প্রবাসী সংবাদ
খায়রুল আলম লিংকন:যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিপুল উৎসাহ,আনন্দ ঘন পরিবেশে বৃষ্টল বাথ ও সাউথ ওয়েষ্ট এ পালিত হয়েছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ আমেরিকার পাশাপাশি এশিয়া-আফ্রিকাসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেপবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হয়েছে গতকালরোববার। ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের দিন রোববার সরকারি ছুটি ও সামার হলিডে থাকায় মসজিদে মসজিদেঈদের নামাজে ছিল মুসল্লিদের উপছে পরা ভির। রোববার সকাল থেকে বৃষ্টলের সেন্ট্রাল মসজিদ সহ বিভিন্ন মসজিদে সমবেত হয়ে বিভিন্ন দেশের মুসলমানরা ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করেন। শাহজালাল মসজিদ, জালালাবাদ ইসলামিককালচারাল সেন্টার,শাহপরান ইসলামিক সেন্টার, বায়তুল মোকাররম ইসলামিক কালচারাল সেন্টার,কোরআন একাডেমী সহ বিভিন্ন স্থানে অনুষ্টিত হয় ঈদের একাধিক জামাত। বৃষ্টল সেন্ট্রালমসজিদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন মসজিদের খতিব হাফিজ মুফতি ইকরাম উদ্দীন, শাহজালাল মসজিদের খতিব মৌলানা আজিজুর রহমান, জালালাবাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টারএর খতিব মৌলানা সৈয়দ মুয়াইইদুল ইসলাম। বড় বড় মসজিদগুলোতে একাধিক জামাতে অংশ নেন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল বয়সের মুসল্লিরা। বাংলাদেশীসহ মুসলমান অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ঈদের ছিল এক আলাদা আমেজ। দলবেঁধে ঈদের নামাজ আদায়, পরিচিত ও স্বজনদের সাথে কোলাকুলি এবং সামর্থবানরা দেশে বিদেশে পশু কোরবানী করেছেন। ঈদের জামাতে দেওয়া খুতবায় বলা হয়, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের সৌন্দর্যের অন্যতম হচ্ছে একে অন্যকে সাহায্য করা; একে অন্যের প্রতি দয়া করা; খারাপ কাজ ও অশ্লীলতা থেকে দূরেথাকা। আরবী ‘কুরবান’ শব্দটি ফারসী বা উর্দূতে ‘কুরবানী’ রূপে পরিচিত হয়েছে, যার অর্থ ‘নৈকট্য’। আর পারিভাষিক অর্থে ‘কুরবানী’ ঐ মাধ্যমকে বলা হয়, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হয়। প্রচলিত অর্থে ঈদুল আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শারঈ তরীকায় যে পশু যবহ করা হয়, তাকে ‘কুরবানী’ বলা হয়’। সকালে রক্তিম সূর্য উপরে ওঠার সময়ে ‘কুরবানী’ করা হয় বলেএই দিনটিকে ‘ইয়াওমুল আযহা’ বলা হয়ে থাকে। কুরবানী মুসলমানদের জন্য একটি ধর্মীয় ইবাদত। ঈদুল আজহায় যে কোরবানি দেওয়া হয়, তার মাধ্যমে মানুষের মনের পরীক্ষা হয়, কোরবানিররক্ত-মাংস কখনোই আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না। শুধু দেখা হয় মানুষের হৃদয়কে। ঈদের মধ্যে আছে সাম্যের বাণী, সহানুভূতিশীল হৃদয়ের পরিচয়। পরোপকার ও ত্যাগের মহান আদর্শে অনুপ্রাণিতহয় মানুষের মন। আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর আগে হজরত ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নাদিষ্ট হয়েছিলেন প্রিয়তম বস্তু তথা তার পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি করার জন্য। সেই অনুযায়ী তিনি পরম করুণাময় আল্লাহরসন্তুষ্টির জন্য প্রিয়পুত্রকে কোরবানি দিতে উদ্যত হন। কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁকে আর শেষ পর্যন্ত পুত্রকে কোরবানি দিতে হয়নি। ইসমাইলের পরিবর্তে কোরবানি হয় একটি পশু। মহানআল্লাহর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হজরত ইব্রাহিম (আ.)