আজ ৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া মুক্ত দিবস
আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার কুলাউড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে এই উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। ৯ মাস মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সমগ্র দেশ শত্রু মুক্ত হয়। তার পূর্বে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ক্রমান্বয়ে শত্রুমুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের অমানবিক হত্যা, জুলুম, রাহাজানি, নির্যাতন সহ্য করে বাঙ্গালিরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ফিরে পায়। পাকিস্তানী শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে বাঙ্গালি বিদ্রোহীদের দীপ্ত শিখায় সেদিন জ্বলে উঠেছিল। সারাদেশের মত কুলাউড়ায়, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র-যুবক, শ্রমিকসহ সবাই সাহসী ভূমিকা নিয়েছিল। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কুলাউড়া থেকে প্রকাশিত সাংবাদিক সুশীল সেনগুপ্ত সম্পাদিত বাংলার ডাক নামে পত্রিকাটি স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের উৎসাহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর পূর্ব পাকিস্তানের চেহারা পাল্টে যায়। সারা দেশ জুড়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায়। ঠিক ঐ সময়ে পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ থেকে মুক্তির সংগ্রামে কুলাউড়ার দেশ প্রেমিক মুক্তিকামী সন্তানরা হাতে তুলে নিয়েছিল অস্ত্র। সারা বাংলায় পাকিস্তানী সামরিক জান্তারা অত্যাচার নিপীড়ন শুরু করলেও কুলাউড়া থানায় তাদের প্রথম আগমন ঘটে ৭ মে ১৯৭১ সালে। মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়া ঢুকার পথে কাপুয়া ব্রিজের কাছে গতিরোধ করতে অকুতোভয় বীর সৈনিক মোজাহিদ সদস্য জয়চন্ডী ইউনিয়নের মোঃ আকরাম ওরফে আছকির মিয়া ও হাবীব উদ্দিন। পাক সেনা ও দুদলের মধে গুলি বিনিময় চলতে থাকে, এক পর্যায়ে তারা দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীন হন। এই দুই জনই বীর সন্তান হলেন কুলাউড়া থানা এলাকার স্বাধীনতা মেদীমুলের প্রথম শহীদ। পাকসেনা ও এদেশের দোসরদের সহায়তায় নিধনযজ্ঞ অব্যাহত রাখে। ৫ এপ্রিল থানার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে রাজাকার সহযোগে পাক সেনারা ২২ জন গ্রামবাসীকে ধরে এনে ও ২৪ মে, ১৪ জুন মীরবক্সপুর গ্রামে গিয়ে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে একই গ্রামে গিয়ে নিধন যজ্ঞ চালায়। এই উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা যেসব স্থানে অপারেশন চালায় এর মধ্যে উপজেলার দত্তগাঁও, চাতলাপুর চা বাগান, চাতলাপুর আলীনগর ফাঁড়ি, পাইকপাড়া, মনু রেল স্টেশন, পৃথিমপাশা বরমচাল, জুড়ী, বাজার সহ চাবাগান, ফুলতলা চা বাগান এলাকা, মনু রেলস্টেশন লাইন কর্মধা এলাকা উলে¬খযোগ্য। নভেম্বর শেষপ্রান্তে এবং ডিসেম্বর প্রথম দিকে ভারত ও বাংলাদেশ চুক্তি হওয়াতে যৌথ মিত্র বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লে যুদ্ধের গতি তীব্রভাবে বেড়ে যায়। থানার সবচেয়ে বড় ও সর্বশেষ অপারেশন হয় গাজীপুর চা বাগানে। উক্ত চা বাগানে যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। নেতৃত্ভে ছিলেন মেজর আব্দুল ওয়াহিদ মোগল। প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এক ব্যাটালিয়ান সৈন্য বাগানে অবস্থান করছিল। অপরদিকে গাজীপুরের বিপরীতে