মৌলভীবাজারে ফার্নিচার ব্যবসার অন্তরালে সুন্দরী মহিলাদের দিয়ে সজিবের ব্লেকমেইলিং
মাত্র কয়েক বছর আগেও যার দিনের আয় দিয়ে দিন কাঠাতো, সেই লোকটি এখন বিপুল অর্থবিত্তের মালিক। বাড়ী-গাড়ীসহ রকমারি বিলাসী জীবনের সবকিছুই এখন তার হাতের মুঠোয়। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামের নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান সাইফুল ইসলাম সজিব কিভাবে কোন আলাউদ্দিনের চেরাগের বদৌলতে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলো এ নিয়ে অলোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো জেলায়। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কাগজে-পত্রে সজিব নিজেকে হাবিবুর রহমান এর পুত্র দেখালেও প্রকৃতপক্ষে সে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মিয়া বাবুর্চীর পুত্র। হাবিবুর রহমান তার সৎ পিতা। মিয়া বাবুর্চীর পরিত্যক্তা হবার পর সজিব তার মা হবিবুর রহমান এর সাথে ২য় বিবাহে আবদ্ধ হন। সজিব সেই সুবাদেই হাবিবুর রহমানের এর পুত্র হিসাবে পরিচিত এবং সকল ক্ষেত্রে পিতার নাম লিখে যাচ্ছে। অত্যন্ত ধূর্ত ও দুষ্টবুদ্ধির অধিকারী সজিব ঢাকায় বসে নিজেকে সাধু বানিয়ে একের পর এক নাটকের জন্ম দেয়ায় মৌলভীবাজারে মানুষের মধ্যে কৌতুহল ও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। মৌলভীবাজারে ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে প্রতারক ও ব্ল্যাকমেইলার হিসেবে পরিচিত সজিব নিজেকে ভাল মানুষ সাজানোর ঘটনায় মৌলভীবাজারে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সজিব এর ব্ল্যাকমেইল থেকে বাদ যায়নি ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে যুবতী নারী ও প্রবাসীর স্ত্রীরা। মডেল ও নাটকে সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উঠতি বয়সী বহু নারী তার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারালেও মানসম্মানের ভয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সাহস পায়নি। একাধিক স্থানে সজিবের ফার্নিচারের শো-রুম আছে দাবী করলেও মৌলভীবাজার ছাড়া তার আর কোথাও শো-রুম নেই। ঢাকার রামপুরাস্থ বনশ্রী বাসায় তার স্ত্রী বসবাস করলেও মৌলভীবাজারে তার বিকৃত রুচির চরিতার্থ করার জন্য ভাড়া বাসায় নিয়মিত আমোদ ফুর্তি করতো মেয়েদের নিয়ে। অসামাজিক কার্যকলাপ করার জন্য একাধিক বাড়ীর মালিক কর্তৃক বিতারিতও হয়েছে সে। লোক মুখে গুঞ্জন রয়েছে বর্তমানে শহরের চৌমুহনায় অবস্থিত ও বছর দু এক পূর্বে শ্রীমঙ্গল সড়কে অবস্থিত জেপিএল ডোর এন্ড ফার্ণিচার ইন্ডাষ্ট্রিজের কর্মচারী ছিল সজিব। পরবর্তীতে কৌশলে সজিব এ প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে যায়। ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানের মালিক হবার পর থেকেই শুরু হয় তার উত্থান। একাধিক গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী-প্রথমদিকে তার প্রতিষ্ঠানে ফার্ণিচার ক্রয় করতে আসা ধনাঢ্য মহিলা ক্রেতা, বিশেষ করে প্রবাসীর স্ত্রী ক্রেতাদেরকে মন ভুলানো আচার-আচরণ ও আদর-আপ্যায়নের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করতো। এরপর, যোগাযোগ সম্পর্কের সূত্র ধরে সু-সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে একেবারে আপনজনের মত ঘনিষ্টতা ও অন্তরঙ্গতা গড়ে তোলে এবং সু-কৌশলে ঐ মহিলার সাথে তার বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখতো। পরবর্তীতে সুবিধাজনক কোন একসময় ঐ মহিলার প্রবাসী স্বামীকে ঐ ভিডিওচিত্র দেখিয়ে সংসার ভেঙ্গে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মহিলাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করতো। ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ঐ মহিলার কাছ থেকে দফায় দফায় বড় অংকের অর্থ আদায়, মহিলার নগ্ন বিভিন্ন প্রকার অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গির ভিডিওচিত্র ধারণের জন্য পোঁজ দিতে, এমনকি এ ধরনের কয়েকজন মহিলাকে তার শয্যাসঙ্গিনী হতেও বাধ্য করেছে সজিব। সামাজিক মান-সম্মান হারানোর এবং স্বামী-সংসার হারানোর ভয়ে ঐসব মহিলা যেভাবেই হোক সজিবের দাবী পূরণে বাধ্য হয়েছে। কোন কোন মহিলা নাকি এখনও তার দাবী পূরণ করে চলেছে। এভাবেই, ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে মহিলাদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের বদৌলতে রাতারাতি ধনাঢ্য ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছে। মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে রয়েছে তার ফার্নিচার কারখানা নামে তার আরও একটি প্রমোদ কুঞ্জ। এছাড়াও, আমোদ-ফুর্তির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার আরও একাধিক অস্থায়ী প্রমোদকুঞ্জ। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে-সামাজিক মান-সম্মান হারানোর এবং স্বামী-সংসার হারানোর ভয়ে ঐসব মহিলা যেকোন অবস্থাতেই মুখ খুলতে নারাজ বিধায় তা প্রমান করা প্রায় অসম্ভব। আর এ কারণেই সজিব আজও রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। তার এ ফার্ণিচার ব্যবসার আড়ালে ব্ল্যাকমইল করে যে আয় হয় এটিই তার আয়ের মূল উৎস। তার সাথে খোলা মেলা কথা বলতে গিয়ে ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হয়ে জিম্মি রয়েছেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা, ধর্ণাঢ্য ব্যাক্তি সহ নানা পেশার মানুষ। এরা মুখ খুলে কোন কিছু বলতে পারছেন না। এদেরকে সজিব তার নিয়ন্ত্রনে রেখে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজারে এক মহিলা সহ আপত্তিকর অবস্থায় সজিব ধরা পড়ার ১ম ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল শহরের গীর্জাপাড়াস্থিত একটি বাসায়। ২য় ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল শহরের সার্কিট হাউস এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। রাত ২ টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনা টের পেয়ে বাসার দারোয়ান বাইরে থেকে দরজা তালাবদ্ধ করে আটকে রেখেছিলেন। পরে ক্ষমা চেয়ে আসতে হয় ঐ বাসা থেকে। শহরের শ্রীমঙ্গল রোডের কোদালীপুল এলাকার একটি অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক ও অটোমোবাইল মেকানিক একটি মামলায় জড়িয়ে জেলহাজতে থাকাবস্থায় তার স্ত্রীর সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নানা প্রলোভনের মাধ্যমে সজিব অনেক চেষ্টা করেছে। সজিব এর অপতৎপড়তায় অতিষ্ট ও আতংকিত হয়ে ঐ অটোমোবাইল মেকানিকের স্ত্রী মৌলভীবাজার মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন। শ্রীমঙ্গলের শি অধ্যাক্ষরের এক যুবতিকে মধ্য রাতে সজিব এর মোবাইল ফোনে নানা কু-প্রস্থাব দেয়। রাজী না হওয়ায় তার মালিকানাধীন একটি বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় জিডি করলে পুলিশ কল লিষ্টে সজিব এর ব্যবহৃত ২টি মোবাইল নাম্বার থেকে হুমকির দেয়ার সত্যতা পায়। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সজিব বেশ কিছুদিন বিটিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমকি দিলে ব্যবসায়ীরা মৌলভীবাজারের সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন এ নামে বিটিভির কোন সাংবাদিক মৌলভীবাজারে নেই। বিপদ বুঝতে পেরে পরবর্তীতে এ পরিচয় দেওয়া থেকে বিরত হয় সে। অন্যের সিম ক্লোন করে নিজে ব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে সজিবের বিরুদ্ধে। সজিব একজন সুচতুর ও দক্ষ সাইবার ক্রিমিনাল। নিজের মত লিডিং প্রশ্ন করে মোবাইলে কথা রেকর্ড করা তার নেশা। অপরিচিত নাম্বার থেকে কল রিকোয়েষ্ট পাঠিয়ে অপর নাম্বার থেকে কলব্যাক করলে অশ্লীল ও অস্রাব্য ভাষায় গালাগাল করারও অভিযোগ রয়েছে। তার কাছ থেকে একাধিক পুরুষ ও নারীর গোপন দৃশ্যের ভিডিও উদ্ধার না করায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক ভূক্তভোগী। মৌলভীবাজার জেলা সদরের পশ্চিম এলাকায় বসবাসকারী এক লন্ডন প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তা গোপনে ভিডিও করে সজিব ৪০ লক্ষ টাকা আদায় করলেও মানসম্মানের ভয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি প্রবাসীর স্ত্রী। সজিব এর অপকর্মে অসহযোগীতা করায় একজন ড্রাইভারকে ক্যাডার দিয়ে অপহরনকালে মৌলভীবাজার পৌর কাউন্সিলর মাসুদ ঐ ড্রাইভারকে রক্ষা করেন। শুধু নারী নয় একাধিক পুরুষ লোকও তার ব্ল্যাকমেইলের শিকার। একাধিক নারী দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গোপনে তা ভিডিও করে অর্থ আদায়ের ঘটনাও রয়েছে। পরিবার ও সমাজে মানসম্মান হারানোর ভয়ে সজিব এর কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছেন তারা। সজিব টার্গেট করে উঠতি বয়সি সুন্দরী যুবতী ও ধনাঢ্য প্রবাসী স্ত্রীদের। অনৈতিক সম্পর্কের গোপন দৃশ্য স্বামীকে দেখিয়ে টাকা আদায় করে রাতারাতি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে যায় সজিব। বিভিন্ন জনের কছে নিজেকে বিশ্বের সেরা প্লেবয় পরিচয় দিত সজিব। শ্রীমঙ্গল রোডের আলোচিত ডায়মন্ড প্লাজা থেকে বছর দুএক পূর্বে সজিব একাধিক সময়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ভবনের লন্ডন প্রবাসী মালিক অনেক কষ্টে ভবন ছাড়া করেন। তার সাথে সার্বোক্ষনিক একাধিক স্পাই ক্যামেরা থাকে, এগুলো সাধারনত মাথার ক্যাপের সাথে, কলমের সাথে অথবা হাত ঘড়ির সাথে। এই স্পাই ক্যামেরা দিয়ে মানুষের দূর্বল চিত্র ধারণ করে ব্লেক করে আসছে। সজিব শহরের চোবড়া রোডে জনৈক লন্ডন প্রবাসীর ভাড়া বাসায় একজন মহিলার সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় এলাকাবাসী বাইরে তালা দিয়ে রাখলে মৌলভীবাজার ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত হলে ক্ষমা চেয়ে এবং বাসা ছাড়ার শর্তে সে যাত্রায় রক্ষা পায়। হতদরিদ্র পরিবারের সুন্দরী যুবতীকে সজিব তার ব্যক্তিগত গাড়ীচালকের সাথে বিয়ে দিয়ে নিজ বাসায় রেখে তার সাথে অসামাজিক কাজে বাধ্য করার ঘটনাও রয়েছে একাধিক। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছে সজিব এর সাবেক গাড়ীচালক এবং দুজন কর্মচারী। শক্তিশালী আন্ডার ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি ছাড়াও তারা সজিব কর্তৃক ধনাঢ্য মহিলা ক্রেতা, বিশেষ করে প্রবাসীর স্ত্রী ক্রেতাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের বিষয়টিও নিশ্চিত করে বলেছে-যারাই সজিব এর খপ্পরে পড়েছে তারা সবাই এসব অপরাধ-অপকর্ম সম্পর্কে কমবেশী জানেন। সজিব করতে পারেনা এমন কোন কর্মকান্ড নেই। সে কারণেই সামাজিক মান-সম্মান হারানোর ভয়ে এবং প্রাণের ভয়ে কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলেনা। সম্প্রতি বন বিভাগ বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত তার ফার্ণিচার তৈরী ও মার্কেটিং লাইসেন্স করে বৈধ ব্যবসা পরিচালনার নোটিশ দেয়। এতে সজিব ক্ষিপ্ত হয়ে বন বিভাগ কার্যালয়ে গিয়ে হুমকি দেয়। অসংখ্য অপকর্মের হোতা সজিব এর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মাত্র ২টি জিডি ও একটি ধর্ষন মামলা হয়েছে। কিন্তু এ মামলার বাদী ডাঃ সৈয়দা রাজিয়া সুলতানা সজিব এর হুমকির কারণে তার কর্মস্থল ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাদ্য হন। তার ভয়ে মৌলভীবাজার আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পাছেননা। সজিব বহাল তবিয়তে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই ভূক্তভোগীরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সক্রিয় ভূমিকা পালন করার জোর দাবী জানিয়েছেন।
মাত্র কয়েক বছর আগেও যার দিনের আয় দিয়ে দিন কাঠাতো, সেই লোকটি এখন বিপুল অর্থবিত্তের মালিক। বাড়ী-গাড়ীসহ রকমারি বিলাসী জীবনের সবকিছুই এখন তার হাতের মুঠোয়। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামের নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান সাইফুল ইসলাম সজিব কিভাবে কোন আলাউদ্দিনের চেরাগের বদৌলতে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলো এ নিয়ে অলোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরো জেলায়। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কাগজে-পত্রে সজিব নিজেকে হাবিবুর রহমান এর পুত্র দেখালেও প্রকৃতপক্ষে সে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মিয়া বাবুর্চীর পুত্র। হাবিবুর রহমান তার সৎ পিতা। মিয়া বাবুর্চীর পরিত্যক্তা হবার পর সজিব তার মা হবিবুর রহমান এর সাথে ২য় বিবাহে আবদ্ধ হন। সজিব সেই সুবাদেই হাবিবুর রহমানের এর পুত্র হিসাবে পরিচিত এবং সকল ক্ষেত্রে পিতার নাম লিখে যাচ্ছে। অত্যন্ত ধূর্ত ও দুষ্টবুদ্ধির অধিকারী সজিব ঢাকায় বসে নিজেকে সাধু বানিয়ে একের পর এক নাটকের জন্ম দেয়ায় মৌলভীবাজারে মানুষের মধ্যে কৌতুহল ও বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। মৌলভীবাজারে ব্যবসায়ী, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন মহলে প্রতারক ও ব্ল্যাকমেইলার হিসেবে পরিচিত সজিব নিজেকে ভাল মানুষ সাজানোর ঘটনায় মৌলভীবাজারে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সজিব এর ব্ল্যাকমেইল থেকে বাদ যায়নি ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, সরকারী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে যুবতী নারী ও প্রবাসীর স্ত্রীরা। মডেল ও নাটকে সুযোগ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উঠতি বয়সী বহু নারী তার ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারালেও মানসম্মানের ভয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সাহস পায়নি। একাধিক স্থানে সজিবের ফার্নিচারের শো-রুম আছে দাবী করলেও মৌলভীবাজার ছাড়া তার আর কোথাও শো-রুম নেই। ঢাকার রামপুরাস্থ বনশ্রী বাসায় তার স্ত্রী বসবাস করলেও মৌলভীবাজারে তার বিকৃত রুচির চরিতার্থ করার জন্য ভাড়া বাসায় নিয়মিত আমোদ ফুর্তি করতো মেয়েদের নিয়ে। অসামাজিক কার্যকলাপ করার জন্য একাধিক বাড়ীর মালিক কর্তৃক বিতারিতও হয়েছে সে। লোক মুখে গুঞ্জন রয়েছে বর্তমানে শহরের চৌমুহনায় অবস্থিত ও বছর দু এক পূর্বে শ্রীমঙ্গল সড়কে অবস্থিত জেপিএল ডোর এন্ড ফার্ণিচার ইন্ডাষ্ট্রিজের কর্মচারী ছিল সজিব। পরবর্তীতে কৌশলে সজিব এ প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে যায়। ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানের মালিক হবার পর থেকেই শুরু হয় তার উত্থান। একাধিক গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী-প্রথমদিকে তার প্রতিষ্ঠানে ফার্ণিচার ক্রয় করতে আসা ধনাঢ্য মহিলা ক্রেতা, বিশেষ করে প্রবাসীর স্ত্রী ক্রেতাদেরকে মন ভুলানো আচার-আচরণ ও আদর-আপ্যায়নের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করতো। এরপর, যোগাযোগ সম্পর্কের সূত্র ধরে সু-সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে একেবারে আপনজনের মত ঘনিষ্টতা ও অন্তরঙ্গতা গড়ে তোলে এবং সু-কৌশলে ঐ মহিলার সাথে তার বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখতো। পরবর্তীতে সুবিধাজনক কোন একসময় ঐ মহিলার প্রবাসী স্বামীকে ঐ ভিডিওচিত্র দেখিয়ে সংসার ভেঙ্গে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মহিলাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করতো। ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে ঐ মহিলার কাছ থেকে দফায় দফায় বড় অংকের অর্থ আদায়, মহিলার নগ্ন বিভিন্ন প্রকার অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গির ভিডিওচিত্র ধারণের জন্য পোঁজ দিতে, এমনকি এ ধরনের কয়েকজন মহিলাকে তার শয্যাসঙ্গিনী হতেও বাধ্য করেছে সজিব। সামাজিক মান-সম্মান হারানোর এবং স্বামী-সংসার হারানোর ভয়ে ঐসব মহিলা যেভাবেই হোক সজিবের দাবী পূরণে বাধ্য হয়েছে। কোন কোন মহিলা নাকি এখনও তার দাবী পূরণ করে চলেছে। এভাবেই, ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে মহিলাদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের বদৌলতে রাতারাতি ধনাঢ্য ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছে। মৌলভীবাজার বিসিক শিল্পনগরীতে রয়েছে তার ফার্নিচার কারখানা নামে তার আরও একটি প্রমোদ কুঞ্জ। এছাড়াও, আমোদ-ফুর্তির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার আরও একাধিক অস্থায়ী প্রমোদকুঞ্জ। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে-সামাজিক মান-সম্মান হারানোর এবং স্বামী-সংসার হারানোর ভয়ে ঐসব মহিলা যেকোন অবস্থাতেই মুখ খুলতে নারাজ বিধায় তা প্রমান করা প্রায় অসম্ভব। আর এ কারণেই সজিব আজও রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। তার এ ফার্ণিচার ব্যবসার আড়ালে ব্ল্যাকমইল করে যে আয় হয় এটিই তার আয়ের মূল উৎস। তার সাথে খোলা মেলা কথা বলতে গিয়ে ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হয়ে জিম্মি রয়েছেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা, ধর্ণাঢ্য ব্যাক্তি সহ নানা পেশার মানুষ। এরা মুখ খুলে কোন কিছু বলতে পারছেন না। এদেরকে সজিব তার নিয়ন্ত্রনে রেখে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজারে এক মহিলা সহ আপত্তিকর অবস্থায় সজিব ধরা পড়ার ১ম ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল শহরের গীর্জাপাড়াস্থিত একটি বাসায়। ২য় ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল শহরের সার্কিট হাউস এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। রাত ২ টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনা টের পেয়ে বাসার দারোয়ান বাইরে থেকে দরজা তালাবদ্ধ করে আটকে রেখেছিলেন। পরে ক্ষমা চেয়ে আসতে হয় ঐ বাসা থেকে। শহরের শ্রীমঙ্গল রোডের কোদালীপুল এলাকার একটি অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক ও অটোমোবাইল মেকানিক একটি মামলায় জড়িয়ে জেলহাজতে থাকাবস্থায় তার স্ত্রীর সাথে সু-সম্পর্ক স্থাপনের জন্য নানা প্রলোভনের মাধ্যমে সজিব অনেক চেষ্টা করেছে। সজিব এর অপতৎপড়তায় অতিষ্ট ও আতংকিত হয়ে ঐ অটোমোবাইল মেকানিকের স্ত্রী মৌলভীবাজার মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন। শ্রীমঙ্গলের শি অধ্যাক্ষরের এক যুবতিকে মধ্য রাতে সজিব এর মোবাইল ফোনে নানা কু-প্রস্থাব দেয়। রাজী না হওয়ায় তার মালিকানাধীন একটি বিউটি পার্লার বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় জিডি করলে পুলিশ কল লিষ্টে সজিব এর ব্যবহৃত ২টি মোবাইল নাম্বার থেকে হুমকির দেয়ার সত্যতা পায়। ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সজিব বেশ কিছুদিন বিটিভির সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমকি দিলে ব্যবসায়ীরা মৌলভীবাজারের সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন এ নামে বিটিভির কোন সাংবাদিক মৌলভীবাজারে নেই। বিপদ বুঝতে পেরে পরবর্তীতে এ পরিচয় দেওয়া থেকে বিরত হয় সে। অন্যের সিম ক্লোন করে নিজে ব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে সজিবের বিরুদ্ধে। সজিব একজন সুচতুর ও দক্ষ সাইবার ক্রিমিনাল। নিজের মত লিডিং প্রশ্ন করে মোবাইলে কথা রেকর্ড করা তার নেশা। অপরিচিত নাম্বার থেকে কল রিকোয়েষ্ট পাঠিয়ে অপর নাম্বার থেকে কলব্যাক করলে অশ্লীল ও অস্রাব্য ভাষায় গালাগাল করারও অভিযোগ রয়েছে। তার কাছ থেকে একাধিক পুরুষ ও নারীর গোপন দৃশ্যের ভিডিও উদ্ধার না করায় আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক ভূক্তভোগী। মৌলভীবাজার জেলা সদরের পশ্চিম এলাকায় বসবাসকারী এক লন্ডন প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তা গোপনে ভিডিও করে সজিব ৪০ লক্ষ টাকা আদায় করলেও মানসম্মানের ভয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেননি প্রবাসীর স্ত্রী। সজিব এর অপকর্মে অসহযোগীতা করায় একজন ড্রাইভারকে ক্যাডার দিয়ে অপহরনকালে মৌলভীবাজার পৌর কাউন্সিলর মাসুদ ঐ ড্রাইভারকে রক্ষা করেন। শুধু