। এই সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরাই ঈদুল আজহার পশু কোরবানির প্রধান মর্মবাণী। প্রকৃতপক্ষে কোরবানিদাতা কেবল পশুর গলায় ছুরি চালায় না; বরং সে তো ছুরি চালায় সব প্রবৃত্তির গলায় আল্লাহর প্রেমে পাগলপারা হয়ে। এটিই কোরবানির মূল নিয়ামক ও প্রাণশক্তি। এ অনুভূতিব্যতিরেকে যে কোরবানি করা হয়, তা হজরত ইব্রাহিম ও ইসমাইল (আ.)-এর সুন্নাত নয়, এটা এক রসম তথা প্রথা মাত্র। এতে গোশতের ছড়াছড়ি হয় বটে; কিন্তু ওই তাকওয়া হাসিল হয় না, যাকোরবানির প্রাণশক্তি।কোরবানির ঈদ বা ঈদুল আজহা আমাদের কাছে আত্মশুদ্ধি, আত্মতৃপ্তি ও আত্মত্যাগের এক সুমহান বার্তা নিয়ে প্রতিবছর উপস্থিত হয়। ঈদুল আজহার শিক্ষায় উজ্জীবিতহলে আমরা সব পাপ, বঞ্চনা, সামাজিক অনাচার ও রিপুর তাড়না বা শয়তানের অসওয়াসা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সক্ষম হব। তাই ঈদুল আজহার পশু কোরবানির মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষেমানুষের মধ্যে বিরাজমান পশুশক্তি, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি রিপুকেই কোরবানি দিতে হয়। আর হালাল অর্থে অর্জিত পশু কোরবানির মাধ্যমে তারইবহিঃপ্রকাশ ঘটানো হয়। মসজিদে মসজিদে বিশ্ব মুসলিম উম্মার সুখ, শান্তি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় । ঈদ জামাতে উপস্থিত থেকে বৃষ্টল সেন্ট্রাল মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজিক, শাহজালাল মসজিদ কমিটির ট্রাষ্টী এম এওয়াহাব এম বি ই ,জালালাবাদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের খতিব মৌলানা সৈয়দ মুয়াইইদুল ইসলাম। রোদ্রজ্জ্বল চমৎকার আবহাওয়া থাকাতে প্রতিটি জামাতে মুসল্লীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়. রঙ-বেরঙের বাহারী পোশাক বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ঐহিত্যবাহি পাঞ্জাবি-পায়াজামামাথায় টুপী এবং বিপুল সংখ্যক মুসলিমদের একত্রে নামাজে অংশগ্রহণের দৃশ্য মূলধারার মানুষকে চমকিত করেছে। নামাজ শেষে কোলাকুলির মাধ্যমে ছোট-বড় সবাই নিজেদের মধ্য ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। বিভিন্ন মসজিদে বিশিষ্ট জনদের মধ্যে জামাতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ হাউজ সভাপতিফকরুল আলী, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আহমদ মত্তচির, বৃষ্টল বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামরুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক ও এটি এন বাংলা ইউ কে এর প্রতিনিধি খায়রুল আলম লিংকন,মখলিছ মিয়া, গ্রেটার সিলেট ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল সাউথ ওয়েষ্ট রিজিয়নের ট্রেজারার সৈয়দআখলাকুল আম্বিয়া রাবেল, আওয়ামীলীগ ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ইসলাম উদ্দীন,যুবলীগ সাধারন সম্পাদক লিটন আলম বদরুল, সহ-সভাপতি আব্দুল মুকিত,সহ-সাধারন সম্পাদক ইমদাদুররহমান রাসেল, তারিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান জুনেল,আব্দুল হামিদ,ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, কমিউনিটি নেতা মোসলেহ আহমদ, জহির আহমদ চৌধুরীআহবাব,বেদার আহমদ চৌধুরী,মাসুক মিয়া, ছমরুল হক,জিয়াঊল হক,শফিকুর রহমান চৌধুরী, বি.এন পির সহ-সভাপতি কাইয়ুম খান, হাজী মকদ্দছ আলী, মখলিছ আলী,জুয়েল মিয়া, শহীদুজ্জামান , শহীদ মিয়া, প্রতাপ আলী,মতিউর রহমান লিটন,আঙ্গুর আলম, শিহাব ঊদ্দিন, শেয়েব আহমদ, শাহরিয়ার আহমদ রাসেল,আবুল মিয়া, মদরিছ আলী, প্রতাপ মিয়া,আইনুল ইসলাম, মসকুদ আলী,ওমর ফারুক, সুলতান খান,মোবারক আলী প্রমুখ।