চোঙ্গা বাড়ী। সেখানে মুক্তি বাহিনী ক্যাম্প ছিল। নভেম্বর শেষ দিকে গাজীপুর মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন এম এ মোমিত আসুক। সাগরনাল চা বাগানে প্রথম এসে অবস্থান নেয় তারা। উক্ত স্থানে মিলিত হন ধর্মনগর থেকে আগত কর্ণেল হর দয়াল সিংহের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা বাহিনী ৬৭ রাজপুর রেজিমেন্টের বিরাট একটি দল। তারাও বাগানে অবস্থান নেয়। ৩০ নভেম্বর কাকুরা চা বাগান অবস্থানকারী ৭৫ জন রাজাকার ও ৫ জন পাকিস্তানী সৈন্য ধরা পড়ে। ১ ডিসেম্বর কাকুরা চা বাগান থেকে গাজীপুর চা বাগান এলাকার দিকে মিত্র বাহিনীরা অগ্রসর হলে পাক সেনাদের সাথে পাল্টা গুলি বর্ষণ চলতে থাকে। ২ ডিসেম্বর রাত যুদ্ধ হয়। ৩ ডিসেম্বর ৪/৫ গোর্খা রেজিমেন্ট কর্ণেল হারকিলের নেতৃত্বে একটি দল সাহায্যে এগিয়ে আসে। পেছনে ৯৯ মাইল্টেল ব্রিগেডের আর্টিলারী সহায়তায় রাতেও প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। তবুও গাজীপুর চা বাগান এলাকা দখল মুক্ত সম্ভব না হওয়াতে ৪ ডিসেম্বর যুদ্ধের পরিকল্পনা বদলে ফেলা হয়। পিছন দিক থেকে আক্রমন করার পরিকল্পনা নেন, হারকিল। সে অনুযায়ী এম এ মোমিত আসুক ও মোহন লাল সোম পিছনে আসার দায়িত্ব গ্রহণ করে রাত ১২টায় সম্মিলিত বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শেষ দিকে লস্করপুর গ্রামে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনী এ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। উক্ত যুদ্ধে প্রায় ২৫০ জন পাক সৈন্য প্রাণ হারায়। জীবিতরা সবাই পলায়নের চেষ্টা। ৫ডিসেম্বর গাজীপুর চা বাগান এলাকা মুক্ত হয়। ঐ দিনই সন্ধ্যার দিকে সম্মিলিত বাহিনী কুলাউড়ায় পৌঁছে, এ রাতেই সব পাকিস্তানী সৈন্য ব্রাহ্মণবাজারের দিকে সড়ক পথে কুলাউড়া ত্যাগ করে। এভাবেই ৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া শত্রুমুক্ত হয়। থানায় লাল সবুজ স্বাধীনতার পতাকা আকাশে উড়তে থাকে। সারা বাংলায় অসংখ্য মুক্তযোদ্ধাদের ন্যায় কুলাউড়া থানায় বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় ৪৫০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে পাওয়া এই বাংলাদেশ স্বাধীন। উপজেলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংরক্ষণ সহ বধ্য ভূমি সংরক্ষণ ব্যবস্থা আজও করা হয়নি। স্বাধীনতার ৪১ বৎসর পর মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কুলাউড়ায় নির্মাণ করা হচ্ছে স্বাধীনতা স্মৃতি সৌধ। থানার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনেকেই ভিক্ষুক, রিক্সা চালকসহ বিভিন্নভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সুশীল চন্দ্র দে ও সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান আতা সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বলেন, সেই দিনের পৈশাচিকতা এখনও স্মৃতিতে ভয়াল রূপ নিয়ে ফিরে আসে প্রতি বছর। তারা বলেন, ৭ মে থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকসেনা ও তাদের দোসররা মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, যুবক ও কৃষকসহ প্রায় ৪৫০ জনকে হত্যা করে। উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন বলেছেন, স্বাধীনতা নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগ আজ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার ব্যবস্থা করেছে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন, কুলাউড়ায় ঠিক কতগুলো বধ্যভূমি আছে তার সটিক হিসাব আমার কাছে