধ সাপ্লায়ের পানির কল বসানো হয়েছে। ময়লা জীবানুর মধ্যে বিশুদ্ধ পানি। তিনি আরও বলেন,সম্মানিত অভিবাবকগন এবং সম্মানিত সাংবাদিকগনের, মেয়র মহোদয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সৃষ্টি কামনা করেন।

শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুল মালেক বলেন, ‘দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। আমরা পৌরসভাকে জানাচ্ছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।’

পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া বলেন, ময়লা ফেলার স্থান সরানোর জন্য ২০১২ সালে মৌলভীবাজার সড়কে জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। টাকাও জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গেজেট প্রকাশ হওয়ার আগে জমি নিয়ে একটি মামলা হওয়ায় স্থানান্তরের কাজটি আটকে গেছে। যার ফলে নাগরিক সমস্যা কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করতে নিচের “আপনার প্রিয় শেয়ার বাটনটিতে ক্লিক করুন”

মন্তব্য করুন

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com