নারী নয় একাধিক পুরুষ লোকও তার ব্ল্যাকমেইলের শিকার। একাধিক নারী দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গোপনে তা ভিডিও করে অর্থ আদায়ের ঘটনাও রয়েছে। পরিবার ও সমাজে মানসম্মান হারানোর ভয়ে সজিব এর কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছেন তারা। সজিব টার্গেট করে উঠতি বয়সি সুন্দরী যুবতী ও ধনাঢ্য প্রবাসী স্ত্রীদের। অনৈতিক সম্পর্কের গোপন দৃশ্য স্বামীকে দেখিয়ে টাকা আদায় করে রাতারাতি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে যায় সজিব। বিভিন্ন জনের কছে নিজেকে বিশ্বের সেরা প্লেবয় পরিচয় দিত সজিব। শ্রীমঙ্গল রোডের আলোচিত ডায়মন্ড প্লাজা থেকে বছর দুএক পূর্বে সজিব একাধিক সময়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ভবনের লন্ডন প্রবাসী মালিক অনেক কষ্টে ভবন ছাড়া করেন। তার সাথে সার্বোক্ষনিক একাধিক স্পাই ক্যামেরা থাকে, এগুলো সাধারনত মাথার ক্যাপের সাথে, কলমের সাথে অথবা হাত ঘড়ির সাথে। এই স্পাই ক্যামেরা দিয়ে মানুষের দূর্বল চিত্র ধারণ করে ব্লেক করে আসছে। সজিব শহরের চোবড়া রোডে জনৈক লন্ডন প্রবাসীর ভাড়া বাসায় একজন মহিলার সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় এলাকাবাসী বাইরে তালা দিয়ে রাখলে মৌলভীবাজার ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাউর রহমান সহ অন্যান্যরা উপস্থিত হলে ক্ষমা চেয়ে এবং বাসা ছাড়ার শর্তে সে যাত্রায় রক্ষা পায়। হতদরিদ্র পরিবারের সুন্দরী যুবতীকে সজিব তার ব্যক্তিগত গাড়ীচালকের সাথে বিয়ে দিয়ে নিজ বাসায় রেখে তার সাথে অসামাজিক কাজে বাধ্য করার ঘটনাও রয়েছে একাধিক। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছে সজিব এর সাবেক গাড়ীচালক এবং দুজন কর্মচারী। শক্তিশালী আন্ডার ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্কের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি ছাড়াও তারা সজিব কর্তৃক ধনাঢ্য মহিলা ক্রেতা, বিশেষ করে প্রবাসীর স্ত্রী ক্রেতাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের বিষয়টিও নিশ্চিত করে বলেছে-যারাই সজিব এর খপ্পরে পড়েছে তারা সবাই এসব অপরাধ-অপকর্ম সম্পর্কে কমবেশী জানেন। সজিব করতে পারেনা এমন কোন কর্মকান্ড নেই। সে কারণেই সামাজিক মান-সম্মান হারানোর ভয়ে এবং প্রাণের ভয়ে কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলেনা। সম্প্রতি বন বিভাগ বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত তার ফার্ণিচার তৈরী ও মার্কেটিং লাইসেন্স করে বৈধ ব্যবসা পরিচালনার নোটিশ দেয়। এতে সজিব ক্ষিপ্ত হয়ে বন বিভাগ কার্যালয়ে গিয়ে হুমকি দেয়। অসংখ্য অপকর্মের হোতা সজিব এর বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মাত্র ২টি জিডি ও একটি ধর্ষন মামলা হয়েছে। কিন্তু এ মামলার বাদী ডাঃ সৈয়দা রাজিয়া সুলতানা সজিব এর হুমকির কারণে তার কর্মস্থল ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাদ্য হন। তার ভয়ে মৌলভীবাজার আদালতে মামলা পরিচালনা করতে পাছেননা। সজিব বহাল তবিয়তে দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই ভূক্তভোগীরা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সক্রিয় ভূমিকা পালন করার জোর দাবী জানিয়েছেন। ষ্টাফ রিপোর্টার॥
মন্তব্য করুন