ফেলানী হত্যাকান্ডে নির্দোষ বিএসএফ : বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষকারী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশী নারী ফেলানী হত্যার পরে লাশ টাঙ্গিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্বে তোড়পাড় সৃষ্টি হয়। শুধু বাংলাদেশীদের মধ্যে নয় ভারতীয় অবিবেকবান নরপিশাচ বিএসএফ এর মধ্যেও শুরু হয় তোড়পাড়। দীর্ঘ চড়াই-উতরায় পরে ভারত সরকার অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যের বিচারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। শুরু হয় বিচার, কিন্তু খালাস পেয়ে যায় সকল অভিযুক্তরা। কাক কাকের মাংস খায় না তার আরো একবার প্রমাণ করলো ভারতীয় বিশেষ আদালত। আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বলতে চাই, তাহলে ফেলানীকে মারলো কারা? না কি ফেলানী নিজে মরে তারে কাটার উপর ঝুলে ছিলো। আর যারা বাঁশের উপর করে গরু-ছাগলের মতো করে মৃতদেহ বস্তায় করে নিয়ে গেল তারা কি প্রেতেত্মা। না কি তারা অদৃশ্য কোন শক্তি যাদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার বা আদালতের ব্যবস্থা গ্রহণের কোন শক্তি নেই। ভারত বাংলাদেশের বন্ধু ও প্রতিবেশি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৩০টি সীমান্তবর্তী জেলা ভারতের সাথে রয়েছে। এ সব জেলা দিয়ে দুই দেশের মানুষের বিনা পাসপোর্টে যাতয়াত রয়েছে। প্রতিদিন দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে পরিবার পরিজন বা নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে যে নির্যাতনের হলি খেলায় মেতে উঠেছে তাতে সে দেশের সচেতন মহল, মানবধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবিদেরও হতবাগ করেছে। তারা সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে জিরো পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, হত্যা করছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুর সীমান্তে মিজানুর রহমানের চোখ উপড়ে হত্যা করে। যা পৃথিবীর জঘন্য ও ঘৃন্য হত্যার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। কুমিল্লার একটি সীমান্তে বিনা উষ্কানিতে এক বাংলাদেশীকে যে ভাবে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে ভারতীয় টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজ হতবাক হয়েছে সারা বিশ্ব। সভ্য সমাজের মানবতা যেন ভূ-লুণ্ঠিত হয়। সভ্যতার পিঠে চরম ছুরিকাঘাত করে বিএসএফ যেন উল্লাস প্রকাশ করে। বাংলাদেশের নিরীহ নাগরিককে বিবস্ত্র করে যে ভাবে পিঠিয়েছে, সেই ঘটনা ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ২০১১ ঘটনা, অথচ আমাদের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কিংবা কোন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে কখনো এর কোন ইঙ্গিত দেওয়া হয় নি। ঐ ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ হলে যতটা ভারতে তোড়পাড় হয়েছে বাংলাদেশে তা হয় নি। চলতি বছরে একটি হিসেবে ৩১ জনকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে বিএসএফ। কিন্তু তার পরেও যেন কোন প্রতিকার নেই। বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে নতুন করে শুরু হয়েছে হত্যা। কোন আশ্বাসই মানছে না তাদের এই বাহিনী। কোন বিধি নিষেধ বা প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে সীমান্তবর্তী মানুষের উপর হিংস্র পশুরমত আচরণ করছে তারা। বিগত দিনে বাংলাদেশীদের আটক করে চোখ তুলে নিলেও বর্তমানে পাখিরমত গুলি করে হত্যা করছে মানুষদের। দেশের গণমাধ্যমগুলো ও মানবধিকার সংগঠনগুলো এর বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ থেকেও বিজিবিসহ সরকার প্রতিবাদ করছে। ভারত সরকার বিভিন্ন সময় সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও বিএসএফ সীমান্তের যোয়ানদের লেলিয়ে দিচ্ছেন। সচিব পর্যায়ে আলোচনার সাথে সাথে হত্যা করে লাশ উপহার দিচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় লাভ হয় কি আলোচনায়? নাকি আলোচনার ফল হিসেবে তারা বাংলাদেশকে লাশ উপহার দিচ্ছে। সীমান্ত চোরাচালান হয় এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। দুই দেশের মানুষ চেরাচালানের সাথে জাড়িত। তবে এর সাথে বাংলাদেশ ও ভারতের