নেই। অচিরেই সেগুলো চিহিৃত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার কুলাউড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে এই উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। ৯ মাস মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সমগ্র দেশ শত্রু মুক্ত হয়। তার পূর্বে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ক্রমান্বয়ে শত্রুমুক্ত হয়। দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের অমানবিক হত্যা, জুলুম, রাহাজানি, নির্যাতন সহ্য করে বাঙ্গালিরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ফিরে পায়। পাকিস্তানী শাসন ও শোষনের বিরুদ্ধে বাঙ্গালি বিদ্রোহীদের দীপ্ত শিখায় সেদিন জ্বলে উঠেছিল। সারাদেশের মত কুলাউড়ায়, সাংবাদিক, শিক্ষক, ছাত্র-যুবক, শ্রমিকসহ সবাই সাহসী ভূমিকা নিয়েছিল। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কুলাউড়া থেকে প্রকাশিত সাংবাদিক সুশীল সেনগুপ্ত সম্পাদিত বাংলার ডাক নামে পত্রিকাটি স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের উৎসাহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর পূর্ব পাকিস্তানের চেহারা পাল্টে যায়। সারা দেশ জুড়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায়। ঠিক ঐ সময়ে পাকিস্তানী শাসকদের শোষণ থেকে মুক্তির সংগ্রামে কুলাউড়ার দেশ প্রেমিক মুক্তিকামী সন্তানরা হাতে তুলে নিয়েছিল অস্ত্র। সারা বাংলায় পাকিস্তানী সামরিক জান্তারা অত্যাচার নিপীড়ন শুরু করলেও কুলাউড়া থানায় তাদের প্রথম আগমন ঘটে ৭ মে ১৯৭১ সালে। মৌলভীবাজার থেকে কুলাউড়া ঢুকার পথে কাপুয়া ব্রিজের কাছে গতিরোধ করতে অকুতোভয় বীর সৈনিক মোজাহিদ সদস্য জয়চন্ডী ইউনিয়নের মোঃ আকরাম ওরফে আছকির মিয়া ও হাবীব উদ্দিন। পাক সেনা ও দুদলের মধে গুলি বিনিময় চলতে থাকে, এক পর্যায়ে তারা দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীন হন। এই দুই জনই বীর সন্তান হলেন কুলাউড়া থানা এলাকার স্বাধীনতা মেদীমুলের প্রথম শহীদ। পাকসেনা ও এদেশের দোসরদের সহায়তায় নিধনযজ্ঞ অব্যাহত রাখে। ৫ এপ্রিল থানার জয়চন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে রাজাকার সহযোগে পাক সেনারা ২২ জন গ্রামবাসীকে ধরে এনে ও ২৪ মে, ১৪ জুন মীরবক্সপুর গ্রামে গিয়ে বেশ কয়েকজন গ্রামবাসীকে হত্যা করে একই গ্রামে গিয়ে নিধন যজ্ঞ চালায়। এই উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধারা যেসব স্থানে অপারেশন চালায় এর মধ্যে উপজেলার দত্তগাঁও, চাতলাপুর চা বাগান, চাতলাপুর আলীনগর ফাঁড়ি, পাইকপাড়া, মনু রেল স্টেশন, পৃথিমপাশা বরমচাল, জুড়ী, বাজার সহ চাবাগান, ফুলতলা চা বাগান এলাকা, মনু রেলস্টেশন লাইন কর্মধা এলাকা উলে¬খযোগ্য। নভেম্বর শেষপ্রান্তে এবং ডিসেম্বর প্রথম দিকে ভারত ও বাংলাদেশ চুক্তি হওয়াতে যৌথ মিত্র বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লে যুদ্ধের গতি তীব্রভাবে বেড়ে যায়। থানার সবচেয়ে বড় ও সর্বশেষ অপারেশন হয় গাজীপুর চা বাগানে। উক্ত চা বাগানে যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল। নেতৃত্ভে ছিলেন মেজর আব্দুল ওয়াহিদ মোগল। প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এক ব্যাটালিয়ান সৈন্য বাগানে অবস্থান করছিল। অপরদিকে গাজীপুরের বিপরীতে চোঙ্গা বাড়ী। সেখানে মুক্তি বাহিনী ক্যাম্প ছিল। নভেম্বর শেষ দিকে গাজীপুর মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন এম এ মোমিত আসুক। সাগরনাল চা বাগানে প্রথম