বড় বড় মাপের মানুষ জড়িত। বাংলাদেশি নীরিহ মানুষ যারা দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য গরু আনতে ভারতে যায় তাদের হত্যা করা হয়। এ যাবৎকাল গরুর রাখাল ছাড়া বিএসএফ আর কারোর উপর নির্যাতন করতে পারি নি। কারণ বিএসএফের দাবীকৃত টাকা গরু রাখালরা দিতে পারে না। বাংলাদেশকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করতে বাংলাদেশী সীমান্তে ১৫০ এর অধিক ফেন্সিডিন কারখানা, দুই শতাধিক মদের কারখানা স্থাপন করেছে। যেখান দিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বড় বড় চালানের মাধ্যমে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে তারা আঘাত হানতে পারে না। বাংলাদেশ ও ভারতে চোরাচালান প্রতিরোধে আইন আছে। আমি স্বীকার করি গরু আনতে ভারতে যায় বাংলার মানুষ। কিন্তু গরু চেরাচালানের অপরাধে কাউকে গুলি করে হত্যা করা হবে এমন আইন সে দেশে নেই। আর গরু আনতে হয় সীমান্ত অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে। তবে তাদের বাধা না দিয়ে কেন গুলি করা হয়? কেন তাদের আটক করা হয় না? আর এমনটাই হচ্ছে আমাদের পররাষ্ট্র নীতির দুর্বলতার করণে। প্রতিবারই আলোচনার পরে লাশ পড়ছে, নিঃস্ব হচ্ছে সীমান্তের কোন না কোন গরীব, দিন আনা দিন খাওয়া ময়ের কোল। সংসার তছনাছ হয়ে পড়ছে। তাদের দিকে কেউ দেখে না, কথা বলে না সরকার। তীব্র প্রতিবাদের ভাষা তাদের জানা নেই। কারণ এ সকল মানুষ যে গরীব। তারা নেতা নির্বাচন করতে ভোট দিতে পারে, প্রভাবিত হতে পারে, কিন্তু কাউকে প্রভাবিত করতে পারে না। ঈশ্বররও যেন তাদের দিকে চোখ তুলে তাকায় না। ফেলানীর মতো ঘটনার বিচার না হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পার্কে ঘাটতি পড়তে পারে। দেশের প্রধান বিরোধী দল এ নিয়ে বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মানুষগুলো চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে আলোচনার ঝড় উঠছে চায়ের দোকানে। সরকারের পক্ষ থেকে সম্পর্কের ঘাটতি হলো কি না তার জনগণ দেখবে না, বাঁকা করে দেখবে ভারতীয় নাগরিকদের। লেখক : নাজমুল হক, স্কাউটার ও কলাম লেখক, ঢাকা, মোবাইল : ০১৭২০৫৪৮৮৪৭
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষকারী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশী নারী ফেলানী হত্যার পরে লাশ টাঙ্গিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সারা বিশ্বে তোড়পাড় সৃষ্টি হয়। শুধু বাংলাদেশীদের মধ্যে নয় ভারতীয় অবিবেকবান নরপিশাচ বিএসএফ এর মধ্যেও শুরু হয় তোড়পাড়। দীর্ঘ চড়াই-উতরায় পরে ভারত সরকার অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যের বিচারের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। শুরু হয় বিচার, কিন্তু খালাস পেয়ে যায় সকল অভিযুক্তরা। কাক কাকের মাংস খায় না তার আরো একবার প্রমাণ করলো ভারতীয় বিশেষ আদালত। আদালতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বলতে চাই, তাহলে ফেলানীকে মারলো কারা? না কি ফেলানী নিজে মরে তারে কাটার উপর ঝুলে ছিলো। আর যারা বাঁশের উপর করে গরু-ছাগলের মতো করে মৃতদেহ বস্তায় করে নিয়ে গেল তারা কি প্রেতেত্মা। না কি তারা অদৃশ্য কোন শক্তি যাদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার বা আদালতের ব্যবস্থা গ্রহণের কোন শক্তি নেই। ভারত বাংলাদেশের বন্ধু ও প্রতিবেশি রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৩০টি সীমান্তবর্তী জেলা ভারতের সাথে রয়েছে। এ সব জেলা দিয়ে দুই দেশের মানুষের বিনা পাসপোর্টে যাতয়াত রয়েছে। প্রতিদিন দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে পরিবার পরিজন বা নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে যে নির্যাতনের হলি খেলায় মেতে উঠেছে তাতে সে দেশের সচেতন মহল, মানবধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবিদেরও হতবাগ করেছে। তারা সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে জিরো পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশীদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, হত্যা করছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুর সীমান্তে মিজানুর রহমানের চোখ উপড়ে হত্যা করে। যা পৃথিবীর জঘন্য ও ঘৃন্য হত্যার একটি অনন্য দৃষ্টান্ত। কুমিল্লার একটি সীমান্তে বিনা উষ্কানিতে এক বাংলাদেশীকে যে ভাবে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে ভারতীয় টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজ হতবাক হয়েছে সারা বিশ্ব। সভ্য সমাজের মানবতা যেন ভূ-লুণ্ঠিত হয়। সভ্যতার পিঠে চরম ছুরিকাঘাত করে বিএসএফ যেন উল্লাস প্রকাশ করে। বাংলাদেশের নিরীহ নাগরিককে বিবস্ত্র করে যে ভাবে পিঠিয়েছে, সেই ঘটনা ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ২০১১ ঘটনা, অথচ আমাদের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কিংবা কোন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে কখনো এর কোন ইঙ্গিত দেওয়া হয় নি। ঐ ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ হলে যতটা ভারতে তোড়পাড় হয়েছে বাংলাদেশে তা হয় নি। চলতি বছরে একটি হিসেবে ৩১ জনকে বিনা বিচারে হত্যা করেছে বিএসএফ। কিন্তু তার পরেও যেন কোন প্রতিকার নেই। বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে নতুন করে শুরু হয়েছে হত্যা। কোন আশ্বাসই মানছে না তাদের এই বাহিনী। কোন বিধি নিষেধ বা প্রতিবাদকে তোয়াক্কা না করে সীমান্তবর্তী মানুষের উপর হিংস্র পশুরমত আচরণ করছে তারা। বিগত দিনে বাংলাদেশীদের আটক করে চোখ তুলে নিলেও বর্তমানে পাখিরমত গুলি করে হত্যা করছে মানুষদের। দেশের গণমাধ্যমগুলো ও মানবধিকার সংগঠনগুলো এর বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ থেকেও বিজিবিসহ সরকার প্রতিবাদ করছে। ভারত সরকার বিভিন্ন সময় সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও বিএসএফ সীমান্তের যোয়ানদের লেলিয়ে দিচ্ছেন। সচিব পর্যায়ে আলোচনার সাথে সাথে হত্যা করে লাশ উপহার দিচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় লাভ হয় কি আলোচনায়? নাকি আলোচনার ফল হিসেবে তারা বাংলাদেশকে লাশ উপহার দিচ্ছে। সীমান্ত চোরাচালান হয় এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। দুই দেশের মানুষ চেরাচালানের সাথে জাড়িত। তবে এর সাথে বাংলাদেশ ও ভারতের বড় বড় মাপের মানুষ জড়িত। বাংলাদেশি নীরিহ মানুষ যারা দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য গরু আনতে ভারতে যায় তাদের হত্যা করা হয়। এ যাবৎকাল গরুর রাখাল ছাড়া বিএসএফ আর কারোর উপর নির্যাতন করতে পারি নি। কারণ বিএসএফের দাবীকৃত টাকা গরু রাখালরা দিতে পারে না। বাংলাদেশকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করতে বাংলাদেশী সীমান্তে ১৫০ এর অধিক ফেন্সিডিন কারখানা, দুই শতাধিক মদের কারখানা স্থাপন করেছে। যেখান দিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বড় বড় চালানের মাধ্যমে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে তারা আঘাত হানতে পারে না। বাংলাদেশ ও ভারতে চোরাচালান প্রতিরোধে আইন আছে। আমি স্বীকার করি গরু আনতে ভারতে যায় বাংলার মানুষ। কিন্তু গরু চেরাচালানের অপরাধে কাউকে গুলি করে হত্যা করা হবে এমন আইন সে দেশে নেই। আর গরু আনতে হয় সীমান্ত অতিক্রম করে পায়ে হেঁটে। তবে তাদের বাধা না দিয়ে কেন গুলি করা হয়? কেন তাদের আটক করা হয় না? আর এমনটাই হচ্ছে আমাদের পররাষ্ট্র নীতির দুর্বলতার করণে। প্রতিবারই আলোচনার পরে লাশ পড়ছে, নিঃস্ব হচ্ছে সীমান্তের কোন না কোন গরীব, দিন আনা দিন খাওয়া ময়ের কোল। সংসার তছনাছ হয়ে পড়ছে। তাদের দিকে কেউ দেখে না, কথা বলে না সরকার। তীব্র প্রতিবাদের ভাষা তাদের জানা নেই। কারণ এ সকল মানুষ যে গরীব। তারা নেতা নির্বাচন করতে ভোট দিতে পারে, প্রভাবিত হতে পারে, কিন্তু কাউকে প্রভাবিত করতে পারে না। ঈশ্বররও যেন তাদের দিকে চোখ তুলে তাকায় না। ফেলানীর মতো ঘটনার বিচার না হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পার্কে ঘাটতি পড়তে পারে। দেশের প্রধান বিরোধী দল এ নিয়ে বক্তব্য দিতে শুরু করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মানুষগুলো চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে আলোচনার ঝড় উঠছে চায়ের দোকানে। সরকারের পক্ষ থেকে সম্পর্কের ঘাটতি হলো কি না তার জনগণ দেখবে না, বাঁকা করে দেখবে ভারতীয় নাগরিকদের। লেখক : নাজমুল হক, স্কাউটার ও কলাম লেখক, ঢাকা, মোবাইল : ০১৭২০৫৪৮৮৪৭ নাজমুল হক
মন্তব্য করুন