এসে অবস্থান নেয় তারা। উক্ত স্থানে মিলিত হন ধর্মনগর থেকে আগত কর্ণেল হর দয়াল সিংহের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনা বাহিনী ৬৭ রাজপুর রেজিমেন্টের বিরাট একটি দল। তারাও বাগানে অবস্থান নেয়। ৩০ নভেম্বর কাকুরা চা বাগান অবস্থানকারী ৭৫ জন রাজাকার ও ৫ জন পাকিস্তানী সৈন্য ধরা পড়ে। ১ ডিসেম্বর কাকুরা চা বাগান থেকে গাজীপুর চা বাগান এলাকার দিকে মিত্র বাহিনীরা অগ্রসর হলে পাক সেনাদের সাথে পাল্টা গুলি বর্ষণ চলতে থাকে। ২ ডিসেম্বর রাত যুদ্ধ হয়। ৩ ডিসেম্বর ৪/৫ গোর্খা রেজিমেন্ট কর্ণেল হারকিলের নেতৃত্বে একটি দল সাহায্যে এগিয়ে আসে। পেছনে ৯৯ মাইল্টেল ব্রিগেডের আর্টিলারী সহায়তায় রাতেও প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। তবুও গাজীপুর চা বাগান এলাকা দখল মুক্ত সম্ভব না হওয়াতে ৪ ডিসেম্বর যুদ্ধের পরিকল্পনা বদলে ফেলা হয়। পিছন দিক থেকে আক্রমন করার পরিকল্পনা নেন, হারকিল। সে অনুযায়ী এম এ মোমিত আসুক ও মোহন লাল সোম পিছনে আসার দায়িত্ব গ্রহণ করে রাত ১২টায় সম্মিলিত বাহিনী পাকিস্তানী বাহিনীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শেষ দিকে লস্করপুর গ্রামে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনী এ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। উক্ত যুদ্ধে প্রায় ২৫০ জন পাক সৈন্য প্রাণ হারায়। জীবিতরা সবাই পলায়নের চেষ্টা। ৫ডিসেম্বর গাজীপুর চা বাগান এলাকা মুক্ত হয়। ঐ দিনই সন্ধ্যার দিকে সম্মিলিত বাহিনী কুলাউড়ায় পৌঁছে, এ রাতেই সব পাকিস্তানী সৈন্য ব্রাহ্মণবাজারের দিকে সড়ক পথে কুলাউড়া ত্যাগ করে। এভাবেই ৬ ডিসেম্বর কুলাউড়া শত্রুমুক্ত হয়। থানায় লাল সবুজ স্বাধীনতার পতাকা আকাশে উড়তে থাকে। সারা বাংলায় অসংখ্য মুক্তযোদ্ধাদের ন্যায় কুলাউড়া থানায় বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রায় ৪৫০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে পাওয়া এই বাংলাদেশ স্বাধীন। উপজেলা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংরক্ষণ সহ বধ্য ভূমি সংরক্ষণ ব্যবস্থা আজও করা হয়নি। স্বাধীনতার ৪১ বৎসর পর মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কুলাউড়ায় নির্মাণ করা হচ্ছে স্বাধীনতা স্মৃতি সৌধ। থানার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে অনেকেই ভিক্ষুক, রিক্সা চালকসহ বিভিন্নভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সুশীল চন্দ্র দে ও সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান আতা সেই স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে বলেন, সেই দিনের পৈশাচিকতা এখনও স্মৃতিতে ভয়াল রূপ নিয়ে ফিরে আসে প্রতি বছর। তারা বলেন, ৭ মে থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকসেনা ও তাদের দোসররা মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র, যুবক ও কৃষকসহ প্রায় ৪৫০ জনকে হত্যা করে। উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন বলেছেন, স্বাধীনতা নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামীলীগ আজ মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সহ মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করার ব্যবস্থা করেছে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম বলেন, কুলাউড়ায় ঠিক কতগুলো বধ্যভূমি আছে তার সটিক হিসাব আমার কাছে নেই। অচিরেই সেগুলো চিহিৃত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কুলাউড়া অফিস॥
মন্তব্য করুন